[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: মেয়রের হস্তক্ষেপে ‘সমাধান’, ছাত্রলীগের নতুন কমিটির নেতারা ক্যাম্পাসে

প্রকাশঃ
অ+ অ-

বৈঠক শেষে নগর ভবনে আলোন্দোলনকারী ছাত্রলীগ নেতা ও নতুন কমিটির সভাপতি–সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে ছবি তোলেন মেয়র খায়রুজ্জামান। পরে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করে তাঁরা ক্যাম্পাসে যান |  ছবি: সংগৃহীত

প্রতিনিধি রাজশাহী: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সদ্য ঘোষিত কমিটিকে কেন্দ্র করে নানা নাটকীয়তার পর মেয়রের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতির ‘সমাধান’ হয়েছে। নতুন কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও কাঙ্ক্ষিত পদ না পাওয়া নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠকের পর সব পক্ষকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন তিনি।

বৈঠক শেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন নতুন কমিটির নেতারা। এ সময় তাঁদের সঙ্গে মহানগর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদেরও দেখা যায়।

বৈঠক শেষে সদ্য ঘোষিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল গালিব সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা নিজ নিজ এলাকায়ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন তুলে ধরবেন। মেয়র মহোদয়কে কথা দিচ্ছেন, মেয়রের নেতৃত্বে রাজশাহীর ছয়টি আসন প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেবেন।

প্রায় সাত বছর পর গত শনিবার রাতে মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে বাবুকে সভাপতি ও আসাদুল্লা-হিল গালিবকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩৯ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। পরদিন থেকে কমিটিকে ‘বিতর্কিত’ দাবি করে ক্যাম্পাসে কর্মসূচি পালন করে আসছিল ছাত্রলীগের আরেকটি অংশ। ক্যাম্পাসে মহড়ার পাশাপাশি ককটেল বিস্ফোরণের মতোও ঘটনা ঘটে। আজ বিকেলে তাঁরা ক্যাম্পাসে প্রবেশের দুটি ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। বিষয়টির সমাধানে সন্ধ্যায় নগর ভবনে দুই পক্ষের নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।

সন্ধ্যায় নগর ভবনে বৈঠকে উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলেন মেয়র। পরে দুই পক্ষকে একত্রে পাশে রেখে ছবি তোলা হয়। বৈঠকে মেয়র খায়রুজ্জামান নির্দেশনা দিয়ে বলেন, ছাত্রলীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী ছাত্রসংগঠনের নেতৃত্ব নিয়ে প্রতিযোগিতা থাকবে। কিন্তু নেতৃত্ব নিয়ে নিজেদের মধ্যে কোন্দলে জড়িয়ে পড়লে চলবে না। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত ও সাংগঠনিক গতিশীলতা বাড়াতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। জাতীয় নির্বাচন মাথায় রেখে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

সভায় মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম সরকার, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জিয়া হাসান আজাদ, শ্রম সম্পাদক আব্দুস সোহেল, মতিহার থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আলাউদ্দিন, রাজপাড়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাফিজুর রহমান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি নুর মোহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুম মুবিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মেয়রের হস্তক্ষেপে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নতুন কমিটির নেতারা। মঙ্গলবার রাত পৌনে আটটার দিকে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছনে |  ছবি: সংগৃহীত

বৈঠকে আন্দোলনকারীদের মধ্যে সাবেক সহসভাপতি কাজী আমিনুল হক, বর্তমান কমিটির সহসভাপতি শাহিনুল ইসলাম ও তাওহীদুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মোর্শেদ, ছাত্রলীগ নেতা অনীক মাহমুদ, সাকিবুল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। নতুন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকও বৈঠকে অংশ নেন। সভা শেষে নতুন কমিটি মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। পরে তাঁরা ক্যাম্পাসে একটি শোডাউন দেন।

বৈঠকের পর আন্দোলনকারী কয়েকজনকে ফোন করা হলে তাঁরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাঁদের আর কথা বলার জায়গা নেই বলেও জানান। দুজন নেতা বলেন, তাঁরা হয়তো আর কয়েক দিন পর ক্যাম্পাস থেকে চলে যাবেন। রাজশাহীর অভিভাবক (মেয়র) যেভাবে বলেছেন, মেনে নিয়েছেন। তাঁদের কিছুই করার ছিল না। সামনে নির্বাচন, সেটাই শুধু মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এক বছরের জন্য ঘোষিত আংশিক কমিটিতে ২০ জনকে সহসভাপতি করা হয়েছে। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আছেন আটজন। সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ পেয়েছেন নয়জন। তাঁদের মধ্যে অন্তত চারজনের নিয়মিত ছাত্রত্ব নেই। শিক্ষার্থী নির্যাতন, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আছে অন্তত সাতজনের বিরুদ্ধে। কাঙ্ক্ষিত পদ না পেয়ে সংগঠনের একাংশের নেতা-কর্মীরা পরদিন থেকেই কমিটি বাতিলের দাবিতে কর্মসূচি পালন করছিলেন। আজ মেয়রের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতির ‘সমাধান’ হয়।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন