[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

নারীদের সুতির পোশাকে বেশি ঝোঁক

প্রকাশঃ
অ+ অ-

ঈদ উপলক্ষে পছন্দের পোশাক দেখছেন ক্রেতারা। ধানমন্ডির ২৭ নম্বরে নবরূপার শোরুমে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক: মৌসুমী ইসলাম অপেক্ষা করছিলেন ঈদের বাজারে ভিড় কমার জন্য। তাই রোজার একদম শেষ দিকে এসে গতকাল শনিবার দুপুরে কেনাকাটার জন্য বের হন তিনি। সুতির মধ্যে হালকা কিছু কাজের পোশাকই তিনি সব সময় পরেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না।

বেসরকারি চাকুরে মৌসুমী থাকেন মোহাম্মদপুরে। গতকাল দুপুরে তিনি পোশাকের ব্র্যান্ড নবরূপার মিরপুর রোডের শাখায় যান। স্বজনদের জন্য শাড়ি কেনা শেষ হলে তিনি হালকা সবুজ ও সাদা রঙের একটি সালোয়ার–কামিজ কেনেন নিজের জন্য। তবে মেয়ে মুহতারিম ইসলাম ভারী কাজের আনারকলি কিনতে চায়। কিন্তু মৌসুমী ইসলাম বলেন, শখ করে কিনবে ঠিকই, কিন্তু পরে আর তা দুই বা তিনবারের বেশি পরবে না। আর এবার দামও বেশি।

ঈদের আনন্দ বাড়িয়ে তুলতে এ সময় মানুষ জাঁকজমকপূর্ণ, রঙিন ও নানা ঢঙের পোশাক কিনে থাকে। কিন্তু অনেক বছর ধরেই গরমের মধ্যে ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আবহাওয়া অফিসও বলেছে, বর্তমানে যে তাপপ্রবাহ চলছে, তা ঈদের সময়টাতেও থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে গরম মাথায় রাখলেও উৎসবের পোশাকই খুঁজছেন ক্রেতা। চোখের আরাম ও সুতির মধ্যে উৎসব ভাব আছে, এমন পোশাকে ক্রেতাদের ঝোঁক। এর বাইরে সিল্ক, মসলিন, জর্জেট, শিফনের পোশাকও মানুষ পছন্দ করছেন।

ধানমন্ডি–মিরপুর রোডের বিভিন্ন পোশাকের ব্র্যান্ড ও শপিং মল ঘুরে মেয়েদের ঈদপোশাকের ধারাটির একটি চিত্র পাওয়া গেল।

মিরপুর রোডের সপ্তক স্কয়ারের ভারমিলিয়নের শাখায় দেখা গেল বেশ রঙিন পোশাক। তাদের মিক্সড কটনের পোশাকগুলোর চাহিদা বেশি ছিল বলে জানা গেল।

ধানমন্ডির সীমান্ত স্কয়ারের সায়মা ফ্যাশনে সালোয়ার–কামিজ দেখছিলেন শাহানা খাতুন। পাঁচটি সুতির পোশাক নিয়েছেন। এবার মসলিনের একটি কামিজ দেখছেন মেয়েকে উপহার দেবেন বলে। বাকিগুলোও উপহারের জন্য। শাহানা বলেন, ‘স্বজনদের সব সময়ই গর্জিয়াস কিছু দেওয়ার চেষ্টা করি। এবার সুতির বাইরে অন্য কোনো ফেব্রিকের অনেক দাম। তাই সুতির মধ্যেই সুন্দর প্রিন্ট ও ডিজাইনের কিছু কিনলাম।’

এই ক্রেতা বলেন, দুই বছর ধরেই পোশাকের দাম অনেক বেড়েছে। গতবারও যে পোশাক দুই থেকে আড়াই হাজারে কিনতে পেরেছেন, তা এবার প্রায় তিন হাজার বা তার বেশি দিয়ে নিতে হচ্ছে। মোটামুটি মানের একটি সিঙ্গেল পোশাকেরই দাম প্রায় তিন হাজার টাকা।

সীমান্ত স্কয়ারের ওই একই দোকানে আরেক ক্রেতা এসে শুরুতেই জেনে নিলেন পোশাকের দাম কত থেকে শুরু। কারণ, দামটা সব সময় গুরুত্বপূর্ণ। শেষে পছন্দের পর দামে না মিললে মন খারাপ হয়।

বুটিক হাউস দেশালের ভাইস চেয়ারম্যান ইশরাত জাহান বলেন, দেশালে এবার কামিজ ও সালোয়ার একই রঙের করা হয়েছে, সঙ্গে অন্য রঙের মানানসই ওড়না। গলায় হালকা কাজ, তবে হাতায় বেশ কারুকাজ রাখা হয়েছে। ডিজিটাল প্রিন্টের কাজ রয়েছে। তাঁরা কালো, ধূসর, নীল রংকে প্রাধান্য দিয়েছেন। পাশাপাশি প্যাস্টেল রংও থাকছে উৎসব মাথায় রেখে।

দামের প্রসঙ্গে ইশরাত জাহান বলেন, বিদ্যুৎ, তেল, গ্যাসের বাড়তি দামের প্রভাব পোশাক তৈরির ক্ষেত্রেও পড়ে। তারপরও দাম ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যে রাখার চেষ্টা করা হয়।

দাম বেড়ে যাওয়ার কথা শোনা গেল বেশ কয়েকজন ক্রেতার মুখেই। যেখানে দামের কারণে বাজেটেও কাটছাঁট করতে হচ্ছে কাউকে কাউকে। বিক্রয়কর্মীরাও জানান, মেয়েদের পোশাকের ক্ষেত্রে বাজেট বেশির ভাগ ক্রেতা পাঁচ হাজারের মধ্যেই সীমিত রাখছেন।

মেয়েদের পোশাকের ক্ষেত্রে এবার এক রঙার চেয়ে নানান প্রিন্ট, মোটিফ ও হালকা হাতের কাজের প্রাধান্য দেখা গেল। পোশাকের লম্বায় দৈর্ঘ্যও একটু বেড়েছে এবং ঢিলেঢালা পোশাকই দেখা গেল। এ ছাড়া দুই বছর ধরে একই কাপড়ে সালোয়ার ও কামিজ বা লং–শার্ট ও প্যান্টের চল রয়েছে। এবারও সেটা দেখা গেল। এর সঙ্গে রয়েছে আনারকলি, ফ্রক, সিঙ্গেল কামিজ।

ফ্যাশন ব্র্যান্ড সেইলর জানিয়েছে, মরোক্কান আর্ট, ক্যালিগ্রাফি, জিওমেট্রিক, ফ্লোরালসহ সমসাময়িক বিভিন্ন মোটিফের ডিজাইন তারা এনেছে। নকশায় আরাম ও আবহাওয়াকে মাথায় রাখা হয়েছে।

পরিবারের সবার মিলিয়ে পোশাক পরার জন্যও বেশ কিছু কালেকশন আছে। ক্রেতারাও কেউ কেউ তা খুঁজছেন। দুই বছরের কন্যাকে নিয়ে কেনাকাটা করতে সীমান্ত সম্ভারে ঘুরছিলেন আয়েশা আহমেদ। কেনাকাটা প্রায় সবই শেষ করেছেন। মেয়ে যেহেতু কিছুটা বড় হয়েছে, ছোটাছুটি করতে পারছে, তাই স্বামীসহ তিনজনের জন্য একই রকম পোশাক কেনার ইচ্ছার কথা জানালেন তিনি।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন