প্রতিনিধি গাজীপুর
![]() |
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বিএনপির মতবিনিময় সভায় হামলায় আহত যমুনা টিভির ক্যামেরাপার্সন রকি হোসেন। শনিবার দুপুরে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বিএনপির মতবিনিময় সভা শেষে হামলায় আহত হয়েছেন এক সংবাদকর্মীসহ তিনজন। আজ শনিবার বেলা দুইটায় উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের চোরাগ আলী মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত সংবাদকর্মীর নাম মো. রকি হোসেন (২৬)। তিনি যমুনা টিভির গাজীপুরের ক্যামেরাপারসন। আহত অপর দুজন হলেন গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাখাওয়াত হোসেন (সেলিম) ও তাঁর গাড়িচালক মো. দেলোয়ার হোসেন। আহত সংবাদকর্মীকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্য ব্যক্তিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আজ দুপুরে ওই এলাকায় কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির ব্যানারে মতবিনিময় সভা চলছিল। কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে ওই মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাখাওয়াত হোসেন ও বিশেষ অতিথি ছিলেন কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জামাল উদ্দীন আহম্মেদ। মতবিনিময় সভায় আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর শফিউল্লাহ মিঠু।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপির একাধিক নেতা–কর্মী জানান, মতবিনিময় শেষে গণমাধ্যমকর্মীরা একটি কক্ষে অবস্থান করছিলেন। অপর দিকে নেতা–কর্মীরা সভাস্থল ছেড়ে যাচ্ছিলেন। এমন সময় ২০ থেকে ২৫টি মোটরসাইকেলে কয়েকজন এসে মতবিনিময় সভার মঞ্চ, চেয়ার ও টেবিল ভাঙচুর করেন। এই দৃশ্য ধারণ করতে যান যমুনা টিভির ক্যামেরাপারসন রকি হোসেনসহ আরও কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী। এ সময় হামলাকারীরা তাঁদের ওপর চড়াও হন। রকি হোসেনের মাইক্রোফোন, আইডি কার্ড, লাইভ ডিভাইস ও ল্যাপটপ নিয়ে যান হামলাকারীরা। পরে উপস্থিত লোকজন রকি হোসেনকে উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় হামলায় কিছুটা আহত হন গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাখাওয়াত হোসেন ও তাঁর গাড়িচালক।
রকি হোসেন বলেন, ‘আমি ভিডিও করছিলাম। এ সময় শাহ রিয়াজুল হান্নানের নাম ধরে মিছিল করতে করতে ২০ থেকে ২৫টি মোটরসাইকেলে লোকজন এসে আমার ওপর হামলা করেন। আমি হাসপাতালে আছি। কিছুটা সুস্থ হলে এ ঘটনায় মামলা করব।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সভায় আমন্ত্রিত অতিথি শফিউল্লাহ মিঠু গাজীপুর–৪ (কাপাসিয়া) নির্বাচনী এলাকায় বিএনপির দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচন করতে জনমত গঠন করছেন। তাঁর বাবা চিকিৎসক মোহাম্মদ সানাউল্লাহ সাবেক ঢাকা–২২ (বর্তমানে গাজীপুর–৪) আসনে বিএনপির সংসদ সদস্য ছিলেন। অপর দিকে এই আসনে বিএনপির প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহর ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান।
গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাখাওয়াত হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ‘হামলাকারীরা গাজীপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ রিয়াজুল হান্নানের লোকজন। তাঁর নির্দেশেই হামলা হয়েছে। তাঁরা এর আগেও আমাদের বিভিন্ন সভায় হামলা করেছেন।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে শাহ রিয়াজুল হান্নান বলেন, ‘দলীয় পরিচয়ে কেউ যদি সংবাদকর্মীদের ওপর আক্রমণ করে থাকেন, এটা যদি তদন্তে প্রমাণিত হয়, তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে দল থেকে যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার, আমরা সেটা করব।’
এ বিষয়ে কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।