[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

রাশিয়ার ‘বন্ধু ও নিরপেক্ষ’ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ

প্রকাশঃ
অ+ অ-

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাশিয়ার মুদ্রাবাজারে যেসব ‘বন্ধু ও নিরপেক্ষ’ দেশের ব্যাংক ও ব্রোকার হাউস লেনদেন করতে পারবে, সেই তালিকায় বাংলাদেশকে স্থান দিয়েছে মস্কো। রাশিয়া সরকার ওই তালিকার অনুমোদন দিয়েছে, ফলে বাংলাদেশের ব্যাংক ও ব্রোকার হাউসগুলো সে দেশের মুদ্রাবাজারে লেনদেন করতে পারবে। রাশিয়ার বন্ধু ও নিরপেক্ষ দেশের তালিকায় স্থান পাওয়ার কারণে বাংলাদেশ এই অনুমতি পেয়েছে। বাংলাদেশসহ ‘বন্ধু ও নিরপেক্ষ’ এমন ৩০টির বেশি দেশ এই অনুমতি পেয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রাশিয়া এমন সময়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যখন রুবল ১৭ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। মুদ্রা চাঙা করতে দেশটি সুদের হার ১৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে। ইউক্রেনে হামলার পর থেকে রাশিয়ার অর্থনীতিও চাপে রয়েছে, দুর্বল হয়েছে দেশটির মুদ্রা রুবল। এদিকে দেশটির মস্কো এক্সচেঞ্জ হাউসে ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মুদ্রা দিরহাম ও রাশিয়ার মুদ্রা রুবলের লেনদেন চালু হচ্ছে। তবে এসব লেনদেন নিষ্পত্তি হবে রুবলে।

এদিকে ঢাকায় অবস্থিত রাশিয়ার দূতাবাস এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিষয়টি জানিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছে।

যেসব দেশ রাশিয়ার বন্ধু ও নিরপেক্ষ দেশের তালিকায় স্থান পেয়েছে, সেগুলো হলো আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, বেলারুশ, বাংলাদেশ, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান, আলজেরিয়া, বাহরাইন, ব্রাজিল, চীন, কিউবা, মিসর, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, কাতার, মালয়েশিয়া, মঙ্গোলিয়া, মরক্কো, ওমান, পাকিস্তান, কাতার, সৌদি আরব, সার্বিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভেনেজুয়েলা ও ভিয়েতনাম।

এর আগে খসড়া তালিকা থেকে পাঁচটি দেশ ও অঞ্চলকে রাশিয়া বাদ দিয়েছে। এসব হলো আর্জেন্টিনা, হংকং, ইসরায়েল, মেক্সিকো ও মলদোভা।

ইউক্রেনে হামলার পর যেসব দেশ মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তাদের রাশিয়া ‘অবন্ধু’ হিসেবে মনে করে। যেসব দেশ মস্কোর বন্ধু ও নিরপেক্ষ দেশের তালিকায় স্থান পেয়েছে, সেগুলোর মধ্যে অনেকগুলো মধ্য এশিয়ার দেশ, যারা একসময় সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল। এ ছাড়া অনেক দেশ দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়ার মিত্রদেশ হিসেবে পরিচিত।

বাংলাদেশের ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এখন কোনো ব্যাংক রাশিয়ার মুদ্রায় লেনদেন করতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংক তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অনুমতি দিতে পারে। তবে এখনো অন্য কোনো দেশে এমন কোনো ব্যবসা করছে না বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো। আর দেশটির সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি ব্যবসা করতে চাইলে রুবলে নস্ট্রো হিসাব খোলার অনুমতি নিতে হবে। এরপর কেস-টু–কেস ভিত্তিতে অনুমোদন নিতে হবে।

বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানিতে লেনদেনের ৯০ শতাংশের বেশি মার্কিন ডলারে হয়ে থাকে। এ ছাড়া ইউরো, পাউন্ড, অস্ট্রেলিয়ান ডলার, চীনা মুদ্রা ইউয়ান ও কানাডিয়ান ডলারে কিছু লেনদেন হয়ে থাকে। এর বাইরে ভারতের সঙ্গে বিশেষ ব্যবস্থায় টাকা-রুপিতে বাণিজ্য শুরু হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রুপিতে রপ্তানি আয় থাকলেই কেবল রুপিতে আমদানি করা যাচ্ছে।

চলতি বছর বিশ্ববাজারে তেলের দাম পড়ে যাওয়া এবং এর দাম বেঁধে দেওয়ার কারণে রাশিয়ার তেল রাজস্ব কমেছে। তবে গত বছর দেশটির আমদানি কমে যাওয়ার কারণে বাণিজ্য উদ্বৃত্তের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২২১ বিলিয়ন বা ২২ হাজার ১০০ কোটি ডলারে। এ ছাড়া গত জুন মাসে পুতিনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের কারণে দেশটির অনেক মানুষ বিদেশি হিসাবে অর্থ স্থানান্তর করেছেন—এসব কারণে রুবলের দরপতন হচ্ছে বলে নিউইয়র্ক টাইমসের সংবাদে বলা হয়েছে।

এতে বলা হয়, সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় দেখা গেছে, রাশিয়ার অর্থনীতিতে নাটকীয় পরিবর্তনের কারণে দেশটির নীতিপ্রণেতাদের পক্ষে কিছু করা চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে। যদিও এই নীতিপ্রণেতারা যুদ্ধ শুরুর পরপর বেশ দক্ষতার সঙ্গেই পরিস্থিতি সামলেছিলেন। কিন্তু শুধু স্বল্পমেয়াদি নয়, আরও অনেক দীর্ঘমেয়াদি সমস্যাও আছে, যেগুলো মোকাবিলা করতে গিয়ে তাঁরা এখন রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন।

এ ছাড়া বাজেট-ঘাটতি ও নিষেধাজ্ঞার কারণে রপ্তানি কমে যাওয়ায় রাশিয়ার অর্থনৈতিক ভারসাম্য অনেকটাই বিনষ্ট হয়েছে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পূর্বাভাস, চলতি বছর মূল্যস্ফীতি ৫ থেকে ৬ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে থাকবে; এতে বোঝা যায়, চ্যালেঞ্জ ঠিক কতটা। তবে জুলাই মাসে দেশটির মূল্যস্ফীতির হার ছিল আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৩ শতাংশ। এই পরিসংখ্যান বলছে, মূল্যস্ফীতির হার বাড়ছে।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন