নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক বদিউর রহমান। মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক বদিউর রহমান বলেন, বর্তমানে উদীচীর কোনো বৈধ পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় সংসদ নেই। তিনি কেন্দ্রীয় সংসদের এই অচলাবস্থা নিরসনের জন্য আগামী ২০ জুন শুক্রবার সকাল ১০টায় ঢাকায় ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (আইডিইবি) সোশ্যাল গার্ডেন মিলনায়তনে উদীচীর ২৩তম জাতীয় সম্মেলনের ‘অসমাপ্ত ও অসম্পূর্ণ নির্বাচনী অধিবেশন’ আহ্বান করেছেন।

মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে বদিউর রহমান এই ঘোষণা দেন। তাঁর এই ঘোষণার পর উদীচীর দুই পক্ষের কর্মীদের মধ্যে তুমুল বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে হট্টগোল সৃষ্টি হলে আয়োজকেরা সংবাদ সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত বক্তব্যে বদিউর রহমান বলেন, ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত উদীচী দেশের অন্যতম বৃহৎ সাংস্কৃতিক সংগঠন। অতীতে অনেক চড়াই–উতরাই পেরিয়ে এসেছে। চলতি বছর গত ৬ থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি সংগঠনের তিন দিনব্যাপী ২৩তম জাতীয় সম্মেলনের তৃতীয় তথা সমাপনী দিনে নির্বাচনী অধিবেশনে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। অনভিপ্রেত ওই ঘটনায় সম্মেলনের কাজ অসমাপ্ত ও অসম্পূর্ণ থেকে যায়। একপর্যায়ে  ‘বিষয় নির্বাচনী কমিটি প্রস্তাবিত প্যানেল’ পাস হয়েছে বলে ঘোষণা করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁরা কয়েকজনকে নিয়ে ‘শপথ’ নেন। পরে কিছু বিক্ষুব্ধ প্রতিনিধি সম্মেলন কক্ষের বাইরে আরেকটি খণ্ডিত প্যানেল ঘোষণা করে শপথ পাঠ করেন, যা বিধিবহির্ভূত।

অধ্যাপক বদিউর রহমান বলেন, এই উভয় প্যানেলে সভাপতি পদে তাঁর নাম থাকলেও কোনো শপথ অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত থাকেননি। এক প্রশ্নের জবাবে বদিউর রহমান বলেন, এ কারণে তিনি উদীচীর কোনো কমিটিরই সভাপতি নন। এই বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ সন্ধানে তিনি জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুতি পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে উদীচীর বিভিন্ন পর্যায়ের বর্তমান ও সাবেক নেতৃবৃন্দ, প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক, ছাত্র যুবনেতাদের সঙ্গে আলাপ–আলোচনা করে অসমাপ্ত জাতীয় সম্মেলনের অসমাপ্ত নির্বাচনী অধিবেশন আহ্বানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি এই অধিবেশনে সংগঠনের গঠনতন্ত্র মোতাবেক গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কেন্দ্রীয় সংসদ নির্বাচনের আহ্বান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উদীচীর সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম সিদ্দিক বলেন, উদীচীর মতো একটি ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠনের সম্মেলন নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে যে আলোচনা–সমালোচনা চলছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। পরিস্থিতি যা–ই হোক, উত্তরণের পথ খুঁজতে হবে। সবাই মিলেমিশে একত্রে থাকাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কার কী ভুল, কার কোথায় সত্যতা তা না খুঁজে সবাই মিলে এই সংকট কাটাতে হবে।

এই দুই বক্তার বক্তব্য শেষে প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু হলে উদীচীর কর্মীরা পক্ষে বিপক্ষে একের পর এক বিভিন্ন প্রশ্ন তুলতে থাকেন। একটি পক্ষ বদিউর রহমানের ২০ জুন অধিবেশন আহ্বানের এখতিয়ার নেই বলে দাবি করেন। একপর্যায়ে তুমুল হট্টগোল শুরু হলে সংবাদ সম্মেলন সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।