ঈশ্বরদীর জুবায়ের জনপ্রিয় ভ্লগার

মোহাম্মদ জুবায়ের ইসলাম ফেসবুকে আর্কটারাস জুবায়ের নামে পরিচিত | ছবি: সংগৃহীত

প্রতিনিধি ঈশ্বরদী: ডিজিটাল বিশ্ব যেভাবে রেসের লাগামহীন ঘোড়ার মতো দৌড়াচ্ছে। তাতে পরিবর্তন এসেছে জীবনযাত্রার মানে এবং কর্মক্ষেত্রে। অদক্ষ মানুষজন একদিকে হারিয়েছেন বেঁচে থাকার অবলম্বন চাকরি, অপরদিকে ডিজিটাল স্কিল নির্ভর তরুণরা পথ বের করেছেন সম্ভাবনার। এই সংকটময় পরিস্থিতিতে দেশে বেড়েছে ই-কমার্স এবং এফ-কমার্সের ক্ষেত্র। তেমনি একজন ঈশ্বরদীর অতি, পরিচিত বিষয়বস্তু নির্মাতা (কনটেন্ট ক্রিয়েটর) মোহাম্মদ জুবায়ের ইসলাম।

জুবায়ের মূলত বিভিন্ন স্থানের খাবার ও ভ্রমণ নিয়ে সবচেয়ে বেশি কনটেন্ট বানিয়ে থাকেন। ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে যাত্রা হলেও চলতি বছরের প্রথম দিক থেকে আর্কটারাস জুবায়ের (Arcturus Zubair) নামের ফেসবুকে ফলোয়ারের সংখ্যা হাজার হাজার ছাড়িয়েছে।

জুবায়েরের জন্মস্থান এবং বেড়ে ওঠা উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের সাহাপুর পূর্বপাড়া। সাহাপুর শহীদ আবুল কাশেম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেছেন। এরপর পাবনা সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে বর্তমানে ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগ থেকে স্নাতক প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করছেন।

ছোটবেলা থেকে খেলাধুলা অনেক পছন্দ করতেন। তবে খেলাধুলার তেমন পরিবেশ না থাকায় এতে নিয়মিত হতে পারেনি জুবায়ের। খেলাধুলার তেমন সুযোগ না থাকায় নতুন যাত্রা হয় ভ্রমণ ও ফুড ভ্লগয়ের মাধ্যমে। বাবা যোজন আলী মালিথা, বোন সেতু খাতুন এবং বন্ধু নাইমুর রহমানের অনুপ্রেরণা এবং সহযোগিতায় ব্লোগিং শুরু করে জুবায়ের। তাঁর সুন্দর উপস্থাপনার মাধ্যমে দর্শনীয় স্থান এবং নামিদামি রেস্টুরেন্ট থেকে শুরু করে স্ট্রিট ফুড গুলোর রিভিউ করে জেলার খাবার এবং ঐতিহ্যকে সকলের সামনে তুলে ধরছেন তিনি। তাঁর এই ভ্রমণ ও ফুড রিভিউগুলো সানন্দে গ্রহণ করছেন ঈশ্বরদীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ।

বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে গিয়ে ভ্লগগুলো করেন | ছবি: সংগৃহীত

ভ্লগ নিয়ে মোহাম্মদ জুবায়ের ইসলাম বলেন, করোনা মহামারীর সময় বাসায় বসে বসে একা সময় কাটাচ্ছি তখন আমি দেখলাম কোরিয়ান কিছু ফুড ব্লগার খাচ্ছে সাথে আবার তাঁদের আয়ও হচ্ছে। তখন ভাবলাম ভিন্নকিছুর চেষ্টা করা যেতে পারে। ভাবতে ভাবতে ২০২০ সালের শেষের দিকে হঠাৎ করেই মনে হলো ভ্রমণ ও ফুড  ভ্লগ শুরু করি। ভিডিও তৈরিতে আমাকে আমার বন্ধু নাইমুর রহমান, তুষার ও কাউছার ইসলাম সহযোগিতা করে থাকে। এখন মূলত পাবনা জেলার খাবার এবং ইতিহাস নিয়ে কাজ করছি। তবে আমার ইচ্ছে আছে পুরো বাংলাদেশের খাবার এবং ঐতিহ্যকে তুলে ধরার।

জুবায়ের আরও জানান, আমি মানুষের জন্য যা করেছি তাঁর থেকে বেশি মানুষ আমাকে দিয়েছে। মানুষ আমাকে যে ভালোবাসা ও সম্মান দিয়েছে এইটাই আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। ঈশ্বরদীর যে স্ট্রিট ফুডগুলোর রিভিউ করি এতে তাদের বিক্রি বাড়ে। এর মাধমে তারা ভালোভাবে পরিবার চালাতে পারে এবং আমার জন্য দোয়া করেন। এইটাই আমার কাছে সবচেয়ে বেশি। তাঁদের এভাবে সাপোর্ট দিতে আমার ভালো লাগে।

তৃপ্তি হোটেল অ্যান্ড রেস্তোরাঁ, পাবনার কাশমেরী ফুড গার্ডেন, শতবর্ষী লক্ষ্মী মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, ঈশ্বরদী ফুড জংশন, ঈশ্বরদী কাচ্চি ডাইন, আটঘরিয়ার দেবত্তর বাজার বিসমিল্লাহ্ খাবার হোটেল ও ঈশ্বরদীর রুশ ডাইনের স্বতাধিকারীরা জানান, জুবায়ের খুব ভালো ব্লগার। জুবায়েরের ব্লগের মাধ্যমে আমাদের রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট ও হোটেলের খাবার সম্পর্কে জানতে পারছে দেশ ও দেশের বাহিরের মানুষ।