প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ
![]() |
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে নিজ বাড়ির আঙিনায় হাঁসের ছানাকে খাবার দিচ্ছেন মিঠুন চন্দ্র ওঁরাও। সম্প্রতি উপজেলার গুড়পিপুল এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
বাবার হঠাৎ মৃত্যুতে সংসারের হাল ধরেন মিঠুন চন্দ্র ওঁরাও। বাবার রেখে যাওয়া হাঁসের খামারে কাজ শুরু করেন তিনি। পাশাপাশি পড়ালেখাও চালাচ্ছেন এই তরুণ। হাঁস বিক্রির আয় দিয়ে পুরো সংসারের খরচ মেটানোসহ যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ করেন তিনি।
মিঠুন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার দেশীগ্রাম ইউনিয়নের গুড়পিপুল গ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি নাটোরের সিংড়া উপজেলার একটি কলেজে স্নাতক (পাস) শ্রেণির দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
গত রোববার দুপুরে মিঠুনদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, উঠানভর্তি হাঁসের ছানা। নিজ হাতে এগুলোকে খাবার ছিটিয়ে দিচ্ছেন তিনি। একটু দূরে দাঁড়িয়ে তদারক করছেন তাঁর মা পদ্মমণি রানী ওঁরাও।
কথায় কথায় জানা গেল, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় (এনজিও) চাকরি করতেন মিঠুনের বাবা গজেন্দ্রনাথ ওঁরাও। পাশাপাশি বছর আটেক আগে হাঁসের বাচ্চা পালন শুরু করেন। গত বছর হঠাৎ করে তিনি মারা যান।
মিঠুন বলেন, বাবা চাকরির পাশাপাশি বছর আটেক আগে হাঁসের বাচ্চা পালন শুরু করেন। তাঁর মা এ কাজে সাহায্য করতেন। একটু বড় হয়ে মিঠুনও হাঁসের বাচ্চা পালনের সঙ্গে যুক্ত হন। পাশাপাশি পড়ালেখা চলতে থাকে। তাঁর বোন চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন।
বাড়িতে বর্তমানে প্রায় ৮০০টি হাঁসের বাচ্চা বড় করা হচ্ছে। প্রতিটি হাঁসের বাচ্চা তিনি ৩৭ টাকায় কিনেছেন। মাস তিনেক লালন-পালনের পর বিক্রির উপযোগী হবে এগুলো। তখন প্রতিটির দাম হবে ৪৫০-৫০০ টাকা বলে জানান মিঠুন।
হাঁসের রোগবালাই ও যত্ন নিয়ে অনেকটাই সচেতন জানিয়ে মিঠুন বলেন, ‘আমি স্থানীয় চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে চলি। সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ পেলে আরও ভালো করতে পারব।’
মিঠুনের মা বলেন, তাঁর রেখে যাওয়া এই উদ্যোগের হাল ধরেছেন তাঁরা। এখন তাঁরা ভালো আছেন। বছর বছর তাঁদের পালিত হাঁসের বাচ্চার সংখ্যা বাড়ছে।
স্থানীয়ভাবে হাঁসের বাচ্চা পালনকে লাভজনক পেশা উল্লেখ করে উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, তাড়াশে চার শতাধিক মানুষ এ কাজের সঙ্গে যুক্ত। প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই ৫০০-৯০০ হাঁসের বাচ্চা পালন করা হয়। যেকোনো প্রয়োজনে খামারিদের যোগাযোগ করার আহ্বান জানান তিনি।