নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা

রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে দলের নেতারা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

বিভিন্ন কারণে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব আমলে নিয়ে অবিলম্বে ইসি পুনর্গঠন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়ার দাবিতে আগামীকাল বুধবার বেলা ১১টায় ইসির কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করবে দলটি।

আজ মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচির কথা জানান দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেন। এ সময় দলের পক্ষে একটি লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান তিনি।

এনসিপির লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘২০২০ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অবৈধ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমানে জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকাই দায়ী বলে আমরা মনে করি।’

এনসিপি উল্লেখ করেছে, ‘ইশরাক হোসেন বনাম শেখ ফজলে নূর তাপস গং’ মামলার বিবাদী হওয়া সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন নজিরবিহীনভাবে মামলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি, যার ফলে একতরফা রায় দেওয়া হয়েছে। এমনকি রায়ের পর নির্বাচন কমিশন উচ্চ আদালতে প্রতিকার প্রার্থনা না করে মামলার বাদীকে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।

এর আগেও নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ আচরণ বজায় রাখার পরিবর্তে এমন সব বক্তব্য দিয়েছে, যার সঙ্গে একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের অবস্থানের সাযুজ্য রয়েছে—এমন অভিযোগও করেন এনসিপি নেতা আখতার হোসেন। তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন অবৈধ ও ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের প্রণীত ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন ২০২২’ অনুযায়ী গঠিত, যা সে সময় ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দল ও পক্ষ প্রত্যাখ্যান করেছিল।

জনপ্রতিনিধি না থাকায় নাগরিক সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে এবং সামাজিক সুরক্ষা উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে আখতার হোসেন বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ‘ইশরাক হোসেন বনাম শেখ ফজলে নূর তাপস গং’ মামলাকে নজির হিসেবে নিয়ে সারা দেশে অবৈধ নির্বাচনের প্রার্থীরা আদালতের শরণাপন্ন হয়ে এক জটিল ও সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি করছে। এই সংকট নিরসনে এবং জনদুর্ভোগ লাঘবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনই একমাত্র সমাধান। কিন্তু ফ্যাসিবাদী আইনে গঠিত বর্তমান পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন কমিশন এই নির্বাচন আয়োজনে সক্ষম নয় বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।

লিখিত বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। দলের দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।