[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

পাবনার সাঁথিয়া ও বেড়া: লাম্পি স্কিন রোগে তিন হাজার গরু আক্রান্ত

প্রকাশঃ
অ+ অ-

পাবনা জেলার মানচিত্র

প্রতিনিধি পাবনা: পাবনার সাঁথিয়া ও বেড়া উপজেলায় লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) বা চর্মরোগে অন্তত তিন হাজার গরু আক্রান্ত হয়েছে। গত ১৫ দিনে এ রোগে সাঁথিয়ায় ৫টি গরু মারা গেছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্ত গরুর সংখ্যা বেড়ে চলায় খামারিদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এলএসডি রোগটি একধরনের চর্মরোগ হলেও এতে গরুর মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে। এই রোগ মানুষের মধ্যে না ছড়ালেও গরুর ক্ষেত্রে এটি ভাইরাসজনিত ছোঁয়াচে রোগ। সাধারণত বর্ষার শেষে শরতের শুরুতে অথবা বসন্তের শুরুতে মশা-মাছির বংশবিস্তারের সময় রোগটি ছড়িয়ে পড়ে। এই রোগে আক্রান্ত গরু-বাছুর প্রথমে জ্বরে আক্রান্ত হয় ও একপর্যায়ে খাওয়া বন্ধ করে দেয়। জ্বরের সঙ্গে মুখ ও নাক দিয়ে লালা বের হয়, পা ফুলে যায়। একপর্যায়ে আক্রান্ত গরুর শরীরের বিভিন্ন জায়গার চামড়া পিণ্ড আকৃতি ধারণ করে, লোম উঠে যায় এবং ক্ষত সৃষ্ট হয়। ধারাবাহিকভাবে এই ক্ষত শরীরের অন্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। গরু ঝিম মেরে থাকে ও কাঁপতে শুরু করে। কিডনির ওপর প্রভাব পড়ার ফলে গরু মারাও যায়।

সরেজমিনে দুই উপজেলা ঘুরে জানা যায়, সাঁথিয়াতেই সবচেয়ে বেশি গরু এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, উপজেলার মোট গরুর শতকরা দুই ভাগ এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। সেই হিসাবে এ রোগে আক্রান্ত গরুর সংখ্যা প্রায় ২ হাজার ৬০০। অন্যদিকে বেড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, এ উপজেলায় আক্রান্ত গরুর সংখ্যা শতাধিক। তবে খামারিদের দাবি, বেড়ায় ইতিমধ্যেই এই রোগে পাঁচ শতাধিক গরু আক্রান্ত হয়ে পড়েছে।

সাঁথিয়া উপজেলার সাঁথিয়া পৌরসভা, গৌরীগ্রাম ইউনিয়ন, নন্দনপুর ইউনিয়ন, ধোপাদহ ইউনিয়ন, নাগডেমড়া ইউনিয়ন এবং বেড়া উপজেলার বেড়া পৌরসভা, হাটুরিয়া-নাকালিয়া, জাতসাকিনী, চাকলা, কৈতলা ইউনিয়নে এই রোগের প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি।

সাঁথিয়া পৌরসভার কালাইচড়া মহল্লার খামারি শের আলী বলেন, ‘আমার ৯টা গরুর মধ্যে ৪টি গরু এই রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। এগুলোর চিকিৎসার পেছনে প্রতিদিন দেড় থেকে দুই হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। গরুগুলো নিয়ে আমরা সবাই খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি।’

চরমাছখালি গ্রামের সিএনজিচালক জিয়ারুল হক বলেন, ‘কষ্টের টাকায় কেনা গরুটির পেটে বাচ্চা এসেছিল। কিন্তু লাম্পি রোগে কয়েক দিন আগে আমার গরুটি মারা গেছে।’

গোপীনাথপুর গ্রামের জিতেন হালদার জানান, সপ্তাহখানেক আগে এই রোগে তাঁর লাখ টাকা দামের একটি ষাঁড় মারা যায়। এতে ভয়ে বাড়ির অন্য গরুটিও তিনি বেচে দেন।

বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) যথাক্রমে মিজানুর রহমান ও ফারুক মিয়া জানান, এলএসডি রোগে মৃত্যুহার একেবারেই কম, তবে গরু চরম দুর্বল হয়ে পড়ে। এই রোগের সরাসরি কোনো প্রতিষেধক না থাকলেও ছাগলের বসন্ত রোগের প্রতিষেধক এ ক্ষেত্রে বেশ কার্যকর। তাই দুই উপজেলাজুড়ে ইতিমধ্যেই প্রতিষেধকটির প্রয়োগ শুরু হয়েছে। প্রতিদিনই তাঁরা নিজেদের উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ক্যাম্প স্থাপন করে এই রোগের ব্যাপারে খামারিদের সচেতন করে দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। খামারিদের আক্রান্ত গরুকে আলাদা রাখতে হবে।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন