[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

ঈশ্বরদী ইউএনও বদলির আদেশ স্থগিত, বিতর্ক

প্রকাশঃ
অ+ অ-

প্রতিনিধি ঈশ্বরদী

সুবীর কুমার দাশ | ফাইল ছবি

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবীর কুমার দাসের বিরুদ্ধে বদলির আদেশ স্থগিত করানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও নীতিমালার প্রতি জনগণের আস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে রাজশাহী অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) তরফদার মো. আক্তার জামিল স্বাক্ষরিত এক আদেশে সুবীর কুমার দাসকে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় পদায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে, এই আদেশ পাওয়ার পর তিনি প্রভাবশালী এক রাজনৈতিক নেতার মাধ্যমে তদবির করে আদেশটি স্থগিত করাতে সক্ষম হন বলে অভিযোগ উঠেছে।

অন্যদিকে, রোববার বিকেলে ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদে নতুন ইউএনও শাহরুখ খান দায়িত্বভার বুঝে নিতে আসেন। বিদায়ী ইউএনও সুবীর কুমার দাসের ছাড়পত্র নিশ্চিত না হওয়ায় তিনি ঈশ্বরদী ছেড়ে পাবনায় চলে যান। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। তবে, সোমবার বিকেলে একটি নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে শাহরুখ খানকে দুপচাঁচিয়া যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ওইদিন বিকেলে ইউএনও সুবীর কুমার দাসের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজনেরও কথা ছিল। এতে উপজেলার বিভিন্ন কার্যালয়ের কর্মকর্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান, প্রেসক্লাবের কর্মকর্তা, সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ ফুল ও উপঢৌকন নিয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরে জড়ো হন। কিন্তু বদলির আদেশ 'আপাতত' স্থগিত হওয়ার খবরে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ফিকে হয়ে যায়। অংশগ্রহণকারীরা শুধু সৌজন্য সাক্ষাৎ করেই বিদায় নেন।

৩৫তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মকর্তা সুবীর কুমার দাস ২০২৩ সালের ৫ জুন ঈশ্বরদীতে যোগদান করেন। তবে, তার বিরুদ্ধে একাধিক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে, যার মধ্যে পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে সহায়তা, বিজয় দিবস উপলক্ষে ইটভাটার মালিকদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায়, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের চেক বিতরণে ঘুষ নেওয়া, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচন কেন্দ্র করে প্রার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় এবং পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও সম্প্রতি ঈশ্বরদী বাজারে একটি উচ্ছেদ অভিযানে গিয়ে সংখ্যালঘু এক দোকানির খাদ্য ফেলে দেওয়া এবং তার সাথে দুর্ব্যবহার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করেছে।

এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ একে প্রশাসনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার ব্যাঘাত হিসেবে দেখছেন, আবার অনেকে বলছেন, এটি রাজনৈতিক প্রভাবের নেতিবাচক দৃষ্টান্ত।

মানবাধিকার সংগঠনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, 'সরকারি কর্মকর্তাদের বদলি একটি স্বাভাবিক প্রশাসনিক প্রক্রিয়া। তবে তদবিরের মাধ্যমে এমন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন প্রশাসনের স্বচ্ছতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।'

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রশাসনিক দুর্বলতা ও রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে নানা আলোচনা চলছে।

এ বিষয়ে ইউএনও সুবীর কুমার দাস বলেন, 'তিনি নতুন কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত, তবে পাবনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ছাড়পত্র না পাওয়ায় আপাতত দু-এক দিন অপেক্ষা করতে হবে।'
Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন