নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা

সাবেক সিইসি কেএম নূরুল হুদাকে রোববার তার উত্তরার বাসায় হেনস্তা করে কথিত জনতা |  ছবি: সংগৃহীত

‘মব’ সৃষ্টি করে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে হেনস্তার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব মো. হানিফসহ তিনজনের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) মো. সানাউল্লাহ আজ বুধবার এ আদেশ দেন।

এ তথ্য নিশ্চিত করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ নজরুল ইসলাম। জামিনপ্রাপ্ত অপর দুই আসামি হলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের উত্তরা পূর্ব থানার যুগ্ম আহ্বায়ক কাইয়ুম এবং দলের কর্মী মুজাম্মেল হোসেন ঢালী।

গত রোববার রাজধানীর উত্তরার বাসায় ঢুকে একদল লোক নূরুল হুদাকে বের করে আনেন। পরে জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করে পুলিশে সোপর্দ করেন। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ঘটনার সময় সেখানে পুলিশও উপস্থিত ছিল। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া এ ঘটনার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, নূরুল হুদাকে জুতা দিয়ে মারছিলেন মুজাম্মেল হোসেন ঢালী।

এই মুজাম্মেল হোসেন ঢালী ও স্বেচ্ছাসেবক দলের উত্তরা পূর্ব থানার যুগ্ম আহ্বায়ক কাইয়ুম আজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। সেই সঙ্গে এ মামলায় গ্রেপ্তার হানিফেরও জামিনের আবেদন করা হয়। গতকাল হানিফকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছিলেন আদালত।

আদালতে শুনানিতে আসামিপক্ষ থেকে বলা হয়, যে ধারায় মামলা, সেটি জামিনযোগ্য ধারা। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত তাঁদের তিনজনের জামিন মঞ্জুর করেন।

এর আগে গতকাল সাবেক সিইসি নূরুল হুদাকে হেনস্তার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করে। মামলায় ফরিদসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করা হয়। মামলার এজাহারভুক্ত অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক দলের তুরাগ থানার সভাপতি দুলাল এবং উত্তরা পশ্চিম থানার আহ্বায়ক সেলিম। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদেরও আসামি করা হয়।

পুলিশ বলছে, ‘মব’ তৈরি করে নূরুল হুদাকে হেনস্তার ঘটনায় ফরিদ হোসেন নেতৃত্ব দেন। ভিডিও ফুটেজ ও তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ফরিদসহ ছয়জনকে শনাক্ত করা হয়। তাঁরা সবাই ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। গত সোমবার রাতে হানিফ মিয়াকে সেনাবাহিনী আটক করে উত্তরা পশ্চিম থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, মামলায় কে এম নূরুল হুদাকে জুতা দিয়ে মারধর, তাঁর মানহানি এবং বাসায় অনধিকার প্রবেশের অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ছাড়া নূরুল হুদার বাসায় অনধিকার প্রবেশ করে মব তৈরি করা হয়েছিল। মামলার এজাহারে এসব বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। যাঁদের আসামি করা হয়েছে, তাঁরা সবাই ঘটনাস্থলে ছিলেন।