[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

হেমন্তের শেষ দিনে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়, জনজীবন বিপর্যস্ত

প্রকাশঃ
অ+ অ-

কনকনে ঠান্ডা বাতাস ও ঘন কুয়াশার মধ্যেই কর্মস্থলে ছুটছেন খেটে খাওয়া মানুষ। শুক্রবার সকালে চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা সড়কের ঘোড়ামারা এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি চুয়াডাঙ্গা: ঋতু পরিক্রমায় আজ হেমন্তের শেষ দিন। কাল থেকে শুরু হচ্ছে পৌষ মাস। শীতকাল শুরুর আগেই টানা পাঁচ দিন ধরে ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীতে চুয়াডাঙ্গায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। হেমন্তের শেষ দিন শুক্রবার চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা আজ সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। আজ সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাটকালুগঞ্জের প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার এ তাপমাত্রা রেকর্ড করে।

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাকিবুল ইসলাম বলেন, গত সোমবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা আগের দিনের তুলনায় ৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম। মঙ্গলবার ১ দশমিক ৩ ডিগ্রি বেড়ে ১৩ দশমিক ৬ ডিগ্রিতে উন্নীত হলেও বুধবার থেকে কমতে থাকে। বুধবার সর্বনিম্ন ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বৃহস্পতিবার ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বশেষ আজ ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। যা চলতি মৌসুমে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকেই বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরেছে। সকাল থেকে ঘন কুয়াশায় দৃষ্টিসীমা কমে আসে। সড়কগুলোতে হেডলাইট জ্বালিয়ে যান চলাচল করতে দেখা যায়। কুয়াশা ভেদ করে সকাল আটটার দিকে সূর্য উঁকি দিলেও সারা দিনে সেভাবে রোদের তীব্রতা ছড়ায়নি। শহরের রাস্তাঘাটে মানুষ চলাচল তুলনামূলক কম ছিল।

এদিকে উত্তরের হিমেল বাতাসের সঙ্গে কুয়াশার দাপটে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। শহরের পুরাতনপাড়ার বাসিন্দা ভ্যানচালক শেলটন সরদার বলেন, শীতের কারণে সকালে ও সন্ধ্যায় মানুষের চলাচল কমে গেছে। তিনি বলেন, ‘মানুষ কোম চলাচল করায় আয় রুজগার কুমে গিয়েচে।’ শৈলেন হালদার নামের এক মৎস্যজীবী বলেন, ‘শীতি পুকুরের জলে নাবতে ভয় করচে। পেট তো বোজে না। তাই কষ্ট করে মাচ ধরতি হচ্চে।’

সদর উপজেলার খেজুরতলা গ্রামের কৃষক কাসেদ আলী বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে ধানের বীজতলা নিয়ে চিন্তা হচ্ছে। ডিঙ্গেদহ হাটখোলা এলাকার দোয়াল্লিন মোল্লা বলেন, এভাবে টানা কুয়াশা পড়লে আলুখেতের ক্ষতি হতে পারে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের চুয়াডাঙ্গার উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, টানা কুয়াশায় ফল-ফসলের কিছু ক্ষতি হয়ে থাকে। তবে নিয়মিত পরিচর্যায় তা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। ধানের বীজতলা রক্ষায় সকালে উঠে শিশির ভেঙে দিয়ে জিপসাম ছিটিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি বীজতলা ঢেকে রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আলু, ফুলকপিসহ শীতকালীন সবজি রক্ষায় কৃষকদের ছত্রাকনাশক ছিটানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

কনকনে ঠান্ডায় শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদের শীতজনিত রোগবালাই বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন বলেন, ১০০ শয্যার হাসপাতালে বেশ কয়েক দিন ধরে চার শতাধিক রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বৃহস্পতিবার ৪৩২ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। এ ছাড়া বহির্বিভাগে আরও আট শতাধিক রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। হাসপাতালে আসা বেশির ভাগ মানুষই শীতজনিত রোগে আক্রান্ত।

এদিকে চুয়াডাঙ্গায় এখনো সরকারিভাবে শীতার্ত মানুষকে সহযোগিতা করা শুরু হয়নি। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, জেলায় শীতার্তদের জন্য মোট ১৭ হাজার ৬৫০টি কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। জেলা প্রশাসক কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, শীত মৌসুমে জেলার শীতার্ত মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণের জন্য পৌরসভা ও ইউনিয়নভিত্তিক ভাগ করে সংশ্লিষ্ট এলাকায় পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই তা বিতরণ শুরু হবে।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন