প্রতিনিধি সুনামগঞ্জ

ইউএনওর প্রত্যাহার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলকারীদের ওপর হামলা করা হয়েছে। রোববার দুপুরে সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা সদরের মাল্টিপারপাস সেন্টারের সামনের সড়কে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে তাঁকে প্রত্যাহারের দাবিতে আজ রোববার ‘সচেতন এলাকাবাসী’র ব্যানারে মানববন্ধন হয়েছে। মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলা সদরে যাওয়ার পথে বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাঁদের ওপর হামলা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. রাজু আহমদ বলেন, ওই মানববন্ধনে আওয়ামী লীগের দোসররাই বেশি ছিলেন। তাঁরা মানববন্ধন করে উপজেলা সদরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য আসতে চাইলে বিএনপির কয়েকজন গিয়ে তাঁদের চলে যেতে অনুরোধ করেন। কিন্তু তাঁরা সেটি না মানায় হাতাহাতি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা তো আওয়ামী লীগকে সহ্য করব না। তারা নানা নামে রাস্তায় নামতে চাইছে। আমরা নামতে দেব না।’

বিক্ষোভকারীরা বলেন, বিশ্বম্ভরপুর ইউএনও মফিজুর রহমানের বিরদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে ‘সচেতন এলাকাবাসী’র ব্যানারে রোববার দুপুরে কারেন্টের বাজার এলাকায় মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধন শেষে তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলা সদরের দিকে রওনা হন। মিছিলটি উপজেলা সদরের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফটক পার হয়ে মাল্টিপারপাস সেন্টারের সামনের সড়কের যাওয়ার পর বিএনপির কিছু লোক এসে তাঁদের বাধা দেন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়। পরে তাঁরা লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিলকারীদের ওপর হামলা চালান।

ইউএনওর প্রত্যাহার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলকারীদের ওপর হামলা করা হয়েছে। রোববার দুপুরে সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা সদরের মাল্টিপারপাস সেন্টারের সামনের সড়কে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

ইউএনওর প্রত্যাহার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি আয়োজকদের একজন উপজলোর বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, তাঁদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ছিল। প্রথমে কারেন্টের বাজার এলাকায় জমায়েত হয়ে সংক্ষিপ্ত মানববন্ধন করেন। তবে মূল কর্মসূচি ছিল উপজেলা সদরের গোলচত্বরে। সেখানে মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে বিএনপির কিছু লোকজন এসে লাটিসোঁটা দিয়ে মিছিলে হামলা চালান। এতে তাঁদের ১২ জন আহত হয়েছেন। শামীম আহমদ নামের একজন ছাত্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন।

শফিকুল আরও বলেন, ‘ইউএনও লোকজন দিয়ে আমাদের ওপর হামলা করিয়েছেন। যাঁরা হামলা করেছেন, তাঁরা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। সবাই তাঁদের চেনেন। আমরা অবিলম্বে ইউএনওর প্রত্যাহার ও শাস্তি চাই।’

এ ঘটনার পর উপজেলা সদরে ইউএনওর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ‘সচেতন নাগরিক সমাজ’–এর ব্যানারে মানববন্ধন করা হয়। সেখানে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আসাব উদ্দিন, উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি আবুল কালাম, যুবদলের সদস্যসচিব জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুপুরে ইউএনও মফিজুর রহমান বলেন, ‘আমি সুনামগঞ্জ শহরে একটি সভাতে এসেছি। আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ নিয়ে কিছু লোক মানববন্ধন করেছেন। এলাকাবাসী আবার তাঁদের প্রতিহত করেছেন বলে শুনেছি। উপজেলায় গিয়ে বিস্তারিত জানতে পারব।’