[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

বিশ্বজুড়ে প্রবাসী আয় ৬৫০ শতাংশ বেড়েছে

প্রকাশঃ
অ+ অ-

প্রবাসী আয়

কূটনৈতিক প্রতিবেদক: বিশ্বজুড়ে প্রায় দুই দশকে প্রবাসী আয় বিপুল হারে বেড়েছে। ২০০০ সালে বৈশ্বিক প্রবাসী আয় ছিল ১২৮ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২২ সালে বেড়ে হয়েছে ৮৩১ বিলিয়ন। এই সময়ে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৬৫০ শতাংশ।

মঙ্গলবার দুপুরে প্রকাশিত বিশ্ব অভিবাসন প্রতিবেদন থেকে এই হিসাব পাওয়া গেছে। রাজধানীর একটি হোটেলে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে।

আইওএমের বার্ষিক প্রতিবেদনে বৈশ্বিক অভিবাসনের গতিধারায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন, রেকর্ডসংখ্যক মানুষের বাস্তুচ্যুতি ও বৈশ্বিক পরিসরে প্রবাসী আয়ের ঊর্ধ্বগতির মতো বিষয়গুলো উঠে এসেছে।

প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে আইওএমের মহাপরিচালক অ্যামি পোপ বলেন, আন্তর্জাতিক অভিবাসন এখনো মানব উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চালক হিসেবে ভূমিকা রাখছে, সেই বিষয়টি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। ২০২২ সালে প্রবাসী আয় ছিল ৮৩১ বিলিয়ন ডলার। এই আয়ের মধ্যে নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশের প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ৬৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ প্রবাসী আয় এসব দেশের এবং বৈশ্বিক গড় প্রবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। এসব দেশের প্রবাসী আয় বৈদেশিক উন্নয়ন সহায়তা ও বৈদেশিক বিনিয়োগের চেয়ে অনেক বেশি বলে জানান তিনি।

আইওএমের মহাপরিচালক বলেন, অনেক বিশ্লেষক আশঙ্কা করেছিলেন করোনা মহামারির কারণে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ কমে যাবে। কিন্তু মহামারির পরও প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি অব্যাহত ছিল।

প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে গিয়ে অ্যামি পোপ বলেন, ২০২০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী প্রায় ২৮ কোটি ১০ লাখ অভিবাসী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে পুরুষ ও নারীর সংখ্যা যথাক্রমে ১৪ কোটি ৬০ লাখ ও ১৩ কোটি ৫০ লাখ। আর শিশু অভিবাসীর সংখ্যা ২ কোটি ৮০ লাখ। ২০১৯ সালের হিসাব অনুযায়ী শ্রম অভিবাসীর সংখ্যা ১৬ কোটি ৯০ লাখ।

আইওএমের মহাপরিচালক আরও জানান, সংঘাত, সহিংসতা, দুর্যোগসহ নানা কারণে বাস্তুচ্যুতির সংখ্যা ১১ কোটি ৭০ লাখ। তাঁদের মধ্যে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত ৭ কোটি ১২ লাখ, শরণার্থী ৩ কোটি ৫৩ লাখ। এই সংখ্যা অতীতের সব সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে। বাস্তুচ্যুতির এ সংকটকে এখনই মোকাবিলা করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ২০০০ সাল থেকে দ্বিবার্ষিকভাবে প্রকাশ হয়ে আসা এই আন্তর্জাতিক প্রতিবেদন এবার প্রথম তাদের সদর দপ্তর সুইজারল্যান্ডের জেনেভার বাইরে বাংলাদেশের রাজধানীতে আয়োজিত হলো।

বৈশ্বিক অভিবাসন প্রতিবেদনটি ঢাকা থেকে প্রকাশ প্রসঙ্গে অ্যামি পোপ বলেন, এটি বাংলাদেশে প্রকাশের মাধ্যমে শুধু ঝুঁকিতে থাকা অভিবাসী ও অভিবাসন খাতকে এগিয়ে নিতে শুধু বাংলাদেশের প্রচেষ্টাই নয়, পাশাপাশি বৈশ্বিক অভিবাসন প্রক্রিয়ার বিষয়ে আলোচনায় বাংলাদেশের অবস্থা ও নীতির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিচ্ছে আইওএম।

অ্যামি পোপ বলেন, অভিবাসন সমস্যা মোকাবিলা করা এবং অভিবাসীদের অধিকার রক্ষা নীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে নিরাপদ, নিয়মতান্ত্রিক এবং নিয়মিত অভিবাসন নিয়ে গ্লোবাল কমপ্যাক্ট-এর চ্যাম্পিয়ন দেশ হিসেবে বাংলাদেশ তার জোরালো অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। আর বাংলাদেশের এ সক্রিয় ভূমিকা আইওএমের কৌশলগত লক্ষ্যের সঙ্গে একই ধারায় রয়েছে। ফলে বাংলাদেশকে ২০২৪ সালের অভিবাসন প্রতিবেদন প্রকাশের আদর্শিক স্থান হিসেবে বেছে নেওয়ার কারণ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। বার্ষিক এই প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য বাংলাদেশকে নির্বাচন করায় আইওএমকে ধন্যবাদ জানান তিনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকে তাঁদের নিজ দেশে দ্রুততম সময়ে প্রত্যাবাসন এক বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কক্সবাজারে তাদের আশ্রয় এলাকা মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান এবং জঙ্গিবাদের ‘ব্রিডিং গ্রাউন্ড’ হিসেবে ব্যবহার শুধু দেশেরই নয় আন্তর্জাতিক সংকটে রূপ নিচ্ছে।

বাংলাদেশে আসা আইওএম মহাপরিচালককে রোহিঙ্গা শিবির ক্যাম্প পরিদর্শনের জন্য ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে বিশ্বের অন্যান্য দেশের পাশাপাশি আইওএম বড় ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।  

সাবেক পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আইওএমের এ দেশীয় প্রতিনিধি আব্দুস সাত্তার ইসোব, ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি, ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নারডিয়া সিম্পসন প্রমুখ।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন