 |
গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে ঝরে পড়ছে সূর্যের কিরণ। বৃহস্পতিবার সকালে ঈশ্বরদী উপজেলার মাঝদিয়া গ্রামে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন
|
আব্দুল কাদের নাহিদ, ঈশ্বরদী থেকে: বর্ষপঞ্জি বলছে হেমন্ত এখনও শেষ হয়নি তবে ঘন কুয়াশায় ঢেকে গেছে প্রকৃতি। ঘর থেকে বাইরে বের হলে গা শিউরে ওঠে। কারণ শীত এসেছে। ভোরের শিশির সূর্যের আলোতে মুক্তার মতো আলো ছড়িয়ে জানান দিচ্ছে, আসছে শীত। কুয়াশামাখা প্রকৃতি আর মাঠে মাঠে ফসলের সম্ভাবনার ঘ্রাণ, কৃষকের চোখে-মুখে আনন্দের রেখা।
মাকড়সার জালে আটকা শিশিরমাখা ভোরের একরাশ সজীব স্বপ্ন নিয়ে প্রকৃতি এখন মানুষকে কাছে টানছে। উৎসব আর আনন্দের মাঝে নিমগ্ন খেটে খাওয়া মানুষ। এমন সময় প্রকৃতি দূর করে শীত এনে দেয় শত কষ্টের গ্লানি। শীত কারো ভালো লাগা আর কারো কাছে কষ্টের।
ভোরবেলা মাঠে ময়দানে ঘুরে দেখা যায়, বাঁশঝাড় বা গাছের আড়াল থেকে ভোরের সূর্য হালকা লালচে রঙে দিচ্ছে ঝিলিক। কুয়াশার প্রতিটি মাকড়সার জালে আটকা পরে সূর্যের কিরণে মুক্তা মালার মতো জ্বলে। গ্রীষ্ম আর শীতের মধ্যে হেমন্ত যেন অপরূপ এক সেতুবন্ধন। কার্তিকের মাঝামাঝি সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত শীতল হাওয়া আর বিকেলে ঝরতে থাকা ধুসর কুয়াশা।
 |
| ঘাসে লেগে থাকা শিশির বিন্দু রোদের আলোয় ঝলমল করছে। বৃহস্পতিবার সরকারি সাঁড়া মাড়োয়ারী মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজের ক্যাম্পাসে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
উত্তরের জনপদ ঈশ্বরদীতে শীত কড়া নাড়ছে দুয়ারে দুয়ারে। মাঠে-প্রান্তরে ভোরবেলা শিশিরমাখা ধানের ডগা জানান দিচ্ছে ফসলের সম্ভাবনার বার্তা। গেছে কুয়াশার কণায়।
সাংস্কৃতিক সংগঠক ও সিনিয়র সাংবাদিক খন্দকার মাহবুবুল হক দুদু বলেন, এ জনপদে শীত উপলব্ধি করা যাচ্ছে। কয়েক দিন থেকে ভোরে ফ্যানের প্রয়োজন হচ্ছে না। শীত শিরশির করে দরজায় কড়া নাড়ছে।
 |
| ঘাসে লেগে থাকা শিশির বিন্দু রোদের আলোয় ঝলমল করছে। বৃহস্পতিবার সরকারি সাঁড়া মাড়োয়ারী মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজের ক্যাম্পাসে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক (গবেষণা) ড. কুয়াশা মাহমুদ জানান, প্রকৃতি জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। শীত মানেই উৎসব। যেন পিঠা আর জামাই মেলা নিয়ে আসে শীতকাল। শীত না এলে কবিতা পূর্ণতা পায় না। তাই কবিতায় মিশে আছে শীতের শত ভাবনা।
চিকিৎসক ও লেখক ডা. আলোক মজুমদার বলেন, ভোরবেলা দুর্বা ঘাসে শিশির দেখা। মাঠে মাঠে ফসলের ক্ষেত ভোরের কুয়াশায় ঢেকে যায়। শীত আসছে তাই আর এখন রাতে বৈদ্যুতিক ফ্যান চালাতে হয় না।
 |
| মাকড়সার জালে জমেছে শিশির বিন্দু । বৃহস্পতিবার সরকারি সাঁড়া মাড়োয়ারী মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজের ক্যাম্পাসে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সহকারী কমান্ডার ও সাপ্তাহিক চেতনায় ঈশ্বরদীর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান ফান্টু জানান, আবহাওয়া আর জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে এখন শীত ভাদ্রের মাঝেই উপলব্ধি করা যাচ্ছে। ভোর রাতে কাঁথা কম্বল গায়ে দিতে হয়। তাই বোঝা যায় শীত বেশি দূরে নেই।
ঈশ্বরদীর আবহাওয়া অধিদফতরের পর্যবেক্ষক নাজমুল হকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গত কয়েক দিন থেকে ভোরবেলা হালকা কুয়াশা দেখা যাচ্ছে। কার্তিক মাসের দিন যত যাচ্ছে; শীতের আগমন তত উপলব্ধি হচ্ছে। শীতের তীব্রতা কম বা বেশি হওয়ার বিষয়টি আরও মাসখানেক পরে নির্ণয় করা যাবে।
 |
| কাঁটা মুকুট ভিজেছে শিশিরে। বৃহস্পতিবার ঈশ্বরদী উপজেলা সদরের বাবু পাড়ায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন