[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

বিশ্ববাজারে কমেছে বেশির ভাগ পণ্যের দাম

প্রকাশঃ
অ+ অ-

গ্রাফিক্স পদ্মা ট্রিবিউন 

ইকবাল হোসেন: আন্তর্জাতিক বাজারে অধিকাংশ পণ্যের দাম নিম্নমুখী অবস্থানে রয়েছে। বিশ্ববাজারে গত জুন থেকে আগস্টের মধ্যে ভোজ্যতেল, জ্বালানি তেল, চাল, চিনি, গম ও সোনার দাম কমেছে। বেশির ভাগ পণ্যের দাম নিম্নমুখী হওয়ায় কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছে বাংলাদেশের মতো সেসব দেশ যারা এগুলো আমদানি করে চাহিদা মেটায়। কিন্তু সহসা এর তেমন সুফল পাচ্ছে না বাংলাদেশ।

বিশ্বব্যাংক প্রতি মাস শেষে আন্তর্জাতিক বাজারের প্রধান প্রধান পণ্যের দামের হিসাব নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বিশ্বের প্রধান প্রধান বাজারের চিত্র তুলে ধরা হয়। সেপ্টেম্বরের পণ্যের দামের প্রতিবেদনটি শনিবার প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, জুন ও জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে আন্তর্জাতিক বাজারে বেশির ভাগ পণ্যের দাম কমেছে। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বেশি থাকলে তার নেতিবাচক প্রভাব দেশের বাজারে পড়তে বাধ্য। কারণ বাংলাদেশ ভোজ্যতেল, চিনি ও জ্বালানি তেলসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি করে স্থানীয় চাহিদা পূরণ করছে। বিশ্ববাজারে এসব পণ্যের দাম নিম্নমুখী থাকলে স্বাভাবিকভাবে আমদানি খরচ কমবে। দেশের বাজারেও কয়েক মাসের মধ্যে এর প্রভাব পড়বে।

বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, জুনে পাম তেলের দাম ছিল টনপ্রতি ১ হাজার ৫০১ মার্কিন ডলার, তা আগস্টে ৪৭৫ ডলার কমে ১ হাজার ২৬ ডলারে দাঁড়িয়েছে। সয়াবিন তেলের দামও কমেছে। জুনে সয়াবিন তেলের দাম টনপ্রতি ১ হাজার ৭৫২ ডলার ছিল, তা আগস্টে ১৫৩ ডলার কমে ১ হাজার ৫৯৯ ডলারে অবস্থান করে। সংস্থাটি জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারে জুনে চিনির দাম প্রতি টন ছিল ২৪২ ডলার, মার্চে তা ৩ ডলার কমে ২৩৯ ডলারে দাঁড়িয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামে চালের দাম কিছুটা কমেছে। জুনে থাইল্যান্ডে প্রতি টন ৫ শতাংশ ভাঙা চালের দাম ছিল ৪৪৪ ডলার, যা মার্চে ১৩ ডলার কমে বেড়ে ৪৩১ ডলারে দাঁড়িয়েছে। একই সময়ে ২৫ শতাংশ ভাঙা চালের দাম প্রতি টন ২০ ডলার কমে ৪৪১-৪২১ ডলার হয়েছে। একই সময় গমের বাজারেও নিম্নমুখী প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ গমের দাম জুনে ছিল টনপ্রতি ৪৬৯ ডলার, যা ৮৭ ডলার কমে ৩৮২ ডলারে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ সময় আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম আউন্সপ্রতি ৭২ ডলার কমেছে। জুনে মূল্যবান ধাতুটির দাম ছিল প্রতি আউন্স ১ হাজার ৮৩৭ ডলার, আগস্টে তা কমে ১ হাজার ৭৬৫ ডলারে অবস্থান করে।

অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য কমে আসার মূল কারণ হলো- বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার পূর্বাভাস। অবশ্য মন্দা হলে তখন নতুন সংকট তৈরি হবে। বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের চাহিদা কমে যাবে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য কমে যাওয়া বাংলাদেশের আমদানি ব্যয়ের বিবেচনায় স্বস্তির খবর। তবে ডলারের দর যদি বাড়তে থাকে এবং স্থিতিশীল না হয়, তাহলে দেশের বাজারে এর সুফল তেমন পাওয়া যাবে না। অবশ্য পণ্যের দর বৃদ্ধিজনিত ব্যয়ের চাপ কমতে থাকলে ডলারের দাম কমার ক্ষেত্রে তা সহায়ক হবে। আরেকটি প্রশ্ন হলো- বিশ্ববাজারের এ পরিস্থিতি টেকসই হবে কি না। তাদের মতে, ফিউচার্স মার্কেটের (ভবিষ্যতে মূল্য পরিশোধের জন্য এখন চুক্তি) মূল্য পরিস্থিতিও কমতির দিকে। যেমন- ফিউচার্স মার্কেটে ২০২৩ সালের জুলাইয়ে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বর্তমানের চেয়ে ৮ শতাংশ কম। গ্যাসের দাম ৪২ শতাংশ কম। ফলে পণ্যমূল্য কমে যাওয়ার বিষয়ে আশা বেড়েছে। বিশ্ববাজারের এখনকার নিম্নমুখী প্রবণতার মূল কারণ মন্দার পূর্বাভাস। দেশে দেশে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। এর ফলে ভোগের চাহিদা কমে যাচ্ছে। মন্দা হলে তখন বাংলাদেশের রপ্তানি খাত নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হবে। অবশ্য খুব বড় মন্দা হবে বলে তিনি মনে করছেন না। তার মতে, মন্দা স্বল্পমেয়াদি হলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন