[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

তদন্ত প্রতিবেদন: বঙ্গবাজারে ৪ হাজার দোকান পুড়েছে, ৩০৩ কোটি টাকার ক্ষতি

প্রকাশঃ
অ+ অ-

প্রাণচাঞ্চল্যে ভরা বঙ্গবাজার মার্কেটটি এখন পুড়ে যাওয়া বিশাল ধ্বংসস্তূপ | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর বঙ্গবাজার এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে প্রায় চার হাজার দোকান। বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সসহ মহানগর শপিং কমপ্লেক্স, এনেক্সকো টাওয়ার, বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেট ও বঙ্গ হোমিও কমপ্লেক্সের এসব দোকানের মোট ৩০০ কোটি টাকার ওপরে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর বঙ্গবাজারে আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত হওয়া বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের চারটি ইউনিট (বঙ্গ, গুলিস্তান, মহানগরী ও আদর্শ) মিলে মোট দোকান ছিল ২ হাজার ৯৬১টি। এখন এই দোকানগুলোর চিহ্ন নেই। এ ছাড়া মহানগর শপিং কমপ্লেক্সে ৭৯১টি, বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেটে ৫৯টি ও বঙ্গ হোমিও কমপ্লেক্সে ৩৪টি দোকান আগুনে পুড়েছে। সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৮৪৫টি দোকানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

সিটি করপোরেশনের তদন্ত প্রতিবেদনে অবশ্য এনেক্সকো টাওয়ারে কতটি দোকান পুড়েছে তা উল্লেখ করা হয়নি। এই মার্কেট কর্তৃপক্ষকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এনেক্সকো টাওয়ারের প্রায় সব দোকানের বিমা করা আছে। এই মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এনেক্সকো টাওয়ারে আগুনে পুড়ে ও পানিতে ভিজে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আরও শতাধিক দোকানে। সেই হিসেবে ভয়াবহ ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বঙ্গবাজার এলাকায় সব মিলিয়ে প্রায় চার হাজার দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বঙ্গবাজার ও সংলগ্ন এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়ন কমিটির সভাপতি ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (অঞ্চল-১) মেরীনা নাজনীনের নেতৃত্বে এই তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দুই ভাগে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে—মার্কেটগুলোর কাঠামোগত ক্ষতি ও মালামালের ক্ষতির পরিমাণ।

প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, বঙ্গবাজারে সব মিলিয়ে ৩০৩ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে মার্কেটগুলোর কাঠামোগত ক্ষতির পরিমাণ ১৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আর মালামালের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ২৮৮ কোটি টাকার ওপরে। তবে দোকানের মালিক ও কর্মচারীদের মানবিক-মানসিক বিপর্যয়সহ ক্ষতির পরিমাণ, চাকরিহীনতার আর্থিক মাপকাঠি নিরূপণ করা দুরূহ বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

এদিকে আজ মঙ্গলবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের চৌকি বিছিয়ে ব্যবসা করার সুযোগ করে দিতে বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডস্থল প্রস্তুত করা হচ্ছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদের তত্ত্বাবধানে এবং করপোরেশনের গঠিত তদন্ত কমিটির সহযোগিতায় অঞ্চল-১-এর আঞ্চলিক নির্বাহী প্রকৌশলী মিঠুন চন্দ্র শীলের নেতৃত্বে দোকানের জায়গা প্রস্তুত করা হচ্ছে।

সরেজমিনে আজ বিকেলে বঙ্গবাজার গিয়ে দেখা গেছে, ধ্বংসাবশেষ সরানোর কাজ বেশ জোরেশোরে চলছে। ইতিমধ্যে কাজ শেষ হয়েছে অর্ধেকের একটু বেশি। বাকি কাজ শেষে আগামীকাল বুধবার দুপুর ১২টায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের বসানোর কাজের উদ্বোধন করবেন বলে বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ী নেতারা জানিয়েছেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বঙ্গবাজারের ১ দশমিক ৭৯ একর জায়গাজুড়ে বালু ও ইট বিছানো হবে। ইতিমধ্যে সেখানে ৪০ গাড়ি বালু ফেলা হয়েছে, আর ইট বিছানো হয়েছে ৯০ হাজার। পুরো এলাকায় প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার ইট বিছানো হবে। বালু ফেলা হবে ১৫০ গাড়ি। বুধবারের মধ্যে পুরো এলাকায় বালু ফেলা ও ইট বিছানোর কাজ শেষ করতে চায় সিটি করপোরেশন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, পুড়ে যাওয়া জায়গা থেকে বর্জ্য অপসারণের কার্যক্রম চলছে। করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. হায়দর আলীর নেতৃত্বে এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডস্থল থেকে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬০ টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন