নবীন শিক্ষার্থীদের পদচারণে মুখর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, র‍্যাগিং করলে ব্যবস্থা

নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিতে প্রতিদিনের চেয়ে একটু অন্যরকম সাজে ক্যাম্পাসে এসেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

প্রতিনিধি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে ওরিয়েন্টেশন ক্লাসের (পরিচিতি ক্লাস) মধ্য দিয়ে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হয়েছে। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনগুলোতে বিভিন্ন বিভাগের আয়োজনে নবীন শিক্ষার্থীদের হাতে ফুল, কলম ও বিভিন্ন শিক্ষাসামগ্রী উপহার দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। এ সময় শিক্ষকেরা নবীনদের উদ্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলার পরামর্শ দেন। এদিকে নবীন শিক্ষার্থীদের র‍্যাগিং করলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সকাল থেকেই নবীন শিক্ষার্থীদের পদচারণে মুখর হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বর, বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক, টুকিটাকি চত্বর, পরিবহন মার্কেটসহ ক্যাম্পাসের প্রতিটি অঙ্গন। নবীন শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস–জীবনের নতুন বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরে দেখছেন পুরো ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থাপনার সামনে দাঁড়িয়ে ছবিও তুলছেন অনেকে। এ ছাড়া ছেলে-মেয়েদের স্বপ্নের বিদ্যাপীঠ দেখতে নবীনদের সঙ্গে অনেক অভিভাবকও এসেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের টুকিটাকি চত্বরে কথা হয় আরবি বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী তাসনিম রাফির সঙ্গে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়ে তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রমের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয়েছিল। প্রথমে শঙ্কায় ছিলাম। কিন্তু পরে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে দেশের অন্যতম সুন্দর এই ক্যাম্পাসে ভর্তি হতে পেরে খুবই উচ্ছ্বসিত।’

নবাগত শিক্ষার্থীরা বিভাগের শিক্ষক ও অন্য শিক্ষার্থীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

রংপুরের তারাগঞ্জ থেকে এসেছেন নবীন শিক্ষার্থী শায়লা আক্তার। তিনি বুদ্ধিজীবী চত্বরের সামনে ছবি তুলছিলেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। স্বপ্নের ক্যাম্পাসে ভর্তি হতে পেরে অনেক ভালো লাগছে। প্রথম দিনের অনুভূতি সত্যিই অন্য রকম।’

এর আগে গতকাল রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক পেজে নবাগত শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে প্রক্টর আসাবুল হক এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘সবাই যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখে।

এতে করে মানসিক বিকাশ ঘটবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানাব, তারা যেন জুনিয়রদের সার্বিক সহযোগিতা করে। তারা (নবীন শিক্ষার্থীরা) যেন কোনো র‍্যাগিং বা বুলিংয়ের শিকার না হয়। নবীন শিক্ষার্থীদেরও বলব, তারা যেন এমন আচরণ করে, যাতে সিনিয়ররা তাদের প্রতি খুশি থাকে। সেই সঙ্গে কোনো নবীন শিক্ষার্থী যদি র‍্যাগিংয়ের শিকার হয়, তাহলে প্রক্টর অফিসে যোগাযোগ করুন। প্রমাণ সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

নবাগত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য র‌্যাগিংয়ের বিষয়ে জিরো টলারেন্স রয়েছে মন্তব্য করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম সাউদ বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পাসে এমনিতেই র‍্যাগিং কম। তা–ও সিনিয়র শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা কামনা করছি। তবে কেউ র‌্যাগিংয়ের শিকার হলে বিভাগের পাশাপাশি যেন তাৎক্ষণিক আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে।’ প্রমাণ সাপেক্ষে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান তিনি।