[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

সিদ্ধিরগঞ্জে স্ত্রী-সন্তানসহ ৩ জনকে হত্যার অভিযোগ, ঈদের পরদিনই খুন

প্রকাশঃ
অ+ অ-

প্রতিনিধি নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জের পুকুরপাড় এলাকা থেকে বস্তাবন্দী তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে স্ত্রী-সন্তানসহ তিনজনের লাশ উদ্ধারের পরের দিন পাশের পুকুর থেকে রক্তমাখা কাপড় উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার বিকেলে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় কাপড়গুলো উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ঈদের পরদিন গত মঙ্গলবার রাতে ওই তিনজনকে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বঁটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের পশ্চিম মিজমিজি পুকুরপাড় এলাকার স্বপ্না আক্তার (৩৫) ও তাঁর বোন লামিয়া আক্তার (২৩) এবং লামিয়ার ৪ বছর বয়সী শিশুসন্তান আব্দুল্লাহ রাফসান। শুক্রবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া পুকুরপাড় এলাকা থেকে মাটি চাপা দেওয়া বস্তাবন্দী এক শিশুসহ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় লামিয়া আক্তারের স্বামী ইয়াসিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পুলিশের ভাষ্য, লামিয়াকে গলা কেটে হত্যা, লামিয়ার বড় বোন স্বপ্না আক্তারকে গলা ও হাত-পা কেটে হত্যার পর বস্তাবন্দী করে এবং লামিয়ার চার বছর বয়সী ছেলে আব্দুল্লাহ রাফসানের হত্যার পর মরদেহ মাটিতে পুঁতে রাখা হয়। এ ঘটনায় লামিয়ার মেজ বোন মুনমুন আক্তার বাদী হয়ে ইয়াছিন (২৪), ইয়াছিনের বাবা দুলাল মিয়া (৫০) ও বোন শিমুকে (২৭) আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে ইয়াছিন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাঁর দেওয়া তথ্যানুযায়ী পুকুর থেকে নিহতদের রক্তমাখা জামাকাপড় উদ্ধার করা হয়েছে।

ইয়াছিনকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) মো. হাসিনুজ্জামান জানান, ২৭তম রোজায় মাদকের টাকার জন্য উচ্ছৃঙ্খলতা ও ভাঙচুরের অভিযোগে সৎমায়ের করা মামলায় ইয়াছিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠান। ঈদের আগের দিন কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে ইয়াছিন সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজিতে স্ত্রী লামিয়ার ভাড়াবাড়িতে থাকতে যান। মাদকাসক্ত ও কর্মক্ষম না থাকায় লামিয়া ও তাঁর বড় বোন স্বপ্না আক্তার ইয়াছিনকে দেখতে পারতেন না। বাসায় থাকা নিয়ে স্ত্রী লামিয়ার সঙ্গে ইয়াছিনের ঝগড়া হয়।

মো. হাসিনুজ্জামান আরও জানান, ঈদের পরদিন মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে স্ত্রী লামিয়ার সঙ্গে ইয়াছিনের ঝগড়া হয়। ঝগড়ার এক পর্যায়ে লামিয়ার বড় বোন মানসিক ভারসাম্যহীন স্বপ্না আক্তার বঁটি নিয়ে এসে ইয়াছিনকে মারতে উদ্যত হন। এ সময় ইয়াছিন বঁটি কেড়ে নিয়ে স্ত্রী লামিয়ার ঘাড়ে কোপ দেন। এতে লামিয়ার গলা দ্বিখণ্ডিত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। লামিয়ার বড় বোন স্বপ্না আক্তার চিৎকার–চেঁচামেচি শুরু করলে তাঁকেও বঁটি দিয়ে কোপে গলা কেটে ফেলেন। পরে চার বছরের সন্তান আব্দুল্লাহকে গলায় থাকা তাবিজের সুতা পেঁচিয়ে ধরে শ্বাসরোধে হত্যা করেন বাবা ইয়াছিন। ওই দিন রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে তিনজনকে হত্যা করা হয়।

ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, হত্যার পর স্ত্রী লামিয়া আক্তার ও বড় বোন স্বপ্না আক্তারের মরদেহের টুকরা কম্বল ও কাঁথা পেঁচিয়ে এবং শিশু আব্দুল্লাহর মরদেহসহ বস্তাবন্দী করে ভাড়াবাড়ির সামনে মাটি চাপা দেন ইয়াছিন। মঙ্গলবার সারা রাত মরদেহগুলো গুম করেন তিনি। নিহতদের রক্তমাখা জামাকাপড় ও ধারালো বঁটি বাসা থেকে প্রায় ১০০ গজ দূরে পুকুরে নিয়ে ফেলে দেন। তিনজনকে হত্যার পর ইয়াছিন ওই বাড়িতে থেকেছেন। মরদেহ মাটি পুঁতে রাখা জায়গায় তিনি ঘোরাফেরাও করেছেন।

পুলিশ কর্মকর্তা হাসিনুজ্জামান আরও জানান, তিনজনকে হত্যার এই কর্মযজ্ঞে ইয়াছিনের সঙ্গে আরও কেউ ছিল কি না, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনসহ ইয়াছিনকে আজ বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে তোলা হয়। বিচারক পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। তাঁকে রিমান্ডে নিয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন