প্রতিনিধি গাইবান্ধা
![]() |
গাইবান্ধায় পল্লিচিকিৎসক তরিকুল ইসলামকে অপহরণের সময় ঘটনাস্থলে হেলমেট ও পুলিশের পোশাক পরা এক ব্যক্তিকে দেখা যায় | ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া |
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় পল্লিচিকিৎসক তরিকুল ইসলাম (৩৫) অপহরণের একটি নতুন ভিডিও পাওয়া গেছে। সেখানে পুলিশের পোশাক ও হেলমেট পরা এক ব্যক্তিকে দেখা গেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ওই ব্যক্তি পুলিশের কর্মকর্তা বা সদস্য হলেও অপহরণের সময় তিনি বাধা দেননি।
তবে আজ রোববার বিকেলে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজউদ্দিন খন্দকার দাবি করেন, ঘটনাস্থলে পুলিশের কোনো লোক ছিলেন না। এটা অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে। ভিডিওতে পুলিশের লোককে দেখা যাচ্ছে উল্লেখ করা হলে ওসি বলেন, পোশাক হয়তো এ রকম হতে পারে। নানাজনে নানা কথা বলছেন।
নতুন পাওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি পল্লিচিকিৎসক তরিকুলকে টেনেহিঁচড়ে একটি অটোরিকশায় তুলছেন। পুলিশের পোশাক পরিহিত ব্যক্তি এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এ সময় ভিডিওতে এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, ‘এখানে কিন্তু প্রশাসনের লোক আছে।’ তবুও তরিকুলকে অটোরিকশায় তোলা হয় এবং পরে তাঁকে ভ্যানে ধরে রাখা হয়।
গত শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে সাদুল্লাপুর উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের হাতি চামটার ব্রিজ এলাকা থেকে অপহরণের শিকার হন পল্লিচিকিৎসক তরিকুল ইসলাম। এ ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। কিন্তু আজ বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত তাঁকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি।
অপহৃত তরিকুলের বাড়ি সাদুল্লাপুর উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর কুটিপাড়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। তিনি একজন পল্লিচিকিৎসক। ভাতগ্রাম বাজারে তাঁর ওষুধের দোকান রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিদের ভাষ্য, শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে তরিকুল বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে করে ভাতগ্রাম বাজারে ওষুধের দোকানে যাচ্ছিলেন। তিনি হাতি চামটা ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাঁর পথ রোধ করে। তারা তাঁকে জোর করে অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় পরদিন শনিবার বিকেলে সাদুল্লাপুর থানায় মারধর ও অপহরণের মামলা করা হয়েছে। পল্লিচিকিৎসকের ছোট ভাই হিরু মিয়া এই মামলা করেন। মামলায় আটজনের নাম উল্লেখ করে সাত থেকে আটজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি দেখানো হয়। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, পূর্বশত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।
মামলার বাদী হিরু মিয়া মুঠোফোনে বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে আসামিরা কয়েকবার মুঠোফোনে আমাদের কাছে টাকা দাবি করে। তাদের লোকজন আমাদেরকে হুমকি দিচ্ছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
এ প্রসঙ্গে সাদুল্লাপুর থানার ওসি তাজউদ্দিন খন্দকার বলেন, অপহৃত তরিকুল ইসলামকে উদ্ধারে পুলিশের কয়েকটি দল অভিযান চালাচ্ছে। ঘটনার সময়ের ভিডিওটি দেখে আসামি শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।