আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলার নিন্দা উদীচীর
নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
![]() |
বাংলাদেশ উদীচীর লোগো |
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক টানাপোড়েন, আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা এবং দুই দেশে সাম্প্রদায়িক উসকানির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে যেকোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক উসকানি সম্পর্কে সর্বোচ্চ সংযম এবং সতর্ক থাকার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
বুধবার উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে উদীচীর নেতারা বলেছেন, ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশে অমুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর ধারাবাহিক হামলা ও নির্যাতনের অভিযোগ করে আসছে ভারত। শুধু তা–ই নয়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অতিরঞ্জিত এবং মিথ্যা তথ্য দিয়ে বানোয়াট সংবাদ পরিবেশন করছে ভারতের কোনো কোনো গণমাধ্যম।...কিছুদিন আগে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরপর পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। সবচেয়ে নিন্দাজনক ঘটনা ঘটে যখন ত্রিপুরার আগরতলায় উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের কিছু নেতা-কর্মী বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা-ভাঙচুর করে এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা পুড়িয়ে দেয়। একই সঙ্গে কলকাতা ও মুম্বাইয়ে বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের সামনেও বিক্ষোভ হয়।’
উদীচী মনে করে, এসব ধারাবাহিক ঘটনা বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। এর পেছনে দুই দেশের সাম্প্রদায়িক, স্বার্থান্বেষী ও মৌলবাদী গোষ্ঠীর ইন্ধন আছে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতাসীন সাম্প্রদায়িক দল বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের নেতা শুভেন্দু অধিকারী চরম উসকানিমূলক মন্তব্য করে যাচ্ছেন, যা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর। শুধু তা–ই নয়, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর যে আহ্বান জানিয়েছেন, তা নিঃসন্দেহে নিন্দনীয়।...এতে করে তাঁদের রাজনৈতিক সুবিধা হলেও সার্বিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দুই দেশের মানুষ। বিভ্রান্ত হচ্ছেন দুই দেশের তরুণ প্রজন্ম।
এই পরিস্থিতিতে সব ধরনের ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং
দুই দেশের জনগণের ঐতিহ্যবাহী সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক অটুট রাখার আহ্বান
জানিয়েছে উদীচী। তাদের আহ্বান, দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে
বাংলাদেশ ও ভারত সরকারকে দ্রুত যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে। একই সঙ্গে দুই দেশের
জনগণের মধ্যে সরাসরি সংযোগ স্থাপন এবং সম্পর্ক উন্নয়নে ভারত ও বাংলাদেশের
কাছাকাছি চিন্তাচেতনার মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন