প্রতিনিধি মাদারীপুর

মাদারীপুর শহরে রাতে ছাত্রলীগের ব্যানারে ঝটিকা মিছিল বের করা হয় | ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

মাদারীপুরে ছাত্রলীগের ব্যানারে একটি ঝটিকা মিছিল হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে পৌর শহরের সরদার কলোনির সড়ক থেকে মিছিলটি বের হয়ে ডাক্তার তোতা সড়কে গিয়ে শেষ হয়। ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ওই মিছিলে ২৫-২৮ জন তরুণ ও কিশোর অংশ নেন। তাঁদের সবার মুখে মাস্ক এবং একজনের মাথায় হেলমেট ছিল। ঝটিকা মিছিলটি প্রায় পাঁচ মিনিটের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। আওয়ামী লীগের ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঝটিকা মিছিলের আয়োজন করে জেলা ছাত্রলীগ। এর আগেও জেলা শহরে তিনবার জেলা ছাত্রলীগের ব্যানারে ঝটিকা মিছিল বের করা হয়েছিল।

এদিকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিলের ভিডিও রাত ১১টার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন গ্রুপে ছড়িয়ে পড়ে। ৩৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ নেতা ও মাদারীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাজাহান খানের ছবিসহ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিসংবলিত একটি ব্যানার হাতে নিয়ে নির্জন একটি সড়কে মিছিল করছেন কয়েকজন তরুণ। তাঁরা ব্যানার হাতে নিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। আর স্লোগান দিচ্ছেন, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘শেখ হাসিনার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘শেখ হাসিনা বীরের বেশে, আসবে ফিরে বাংলাদেশে’, ‘অবৈধ সরকার, মানি না মানব না’ প্রভৃতি। ব্যানারের মাঝে লেখা ছিল—‘আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও অবৈধ আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল’।

মিছিলটির প্রত্যক্ষদর্শী নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, সরদার কলোনি একটি আবাসিক এলাকা। এই কলোনির সঙ্গে ডিসি, এসপি ও জেলা জজের সরকারি বাসভবন। এখানকার মূল সড়কে কয়েকজন তরুণ মাস্ক পরে দাঁড়ানো ছিলেন। হঠাৎ তাঁরা একটি ব্যানার হাতে নিয়ে স্লোগান দিয়ে মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি সর্বোচ্চ পাঁচ মিনিট স্থায়ী ছিল। সবার মুখে মাস্ক ছিল, তাই কারও চেহারা চেনা যায়নি। মিছিল করে তাঁরা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে সরে পড়েন।

ঝটিকা মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হলেও বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নয় পুলিশ। জানতে চাইলে মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আদিল হোসেন বলেন, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কোনো ঝটিকা মিছিল হয়েছে কি না, জানা নেই। তারা লুকিয়ে শহরের নির্জন বা অলিগলিতে চোরের মতো করে থাকতে পারে। যেহেতু আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সব সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, কাজেই এ ধরনের মিছিল বেআইনি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

৫ আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকারের পতনের পর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হাসান, সাধারণ সম্পাদক বায়েজিদ হাওলাদারসহ শীর্ষ নেতারা পলাতক। তবে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দেসহ জেলার অন্তত ২০ জন নেতা-কর্মী বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।