প্রতিনিধি হবিগঞ্জ

জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য নেওয়া হচ্ছে আঙুলের ছাপ | ফাইল ছবি

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার মান্দারকান্দি গ্রামের জিতু মিয়া সম্প্রতি তাঁর এক সন্তানকে মাদ্রাসায় ভর্তি করতে গিয়ে দেখেন জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) তাঁর জন্মতারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ১৮৮৭ সালের ২ মার্চ। এ হিসাবে তাঁর বয়স ১৩৮ বছর। অথচ তাঁর বাবারই বয়স বর্তমানে ৭৫ বছর।

বাস্তবে জিতু মিয়ার বয়স ৩৮ বছর। এই ত্রুটিযুক্ত পরিচয়পত্রের কারণে তিনি তাঁর সন্তানকে মাদ্রাসায় ভর্তি করতে পারেননি। এনআইডি সংশোধনের জন্য জিতু মিয়া পাঁচ–ছয় মাস ধরে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরে আসা-যাওয়া করছেন। সর্বশেষ তিনি গত বৃহস্পতিবার আবেদন করেছেন নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে।

 জিতু মিয়ার বাবা হারিছ মিয়ার জন্মতারিখ ১৯৫০ সালের ১ মার্চ। এ হিসাবে তাঁর বয়স ৭৫ বছর। অর্থাৎ তিনি তাঁর বাবার চেয়ে ৬৩ বছরের বড়।

ভুলটি এত দিন কেন তাঁর চোখে পড়নি, জানতে চাইলে জিতু মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন তিনি বিদেশে ছিলেন। যে কারণে জাতীয় পরিচয়পত্র সেভাবে প্রয়োজন পড়েনি, সে কারণে ভুলও চোখে পড়েনি। সম্প্রতি তাঁর ১২ বছরের ছেলেকে ভর্তি করাতে গেলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের প্রথম নজরে আসে তাঁর এনআইডিতে বয়সের ভুল রয়েছে। আজ শনিবার প্রথম আলোকে জিতু মিয়া বলেন, এ সমস্যা সমাধানে চার থেকে পাঁচ মাস ধরে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরছেন, কিন্তু প্রতিকার পাচ্ছেন না। গত মঙ্গলবার অ্যাফিডেভিট করেছেন। এখন জন্মসনদ সংশোধন করতে নবীগঞ্জের ইউএনওর কাছে আবেদন করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাস জানান, এনআইডি সংশোধন করতে হলে জন্মনিবন্ধন ছাড়া সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়। ওই ব্যক্তির অনলাইন জন্মনিবন্ধনও সংশোধন করতে হবে।

বিষয়টি নজরে আনা হলে নবীগঞ্জের ইউএনও মো. রুহুল আমিন বলেন, জিতু মিয়া নামের ওই ব্যক্তির দাবি অনুযায়ী তাঁর জন্মতারিখ ১৯৮৭ সালে হয়ে থাকলে তাঁর একটি প্রুফ বা ডকুমেন্ট তিনি এখনো দেখাতে পারছেন না। পাশাপাশি তিনি লেখাপড়া করেননি। এ কারণে তাঁর শিক্ষাগত সার্টিফিকেটও নেই। তাঁকে সিভিল সার্জনের কাছ থেকে বয়সসম্পর্কিত মেডিকেল রিপোর্ট নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। সিভিল সার্জনের রিপোর্ট পেলে জন্মনিবন্ধন সংশোধন করে দেওয়া হবে।