প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম ওরফে সাম্য | ছবি: শাহরিয়ারের ফেসবুক আইডি থেকে নেওয়া

‘গত শুক্রবার ঢাকার বড়বাগে আমার ভাতিজির গায়েহলুদের অনুষ্ঠানে সাম্যর (শাহরিয়ার আলম) সঙ্গে শেষবার কথা হয়েছিল। কে জানত, সেটাই হবে আমাদের শেষ কথা! এরপর গতকাল রাতে টেলিভিশনে তাকে হত্যার খবর দেখে আঁতকে উঠি।’

কথাগুলো বলছিলেন গতকাল মঙ্গলবার রাতে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম ওরফে সাম্যর (২৫) চাচা কায়সার উল আলম।

কায়সার উল আলম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া এমন সম্ভাবনাময় এক তরুণকে এভাবে নির্মমভাবে হত্যা করা হবে, সেটা তাঁদের ভাবনার বাইরে। তিনি বিশ্বাসই করতে পারছেন না, শাহরিয়ারের সঙ্গে আর কোনো দিন কথা হবে না।

আজ বুধবার সকালে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার সড়াতৈল গ্রামে শাহরিয়ারদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, স্বজনেরা আহাজারি করছেন। পরিবারটিকে সান্ত্বনা জানাতে ভিড় করছেন গ্রামের নারী-পুরুষ।

শাহরিয়ারের প্রতিবেশী ও দূর সম্পর্কের চাচা কবির সরদার বলেন, ‘প্রতিবছর গ্রামে বেড়াতে আসত সাম্য। সবার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলত। নম্র–ভদ্র ছেলের এমন পরিণতি কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না।’

শাহরিয়ারের মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁর গ্রামের বাড়িতে আসেন স্বজন প্রতিবেশীরা। বুধবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার ধুকুরিয়া বেড়া ইউনিয়নের সড়াতৈল গ্রামে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

পরিবারের সূত্রে জানা গেছে, শাহরিয়ারের বাবা ফকরুল আলম ঢাকার মিরপুরের রূপনগর আবাসিক এলাকার একটি বহুতল ভবনের সপ্তম তলায় পরিবার নিয়ে থাকেন। গ্রামের বাড়িতে থাকেন শাহরিয়ারের চাচারা। চার ভাইয়ের মধ্যে শাহরিয়ার ছিলেন সবার ছোট। তাঁর বড় ভাই আমিরুল ইসলাম ওরফে সাগর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।

শাহরিয়ার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি স্যার এ এফ রহমান হলের ২২২ নম্বর কক্ষে থাকতেন। হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন শাহরিয়ার।

কায়সার উল আলম জানান, শাহরিয়ারের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাঁর প্রথম জানাজা হবে। এরপর স্বজনদের দেখার জন্য কিছু সময় লাশ রাখা হবে ঢাকায়। তারপর মরদেহ আনা হবে সিরাজগঞ্জের সড়াতৈল গ্রামের বাড়িতে। সেখানে মাগরিবের নামাজের পর মাদ্রাসা মাঠে জানাজা শেষে গ্রামের কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।