[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

২০২৩ সালের আলোচিত ত্বকচর্চার ৪ ট্রেন্ড

প্রকাশঃ
অ+ অ-

ফ্যাশন ও মেকআপের মতো প্রতিবছর ত্বকের যত্নের নতুন নতুন ট্রেন্ড আসে। এ বছর মাত্র ৪টি ধারা অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়েছে। মডেল: নুসরাত জাহান ইয়াম | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

ফাহমিদা শিকদার: মাত্র কয়েক বছরে ত্বকের যত্নের ট্রেন্ডে এসেছে আমূল পরিবর্তন। এখন আর কেউ আগের মতো কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ করে ত্বকচর্চার পণ্যে ড্রেসিং টেবিল বা বাথরুম ক্যাবিনেট ভরিয়ে ফেলছেন না। স্কিনকেয়ার রুটিন আগের থেকে অনেক মিনিমাল, কিন্তু কার্যকর হয়েছে। এ ছাড়া মানুষ রেটিনল ব্যবহারে আগ্রহী হয়েছেন। অন্যদিকে মেয়েরা মুখের ত্বকের যত্নে শেভ করা শুরু করেছেন। এগুলো ২০২৩ সালে সবচেয়ে আলোচিত ত্বকচর্চার ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে।

স্কিনিমালিজম

সৌন্দর্য-বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সত্যি করে এবারও স্কিনকেয়ার ট্রেন্ডের শীর্ষে স্কিনিমালিজম। স্কিনিমালিজমের ধারণাটি কিন্তু বেশ সহজ। আর তা হলো, খুব অল্প কিন্তু কার্যকর ত্বকচর্চার পণ্যের সাহায্যে ত্বকের যত্ন নেওয়া এবং অতিরিক্ত মেকআপ ব্যবহার না করে ত্বকের স্বাভাবিক রং ও ধরনে তৃপ্ত থাকা। কোরিয়ান ১০ ধাপের স্কিনকেয়ার রুটিন যখন ট্রেন্ডে ছিল, তখন বেশির ভাগ সৌন্দর্যসচেতন মানুষরা ভাবতেন, যত বেশি পণ্য ব্যবহার করা হবে, ত্বক হয়ে উঠবে তত সুন্দর ও নিখুঁত। স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বকের জন্য এমন বিলাসী, ম্যাক্সিমালিস্ট বিউটি রুটিনের প্রয়োজন নেই। ত্বকের যত্নে কেবল ক্লিনজার, ময়েশ্চারাইজার ও সানস্ক্রিনই যথেষ্ট। অতিরিক্ত শুষ্কতা বা তৈলাক্ত ভাব, অ্যাকনে, রিঙ্কেলের মতো সমস্যা থাকলে অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টসমৃদ্ধ সিরাম লাগানো যেতে পারে। ত্বক অনুযায়ী মাসে দুই-চারবার এক্সফোলিয়েটর ও ফেস মাস্ক ব্যবহার করলেই চলবে। এসবের পাশাপাশি দীপ্তিময়, বলিরেখামুক্ত ত্বকের জন্য কিছু চর্চাও বেশ জনপ্রিয় হয়েছে।   

রেটিনল

রেটিনল বর্তমান সময়ে স্কিনকেয়ার ট্রেন্ডে খুবই আলোচিত। এটি একধরনের ভিটামিন এ-জাতীয় উপাদান, যার গুণের কোনো শেষ নেই। রেটিনল ত্বকের মৃত কোষ, ব্রণ ও হাইপারপিগমেন্টেশন বা দাগছোপ কমাতে পারে। এটি ত্বক বয়সের ছাপ কমাতে দুর্দান্ত কাজ করে। এ ছাড়া এটি ত্বকের কোষের পুনর্গঠনেও বিশেষ ভূমিকা রাখে। ডার্মাটোলজিস্টরা ২০ বছর বয়স থেকেই খুব অল্প ঘনত্বের (০.০১% থেকে ০.০৩%) রেটিনল সিরাম বা ক্রিম ত্বকের যত্নের রুটিনে যোগ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে ব্যবহারে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। যেমন রেটিনল কখনো দিনে নয়, রাতে ব্যবহার করতে হয়। 

কারণ, সূর্যের আলোয় এর কার্যকারিতা কমে যায়। পাশাপাশি এটি ব্যবহারের পর ত্বক সূর্যের আলোর প্রতি সংবেদনশীল হয়ে যায়। যেদিন ত্বক এক্সফোলিয়েট করার কথা, সেদিন কোনোভাবেই রেটিনল ব্যবহার করা যাবে না। এতে ত্বকে খুব বাজে রকমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেবে। ত্বকের যত্নের রুটিনে যদি রেটিনল থাকে, তাহলে অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। এটি ছাড়া রোদে গেলে ত্বকে জ্বালাপোড়া বা লালচেভাব হবে।

স্কিন সাইক্লিং
এ বছরের বহুল আলোচিত ত্বকের যত্নের ট্রেন্ড স্কিন সাইক্লিং। অনেক আগে থেকে ডার্মাটোলজিস্টরা রাতের ত্বকচর্চার এই বিশেষ পদ্ধতি নিয়ে কথা বলে থাকলেও একে জনপ্রিয় করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটক। ত্বককে বিশ্রাম দিয়ে রেটিনলের কার্যকারিতা বাড়ানোই স্কিন সাইক্লিংয়ের মূল লক্ষ্য। পদ্ধতিটি অনেক সহজ। এতে  চার রাতে একটি চক্র। প্রথম রাতে এক্সফোলিয়েশন করতে হয়। তবে এ ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক এক্সফোলিয়েন্ট নয়, ল্যাকটিক অ্যাসিড বা গ্লাইকোলিক অ্যাসিডের মতো রাসায়নিক এক্সফোলিয়েন্টের ওপরই জোর দিতে হবে। কারণ, এরা খুব কোমলভাবে ত্বকের মৃত কোষ দূর করে। দ্বিতীয় রাতে ব্যবহার করা হয় অ্যাকটিভ এজেন্ট রেটিনল। তৃতীয় ও চতুর্থ রাতে ত্বকে কোনো প্রকারের তীব্র উপাদান বা অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট ব্যবহার করা হয় না; বরং একটি হালকা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বককে সার্বিকভাবে সুস্থ হয়ে ওঠার সময় দেওয়া হয়। এ দুটি দিনকে ‘রেস্ট ডে’ বা বিশ্রামের দিন বলা হয়। অন্যান্য স্কিনকেয়ার রুটিনের সঙ্গে স্কিন সাইক্লিংয়ের পার্থক্য এই দুদিনের রেস্ট ডে। যাঁরা এই পদ্ধতি মেনে ত্বকের যত্ন নিয়েছেন, তাঁরা সবাই বেশ উপকার পেয়েছেন। সব ত্বক, বিশেষ করে সংবেদনশীল ত্বকের জন্য স্কিন সাইক্লিং অনেক বেশি কার্যকর একটি পদ্ধতি। 

ডার্মাপ্ল্যান
এত দিন সবার ধারণা ছিল, শেভিং শুধু ছেলেদের জন্য। কিন্তু দুই-তিন বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, মেয়েরাও শেভ করছেন। গত বছর মেয়েদের শেভ করার পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে। এ বছর এটি স্কিনকেয়ার ট্রেন্ডের একেবারে শীর্ষে চলে এসেছে। এর আবার একটা গালভরা নামও দেওয়া হয়েছে। ডার্মাপ্ল্যান। ফিজিক্যাল এক্সফোলিয়েশনের এই বিশেষ পদ্ধতি ত্বকের সবচেয়ে বাইরের স্তরের মৃতকোষ সারাইয়ে কাজ করে। সাধারণত সার্জিক্যাল ব্লেড ব্যবহারে সারা হয় ডার্মাপ্ল্যানিং। সাধারণত ডার্মাটোলজিস্ট বা অ্যাসথেটেশিয়ানদের কাছে গিয়ে এটি করা উচিত। তবে এখন ঘরেই খুব সহজে ডার্মাপ্ল্যান করা যায়। এ জন্য এখন বাজারে বিশেষ রেজর সেট কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। ডার্মাপ্ল্যান করার আগে খুব ভালোভাবে ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। এরপর ফেশিয়াল রেজরের ব্লেড ৪৫ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে ধরতে হবে। তারপর চালাতে হবে ধীর হাতে, সমান চাপ প্রয়োগ করে। তবে এক টানে ব্লেড চালানো যাবে না কোনোভাবেই। ছোট ছোট, ডাউনওয়ার্ড স্ট্রোকে বরং কাজ হবে নিখুঁত। একই জায়গায় বারবার ব্লেড বোলানো যাবে না। এতে ত্বক ক্ষত যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। একটা কথা মনে রাখা দরকার যে ডার্মাপ্ল্যান সব ত্বকের জন্য নয়। যাঁদের ত্বক ব্রণপ্রবণ ও সংবেদনশীল, তাঁদের এটি এড়িয়ে যাওয়া উচিত। 


Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন