নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ৫ আগস্টের পর যেসব দলের জন্ম হয়েছে, শুধু সেসব দলই নির্বাচন চায় না।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় আমীর খসরু এ কথা বলেন। আজ শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জিয়া পরিষদ নামের একটি সংগঠন এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের বার্তা জনগণ আর কীভাবে দেবে, এমন প্রশ্ন রেখে আমীর খসরু বলেন, নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে অবশ্যই হতে হবে। দেশের ভেতর ও বাইরের বিনিয়োগকারীরা জিজ্ঞাসা করে, নির্বাচন কবে? অন্যান্য যারা আছে, তারাও সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে। সবাই বলছে নির্বাচন কবে?
শুধু একটি নয়, কমপক্ষে ৫২টি দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায় দাবি করে আমীর খসরু বলেন, ‘যদি কেউ বলে, শুধু একটি দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়, এটা কি সত্য কথা? তাহলে এ ধরনের একটা মন্তব্য কি আমাদের (বিএনপির) উদ্দেশে করা হয়েছে? এটা কী অর্থ বহন করে?’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে চায় না কারা, হাতে গোনা চার-পাঁচটি দল। তাদের সমর্থনের ব্যাপারে আমি কিছু বলতে চাই না, এটা জনগণ বুঝে নেবে। এরা এখনো নিবন্ধিত দলও নয়। বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে এদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
গণতন্ত্রের উত্তরণের পথে বাধা তৈরিতে ওয়ান-ইলেভেনের পরও কিংস পার্টি নামক এ ধরনের দল সৃষ্টি করা হয়েছিল মন্তব্য করে আমীর খসরু বলেন, ‘তাহলে আমরা কি আবার ওই লাইনে চলছি নাকি? ৫ আগস্টের পর যেসব দলের জন্ম হয়েছে, শুধু সেসব দলই নির্বাচন চায় না।’
অন্তর্বর্তী সরকার ও জনগণের মধ্যে কোনো যোগসূত্র নেই মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, এ জন্য যার যা ইচ্ছা, সে করছে। আরও করবে, আরও ক্ষতি হবে। এটা চলতে পারে না।
আমীর খসরু বলেন, এখান থেকে মুক্ত হওয়ার পথ একটাই—একটা নির্বাচিত সংসদ, যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে, জবাবদিহি থাকবে। এ সময় শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্রের উত্তরণ ও ক্ষমতা হস্তান্তরের পথ সুগম করার কথা এক সুরে এ দাবি অন্তর্বর্তী সরকারকে জানিয়ে দিতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পরে অনেক বড় পরিবর্তন এসেছে। এটা যে রাজনীতিবিদ, যে রাজনৈতিক দল অনুধাবন করতে পারবে না, বাংলাদেশে তাদের ভবিষ্যৎ নেই।
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ফ্যাসিস্ট আমলের পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, এমন অনুরোধ জানিয়ে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে আমীর খসরু বলেন, বিরোধী দলে থাকার সময় নেতা-কর্মীরা যেভাবে একটা স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিতাড়িত করে নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে যুদ্ধ করেছেন, সেটা যেন বিএনপি ক্ষমতায় গেলেও সমুন্নত রাখেন।
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রতিটি রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে জনগণকে সম্পৃক্ত করেছেন উল্লেখ করে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে আমীর খসরু আরও বলেন, দেশের মানুষ, নতুন প্রজন্ম ভবিষ্যৎ দেখতে চায়। তাদের স্বপ্ন দেখাতে হবে, তা বাস্তবায়ন করে দেখাতে হবে। জনগণের আস্থা অর্জন করত হবে।
জিয়া পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক আবদুল হাই শিকদার।