[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

মিল্ক ভিটা কমিয়ে দিয়েছে দাম, দিশেহারা খামারিরা

প্রকাশঃ
অ+ অ-

দুধের দাম কমে যাওয়ায় লোকসানে পড়েছেন খামারিরা। হতাশায় কাটছে তাঁদের দিন। সম্প্রতি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার একটি খামারে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

খামারিদের কাছ থেকে কেনার ক্ষেত্রে প্রতি লিটার দুধের দাম ৫ টাকা কমিয়েছে মিল্ক ভিটা। অন্যদিকে বেড়েছে গোখাদ্যের দাম। এই অবস্থায় গবাদিপশু পালনে আগ্রহ হারাচ্ছেন সিরাজগঞ্জের খামারিরা। তাঁরা বলছেন, এই শিল্পকে বাঁচাতে দুধের দাম বাড়ানো এবং গোখাদ্যের দাম কমানোর বিকল্প নেই। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, খামারিদের টিকিয়ে রাখতে দুধের দাম বাড়ানো হয়েছিল। এখন পরিবেশ স্বাভাবিক, যে কারণে আগের অবস্থায় ফিরে আসা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সমবায়ভিত্তিক রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান মিল্ক ভিটা খামারিদের কাছ থেকে দুধ সংগ্রহ করছে লিটারপ্রতি ৪৮-৫০ টাকায়। মিল্ক ভিটা বিভিন্ন ডিলারের কাছে লিটারপ্রতি দুধ বিক্রি করছে ৮৬ টাকায়। এই ডিলার আবার পাইকারিভাবে দুধ বিক্রি করছে ৯১ টাকা লিটার। আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা লিটার।

মিল্ক ভিটা ও খামারি সূত্র বলেছে, ১৯৭৩ সালে মিল্ক ভিটার একটি দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা করা হয় সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে। এরপর সেখানে গড়ে ওঠে শত শত গরুর খামার। বর্তমানে এসব খামারের ৪ লক্ষাধিক গবাদিপশু থেকে উৎপাদিত ৫ লাখ লিটার দুধ দেশের মোট চাহিদার সিংহভাগ পূরণ করছে। অপর দিকে সচ্ছলতার মুখ দেখেছিলেন সিরাজগঞ্জের মানুষেরা। কিন্তু এখন চিত্র পাল্টে গেছে। ক্রমাগত গোখাদ্য, ওষুধসহ অন্যান্য পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু মিল্ক ভিটা দুধের দাম বাড়াচ্ছে না। উল্টো লিটারপ্রতি ৫ টাকা কমিয়ে দিয়েছে। যদিও ভোক্তাপর্যায়ে দুধের দাম ঠিকই আকাশছোঁয়া।

খামারিদের অভিযোগ, সমিতিভুক্ত হওয়ায় বাধ্য হয়ে ৪৮-৫০ টাকা লিটারে দুধ বিক্রি করতে হয় তাঁদের। কিন্তু গোখাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি থেমে নেই। সম্প্রতি দুধের দাম লিটারে ৫ টাকা কমিয়েছে মিল্ক ভিটা। এ অবস্থায় লোকসানে পড়ে গবাদিপশু পালনে আগ্রহ হারাচ্ছেন তাঁরা। শাহজাদপুরের দক্ষিণ বাঙলাপাড়া দুগ্ধ সমবায় সমিতির সদস্য আব্দুল করিম সরদার বলেন, ‘খামারের ব্যবসায় এখন লোকসান। খাদ্যের দাম বেশি। দুধের দাম কম। মিল্ক ভিটা ৪৮-৫০ টাকা লিটারে দাম দেয়। গরু পালা কষ্টকর হয়ে পড়েছে।’

শাহজাদপুরের রেশমবাড়ি পূর্বপাড়া প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতির সভাপতি রায়হান উদ্দিন বলেন, ‘দুধের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় খামারিরা পথে বসছে। ১ মে থেকে দুধের দাম ৫ টাকা কমিয়েছে মিল্ক ভিটা। এখন ৪৮-৫০ টাকা লিটারপ্রতি দাম দিচ্ছে। আমার সমিতির সদস্য দুই শতাধিক। আমরা সবাই লোকসানে আছি।’ রেশমবাড়ি প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, ‘মিল্ক ভিটা ৬০ টাকার ওপরে দুধ কিনত। অনেক সময় তারা ঘোষণা ছাড়াই দুধ নেওয়া বন্ধ করে দেয়। সেই দুধ ৩৫ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। দুধের দাম কমছে আর গোখাদ্যের দাম বাড়ছে। এতে গোখামারিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।’

মিল্ক ভিটার পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান মনির বলেন, ‘এটি একটি বিজনেস। খামারিদের টিকিয়ে রাখতে দুধের দাম ৫ টাকা বাড়ানো হয়েছিল। এখন পরিবেশ স্বাভাবিক, যে কারণে আগের অবস্থায় ফিরে আসা হয়েছে। বাজারে অন্যান্য কোম্পানির চেয়ে আমাদের দুধের দাম লিটারে ৩-৪ টাকা বেশি। মিল্ক ভিটা দুধের দাম কমানোর উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু আমরা পরিচালকেরা দুধের দাম কমাতে দিইনি।’

শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, একটি প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল না থেকে খামারিরা যেন সমবায় মাধ্যম হোক বা এককভাবে হোক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হিসেবে দুগ্ধপণ্য তৈরি করা শেখে। তাহলে আর কোনো চিন্তা থাকবে না।’

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন