[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

চিড়িয়াখানায় প্রাণীকে উত্ত্যক্ত করলে জরিমানা

প্রকাশঃ
অ+ অ-

চিড়িয়াখানায় খাঁচায় রাখা বাঘ | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক: চিড়িয়াখানায় গিয়ে প্রাণীদের উত্ত্যক্ত করলেই দিতে হবে জরিমানা। আর চিড়িয়াখানার কোনো প্রাণীকে জখম করলে বা অনুমতি ছাড়া খাবার দিলে দুই মাসের জেলের সঙ্গে জরিমানা গুনতে হবে। এমন বিধান রেখে চিড়িখানাগুলোর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় নতুন আইন করতে যাচ্ছে সরকার।

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে সোমবার সকালে এ-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে নীতিগত অনুমোদনের জন্য চিড়িয়াখানা আইন এবং বাংলাদেশ ডেইরি উন্নয়ন বোর্ড আইন উত্থাপনের কথা রয়েছে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত চিড়িয়াখানায় প্রাণী সংগ্রহ, লালন-পালন, চিকিৎসা, প্রজনন, সংরক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ এবং চিড়িয়াখানার উন্নয়ন, ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামোগত সুবিধাসহ বিভিন্ন বিষয়কে আইনি কাঠামোর মধ্যে আনতে এই আইন করা হচ্ছে।

খসড়ায় বলা হয়েছে, কোনো দর্শনার্থী প্রবেশ ফি ছাড়া চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করলে তার কাছ থেকে প্রবেশ ফির সমপরিমাণ মূল্য আদায় করা হবে। মাত্রা বিবেচনা করে দুই হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাবে। কোনো দর্শনার্থী চিড়িয়াখানায় কোনো প্রাণীকে উত্ত্যক্ত করলে তার কাছ থেকে দুই হাজার টাকা প্রশাসনিক ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাবে।

এই আইন পাস হলে কোনো দর্শনার্থী চিড়িয়াখানার কোনো প্রাণীকে কোনোভাবে আঘাত বা জখম করলে বা কিউরেটরের নির্দেশনা অমান্য করে বা অনুমতি ছাড়া খাবার দিলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। এ জন্য দুই মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেয়া হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এসব অপরাধের বিচার করা যাবে।

খসড়ায় বলা হয়েছে, চিড়িয়াখানায় কোনো নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া কোনো অবস্থাতেই একই প্রজাতির একই লিঙ্গের একটি প্রাণী রাখা যাবে না। ভেটেরিনারি কর্মকর্তার নির্দেশনা ছাড়া প্রকৃতিগত কারণে দলবদ্ধভাবে অবস্থানকারী প্রাণীদের মধ্য থেকে কোনো প্রাণীকে আলাদা বা এককভাবে রাখা যাবে না। প্রাণীর প্রকৃতি বিবেচনা করে ন্যূনতম প্রাকৃতিক পরিবেশ বা সুবিধাসম্পন্ন খাঁচায় আবদ্ধ বা মুক্ত রাখতে হবে। প্রাণীর প্রকৃতিগত আচরণ, সংশ্লিষ্ট প্রাণীর লালন-পালনে নিয়োজিত ব্যক্তি ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনা করে প্রাণীর খাঁচার অবকাঠামো তৈরি করতে হবে। কোনো বিপন্ন প্রজাতি সংরক্ষণের জন্য সরকার এক বা একাধিক চিড়িয়াখানা নির্দিষ্ট করতে পারবে।

‘চিড়িয়াখানায় অবস্থিত প্রাণীর দেহে যেসব রোগ-জীবাণু প্রাণী থেকে প্রাণীতে বা মানুষে সংক্রমণযোগ্য সেসব রোগ-জীবাণু বা পরজীবীর সীমা বা মাত্রা নির্ণয়ের জন্য প্রযোজ্যতা অনুযায়ী নিয়মিতভাবে প্রত্যেক প্রাণীকে পরীক্ষা করে প্রাপ্ত তথ্য প্রত্যেক প্রাণীর জন্য বিধি দিয়ে নির্ধারিত পদ্ধতিতে পৃথকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।’

খসড়ায় বলা হয়েছে, সরকারের অনুমোদন ছাড়া কোনো চিড়িয়াখানায় বিদেশি প্রজাতির বন্য প্রাণী কেনা, বিনিময়, উপহার হিসেবে বা অন্য কোনোভাবে সংগ্রহ করা যাবে না। চিড়িয়াখানার কোনো প্রাণীকে লোকালয়ে ছেড়ে দেয়া যাবে না।

ডেইরি উন্নয়ন বোর্ড হচ্ছে
দুধ ও দুগ্ধজাতীয় পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি, মান নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ এবং বাজারজাতকরণের বিষয়গুলো ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণে ‘বাংলাদেশে ডেইরি উন্নয়ন বোর্ড আইন’ করতে যাচ্ছে সরকার। এই আইন পাস হলে সরকার বাংলাদেশ ডেইরি উন্নয়ন বোর্ড নামে সংবিধিবদ্ধ সংস্থা গঠন করবে।

খসড়া অনুযায়ী, এই বোর্ডকে বাণিজ্যিকভাবে ডেইরি খামার স্থাপন, উন্নত ব্যবস্থাপনা এবং নিরাপদ খাদ্য হিসেবে দুধ বা দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনের প্রক্রিয়া, উন্নয়ন ও পরিকল্পনা করতে হবে। এ ছাড়া দুগ্ধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, দুগ্ধ প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, দুগ্ধজাত পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এবং দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্র স্থাপনে নিবন্ধনও দেবে এই বোর্ড।

বোর্ডকে ডেইরিসংক্রান্ত বিষয়ে বৈজ্ঞানিক, কারিগরি ও আর্থিক ব্যবস্থাপনাবিষয়ক প্রশিক্ষণ দেয়ার বিষয়ে সরকারকে সুপারিশ করতে হবে। ডেইরি স্বাস্থ্য, দুধ বা দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদন, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণে প্রণোদনা দেয়া, দুগ্ধ খামার বা দুগ্ধ শিল্পাঞ্চল সৃষ্টিতে উদ্যোগ নেয়া এবং দুধ উৎপাদন উদ্যোক্তা সৃষ্টি, সমবায় ভিত্তিতে খামার স্থাপনের উৎসাহ ও পরিবেশ সৃষ্টিতে অবদান রাখতে হবে।

এ ছাড়া সমবায় পর্যায়ে দুধ বা দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনে বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে ঋণ প্রদান ও আদায় এবং এই বিষয়ে সমবায়ভিত্তিক উদ্যোগে সহায়তা দেয়া, দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের বাজার সৃষ্টি, অবকাঠামো নির্মাণ ও ব্যবস্থাপনা, দুধ বা দুগ্ধজাত পণ্যের মান যাচাইয়ের জন্য নমুনা সংগ্রহ, পরীক্ষা এবং নির্ধারিত মান নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নিরাপদ খাদ্য হিসেবে ব্যবহারের জন্য শিশু ও অন্য যেকোনো মানুষের জন্য শ্রেণিভিত্তিক দুধের মানও এই বোর্ডকে নির্ধারণ করে দিতে বলা হয়েছে।

খসড়ায় বলা হয়েছে, বোর্ড দুধ বা দুগ্ধজাত পণ্যের মান নির্ধারণ করে একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত ফি নিয়ে অনাপত্তি সনদ দিতে পারবে। এই সনদ দেয়ার পর বোর্ড নিজ উদ্যোগে বা অভিযোগের ভিত্তিতে ওই প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনস্থল, সংরক্ষণাগার, প্রক্রিয়াকরণ কারখানা ছাড়াও বাজার থেকে দুধ বা দুগ্ধজাত খাদ্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে পারবে। গবেষণাগারে দুধ পরীক্ষার পর মানের ব্যত্যয় পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করতে পারবে বোর্ড।

বাংলাদেশ ডেইরি উন্নয়ন বোর্ডের ১৭ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী চেয়ারম্যান, প্রতিমন্ত্রী কো-চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ডেইরি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক পদাধিকারবলে সদস্যসচিবের দায়িত্বে থাকবেন বলে খসড়ায় বলা হয়েছে।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন