নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা

ঢাকার উত্তরায় এপিবিএন ও র‍্যাব-১-এর সদর দপ্তর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

পুলিশ বাহিনীর হাতে এখন থেকে ভারী মারণাস্ত্র দেখা না গেলেও তাদের বিশেষ ইউনিট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যদের হাতে এ ধরনের অস্ত্র থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

শনিবার ঢাকার উত্তরায় এপিবিএন ও র‍্যাব-১-এর সদর দপ্তর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘মারণাস্ত্র অর্থাৎ বড় ধরনের হাতিয়ারগুলো পুলিশের হাতে থাকবে না। এপিবিএনের রোল আলাদা, তাদের জন্য কিছু ভিন্ন অস্ত্রের প্রয়োজন হয়। পুলিশের অন্য ইউনিটের তুলনায় তাদের দায়িত্ব ভিন্ন।

‘যদি দেশের নিরাপত্তার প্রয়োজনে যুদ্ধ করতে হয়, তখন এপিবিএন বাহিনী সেনাবাহিনীর সঙ্গে ফ্রন্টলাইনে কাজ করবে। তাই তাদের জন্য আলাদা অস্ত্রের প্রয়োজন। যেমন নৌ পুলিশের প্রয়োজন জলযান। আবার ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের জন্য প্রয়োজন ভিন্ন সরঞ্জামের।’

গত ১২ মে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির নবম সভা শেষে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছিলেন, পুলিশের কাছে কোনো মারণাস্ত্র না থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদের এসব অস্ত্র জমা দিতে হবে। তবে সেই সিদ্ধান্তে এপিবিএন ছিল না।

সে ক্ষেত্রে পুলিশের হাতে এখন থেকে কী ধরনের অস্ত্র থাকবে, সাংবাদিকেরা আজ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে এই প্রশ্ন করেন।

জবাবে তিনি বলেন, ‘মারণাস্ত্র বলতে আমরা বড় ধরনের অস্ত্র বুঝিয়েছি। রাইফেল তো থাকবেই। আজকাল তো চাকুও মারণাস্ত্র হিসেবে গণ্য হয়। সেটা দিয়েও মানুষ খুন করা হয়।’

এদিন সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এবারের ঈদে কোনো বড় ধরনের খারাপ ঘটনা ঘটেনি। দু-একটি চুরি বা ছিনতাই ছাড়া পরিস্থিতি ভালো ছিল।’

চলতি বছরের প্রথম চার মাসে সাড়ে তিন শর বেশি খুনের ঘটনা ঘটেছে—পুলিশ সদর দপ্তরের দেওয়া এই তথ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘হত্যা হচ্ছে, কিন্তু আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে তা কমানো যায়। সাংবাদিকেরাও সচেতনতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারেন।

‘দুর্নীতি আর মাদক নির্মূলে আপনারা ইতিবাচক সংবাদ প্রচার করলে কাজটি সহজ হবে। এমনকি আমি বা পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) সাহেবের বিরুদ্ধেও যদি কিছু পান, লিখে ফেলেন।’

শনিবার সকালে উত্তরায় র‍্যাবের পোশাক পরে এক কোটি আট লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ সম্পর্কে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘অপরাধী যদি র‍্যাবের হয়, তাহলে ছাড় পাবে না। অনেক সময় র‍্যাব-পুলিশের পোশাক পরে অপরাধ করা হয়। তারা কেউই ছাড় পাবে না।’

ভারত থেকে বাংলাদেশে পুশ ইন প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ভারতের হাইকমিশনারকে জানিয়েছি, যথাযথ নিয়ম না মেনে কাউকে পাঠানো যাবে না। জঙ্গলের ভেতর, লেক বা নদীতে ফেলে দেওয়া অমানবিক কাজ। আমরা শক্ত প্রতিবাদ জানিয়েছি।

‘আমাদের কোনো নাগরিক যদি ভারতে থাকে, আমরা নেব, তবে নিয়ম মেনে নিতে হবে। তেমনি ভারতের কোনো নাগরিক থাকলে, আমরাও নিয়ম মেনে ফেরত পাঠাব।’