নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
![]() |
আজ রোববার সকালে বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে উদীচীর আয়োজনে বর্ষা উৎসব হয়। এতে পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষাসহ বিভিন্ন দাবি জানানো হয় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
‘দেখো পান্থকুঞ্জ জেগে আছে, হত্যা হলে একটি বৃক্ষ, লড়াই হবে তোমার সাথে’, এ স্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে প্রতিবছরের মতো এবারও উদ্যাপিত হয়েছে উদীচীর বর্ষা উৎসব ১৪৩২।
আজ রোববার সকালে বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে উদীচীর আয়োজনে এ উৎসব হয়। এতে বর্ষাবন্দনা, গান, কবিতা, নৃত্য পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাবিবুল আলম।
উদীচীর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপন বলেন, ‘আমাদের দেশে উন্নয়নের নামে পরিবেশ ও প্রকৃতির ওপর আগ্রাসী নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। বন ও পরিবেশ ধ্বংস করা হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে একটা সোচ্চার প্রতিবাদ করার জন্য বর্ষা উৎসব আয়োজন করা হয়েছে।’
![]() |
বর্ষা উৎসবে নৃত্য পরিবেশন করা হয় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
উৎসবে বেশ কয়েকটি দাবি জানানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে প্রাণপ্রকৃতি ধ্বংস করে কোনো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা যাবে না, ঢাকার পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সংযোগ সড়ক নির্মাণ বাতিল করতে হবে, দেশের নদী, হাওর ও জলাশয়ের নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে হবে ও সব দখলমুক্ত করতে হবে, প্রতিবেশী ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহার বন্ধে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে, সব প্রকৃতিবিধ্বংসী প্রকল্প বাতিল করতে হবে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় এক কোটি উদ্বাস্তুর জন্য বাসস্থান ও জীবিকার ব্যবস্থা করতে হবে এবং বর্ষায় কাজহীন কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের খাদ্য নিরাপত্তায় রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
বর্ষা উৎসব সঞ্চালনা করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সংগঠন বিভাগের সম্পাদক আরিফ নূর। অনুষ্ঠানে স্বরচিত বর্ষাকথন পাঠ করেন কবি রহমান মুফিজ।
উৎসবে গাছ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক ও মূল কথক আমিরুল রাজিব বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস থ্রি জিরো তত্ত্বে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার কথা বলেছেন। তবে অধ্যাপক ইউনূস সরকারে বসার পর এটা নিয়ে কোনো কাজ করছেন না। জুলাই ছাত্র–জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার আমলে করা প্রাণ ও প্রকৃতিবিধ্বংসী একটি প্রকল্প নিয়েও সমালোচনা করছেন না। তিনি (অধ্যাপক ইউনূস) এ ক্ষেত্রে তিন শূন্য পেয়েছেন।’
![]() |
উৎসবে বর্ষাবন্দনা, গান, কবিতা, নৃত্য পরিবেশন করা হয় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
সবাইকে প্রাণ ও প্রকৃতির যত্নে কথা বলার আহ্বান জানিয়ে আমিরুল রাজিব বলেন, মাত্র দুই বছরে ৮০ হাতি মারা গেলেও দেশে কেউ কথা বলছেন না। নদী, খাল, বিল ভরাট করে প্রকল্প গড়া হলেও কেউ কথা বলছেন না। তিনি এসব প্রকল্প বন্ধ করার আহ্বান জানান।
উৎসবে অংশ নেয় উদীচীর কেন্দ্রীয় শিল্পীগোষ্ঠী, গানের দল মাভৈ ও স্পন্দন নৃত্যগোষ্ঠী, রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী মহাদেব ঘোষ, আদ্রিতা আনোয়ার প্রকৃতি, তুহিন কান্তি দাস, হৃদিক জাহান, সুস্মিতা কীর্তনিয়া, মহাদেব ঘোষ, প্রিয়াঙ্কা গোপ, মুসা কলিম, মিথিলা ঘোষ, মায়েশা সুলতানা উর্বি প্রমুখ। এই অনুষ্ঠানে দেশের শিক্ষাবিদ, প্রাণ–পরিবেশ প্রকৃতিবিশেষজ্ঞ, অধিকারকর্মী, সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ সাধারণ মানুষ অংশ নিয়েছেন।