নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানার মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদাকে সোমবার ঢাকার মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
‘জনগণের ভোট ছাড়া’ নির্বাচন আয়োজনের অভিযোগে করা মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে চার দিনের রিমান্ডে দিয়েছেন আদালত।
সোমবার শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান এ আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামসুজ্জোহা সরকার নূরুল হুদাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর সরকারি কৌঁসুলি ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। অন্যদিকে, নূরুল হুদার পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ সজীব সোহাগ জামিন চেয়ে রিমান্ডের বিরোধিতা করেন।
শুনানি শেষে বিচারক চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে জানান পুলিশের উপপরিদর্শক রফিকুল ইসলাম।
এর আগে, রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর উত্তরার বাসা থেকে কে এম নূরুল হুদাকে আটক করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ‘জনতা’র পরিচয়ে একটি দল তার বাসায় গিয়ে তাকে হেনস্তা করে। একপর্যায়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে তাকে নিচে নামিয়ে আনা হয়। ঘটনাটি কেউ কেউ ফেসবুকে লাইভও করেন। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি সাবেক সিইসির কলার ধরে বক্তব্য দিচ্ছেন এবং তার পাশেই পুলিশের পোশাকে একজন দাঁড়িয়ে আছেন।
পরে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান জানান, স্থানীয়দের ঘেরাওয়ের খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
পরে রাতেই সরকার এক বিবৃতিতে আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলে, “সরকার দেশের প্রতিটি নাগরিককে আবারও অনুরোধ করছে— কেউ যেন আইন নিজের হাতে না নেয়।”
রোববারই শেরেবাংলা নগর থানায় বিএনপির পক্ষ থেকে সাবেক সিইসি নূরুল হুদাসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। আসামিদের তালিকায় আছেন দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় দায়িত্বে থাকা তিনজন সিইসি, নির্বাচন কমিশনার এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কে এম নূরুল হুদা ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার নেতৃত্বাধীন কমিশনের অধীনে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ বেশ কিছু স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ কমিশনের মেয়াদ শেষ হয় ২০২২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি।