প্রতিনিধি খুলনা

কুয়েটে সংঘর্ষের দুই মাস পূর্তিতে ‘শোকের গ্রাফিতির এক দফার ডাক’ শিরোনামে দেয়ালে দেয়াল গ্রাফিতি আঁকা কর্মসূচি করেন শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার কুয়েট ক্যাম্পাসে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) দেয়ালে দেয়ালে আঁকা গ্রাফিতিতে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ শুক্রবার বিকেলে ‘শোকের গ্রাফিতি এক দফার ডাক’ শিরোনামে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

কর্মসূচির অংশ হিসেবে ক্যাম্পাসজুড়ে নানা ধরনের গ্রাফিতি ও দেয়াললিখন করা হয়। এতে উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবি, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলার নিন্দা, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধসহ বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করা হয়।

কুয়েটে দেয়ালে দেয়ালে আঁকা গ্রাফিতিতে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি জানানো হয়। খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ১৮ এপ্রিল | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

কুয়েটে সংঘর্ষের দুই মাস পূর্তিতে এসব দেয়াললিখন ও গ্রাফিতিতে ‘বাহ ভিসি চমৎকার সন্ত্রাসীদের পাহারাদার’, ‘স্টেপডাউন মাসুদ’, ‘নাটক কম কর ভিসি’, ‘ভিসি গদি ছাড়’, ‘ছাত্ররাজনীতি চলবে না’, ‘১৮ ফেব্রুয়ারি ব্ল্যাক ডে অব কুয়েট’, ‘এখানে সমস্ত ক্ষমতাধর নিজেরে ভাবিছে ঈশ্বর’, ‘দালালকে না বলুন’—এসব স্লোগান লিখতে দেখা গেছে। এর আগে গত মঙ্গলবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে কুয়েট স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবির ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

হল খুলে দেওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীরা গত রোববার প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। সোমবার রাতে শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় দিনের মতো প্রশাসনিক ভবনের সামনে খোলা আকাশের নিচে রাত যাপন করেন। শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচির মধ্যেই সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে ২ মে থেকে সব আবাসিক হল খুলে দেওয়া ও ৪ মে থেকে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুরে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা দেন। এরপর ছেলেদের ছয়টি হলের তালা ভেঙে তাঁরা ভেতরে প্রবেশ করেন। বুধবার দুপুরে উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের মিছিলের পরপরই উপাচার্যের পদত্যাগের দাবির বিপক্ষে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক দফার পক্ষে ক্যাম্পাসে মশালমিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে কর্মচারী সমিতির উদ্যোগে উপাচার্যের সমর্থনে মানববন্ধন করা হয়।