[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

ভ্যাট বাড়ানোয় ১০ টাকার বিস্কুট ১৩ টাকা, ২০ টাকার জুস ২৫ টাকা হবে

প্রকাশঃ
অ+ অ-

বিশেষ প্রতিবেদক

‘শুল্ক ও ভ্যাট বাড়ানোর ফলে ৫ টাকার বিস্কুট ৭ টাকা, ১০ টাকার বিস্কুট ১৩ টাকা, ২০ টাকার জুস ২৫ টাকা, আর ২৫ টাকার জুস ৩৩ টাকা হবে’। এভাবেই মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কার কথা সাংবাদিকদের জানান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী। তিনি জানান, ভ্যাট বাড়লেও তাঁরা এখনো এসব পণ্যের দাম বাড়াননি। তবে বিস্কুট ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক-কর প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের সঙ্গে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প এবং বিস্কুট প্রস্তুতকারকদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ বক্তব্য তুলে ধরেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী। সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান ভ্যাট কমানোর বিষয়টি ইতিবাচকভাবে পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দেন। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এনবিআর ভবনে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

৯ জানুয়ারি শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়। সেখানে মেশিনে উৎপাদিত বিস্কুট, কেক, আচার, চাটনি, টমেটো পেস্ট, টমেটো কেচাপ ও সস, আম, আনারস, পেয়ারা ও কলার পাল্প ইত্যাদি পণ্যের ওপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়। এ ছাড়া ফলের রস ও ফ্রুট ড্রিংকসের ওপর সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। এ ছাড়া আর্টিফিশিয়াল বা ফ্লেভারড ড্রিংকস ও ইলেকট্রোলাইট ড্রিংকসের (নন-কার্বোনেট) ওপর নতুন করে ১৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বসানো হয়।

আহসান খান চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, শুল্ক-কর বাড়ানোর ফলে ভোক্তা ও কৃষকের ওপর কী ধরনের প্রভাব পড়বে, অর্থনীতিতে এর প্রভাব কেমন হবে—এসব বিষয়ে বৈঠকে বোঝানো হয়েছে। ভারত–পাকিস্তানসহ আশপাশের দেশগুলোয় এসব পণ্যে কী ধরনের ভ্যাট বসে, তা–ও দেখানো হয়েছে। এসব শুনে এনবিআর চেয়ারম্যান ত্বরিত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, ভোক্তাদের ওপর জুলুম করবেন না। তাঁদের ওপর চাপ কমান। তিনি জানান, এনবিআর চেয়ারম্যান তাঁদের আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।

বাংলাদেশ অ্যাগ্রো-প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাড়তি শুল্ক-কর প্রত্যাহার করা না হলে কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার কথাও এনবিআর প্রধানকে জানানো হয়েছে।

বৈঠকে ব্যবসায়ীরা বলেন, করোনা ও রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর দেশে বিরাজমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ঋণের উচ্চ সুদহার, ঋণপত্রে (এলসি) জটিলতা, ডলারের বাজারের অস্থিরতা এবং সাম্প্রতিক সময়ে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে যখন ব্যবসায়ীদের কঠিন অবস্থা সামাল দিতে হচ্ছে, তখন ভ্যাট বৃদ্ধি মোটেও বাস্তবসম্মত নয়। এ ছাড়া উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে এমনিতেই মানুষ কষ্টে আছেন। তাঁরা পণ্য কেনা কমিয়েছেন। তাই শুল্ক-কর বৃদ্ধির উদ্যোগ ব্যবসায়ীদের আতঙ্কিত করেছে।

ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের ওপর করের বোঝা চাপানো হলে দেশের শ্রমজীবী, প্রান্তিক কৃষক ও নিম্ন আয়ের মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। শুল্ক-কর বেশি হলে দেশে আর ৫ টাকা ও ১০ টাকা দামের পণ্য তৈরি করা সম্ভব হবে না। তাঁরা জানান, এ খাতে ৮০ শতাংশ পণ্যের দাম ২০ টাকার কম, যা নিম্ন আয়ের মানুষ, মধ্যবিত্ত ও শ্রমজীবীরা বেশি কেনেন।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, পারটেক্স স্টার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিজ আল মাহমুদ, বাপার সভাপতি এম এ হাশেম, এসএমসি এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফ উদ্দিন নাসির, রানী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের এমডি মোহাম্মদ বশির, আকিজ ফুডস অ্যান্ড বেভারেজের পরিচালক সৈয়দ জহুরুল আলম, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা পারভেজ সাইফুল ইসলাম, এসিআই ফুড অ্যান্ড কমোডিটি ব্র্যান্ডসের চিফ বিজনেস অফিসার ও বাপার জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ অটো বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভূঁইয়া প্রমুখ।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন