[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার্থীদের এক টুকরো ছবি

প্রকাশঃ
অ+ অ-

ঢাকা থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা চার শিক্ষার্থী একটু ঘুমিয়ে নিচ্ছেন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটায় রাজশাহী নগরের পদ্মা নদীর ধারে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি রাজশাহী: মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটা। রাজশাহী নগরের পদ্মার পড়ে একটি মাইক্রোবাসের পাশে চারটি মেয়ে ঘুমিয়ে আছেন। দুজনের মুখ বই দিয়ে ঢাকা। আর দুজন অন্যদিকে ফিরে আছেন। ছবি তোলার অনুমতি নিতে গেলে দুজন উঠে বসে বই পড়া শুরু করলেন।

মাইক্রোবাসের পেছনের দিকটা খুলে দেওয়া হয়েছে। সেদিক দিয়ে দেখা যায়, ভেতরে আরও দুজন নারী বসে আছেন। কথা বলে জানা গেল, তাঁরা ঢাকা থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসেছেন। ভোরে রাজশাহী শহরে ঢুকেছেন। সকালে একটি খাবার হোটেলে ঢুকে নাশতার পাশাপাশি একটু ফ্রেশ হয়েছেন। বাকি সময়টা পদ্মার ধারে কাটাচ্ছেন।

গতকাল সোমবার ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এই পরীক্ষার জন্য প্রায় ৩ লাখ শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সারা দেশ থেকে রাজশাহীতে এসেছেন। অনেকেই বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন, মেস ও আবাসিক হোটেলে উঠেছেন। কিছু শিক্ষার্থী চেষ্টা করেও কোথাও জায়গা পাননি। তাঁরা রাজশাহী রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে বসে আছেন।

এই মাইক্রোবাসের যাত্রীরা কোনোভাবেই যাওয়া–আসার জন্য ট্রেন বা বাসের টিকিট জোগাড় করতে পারেননি। মাইক্রোবাসের ভেতরে মাঝবয়সী এক নারী তাঁদের অভিভাবক হিসেবে সঙ্গে এসেছেন। আরেক পুরুষ তাঁদের সঙ্গে এসেছেন। তিনি একটু দূরে কিছু একটা আনতে গেছেন। ওই নারী বললেন, তিনি চারজন মেয়েকে নিয়ে এসেছেন, তাঁরা সবাই এক পরিবারের নন। আত্মীয়স্বজন ও পরিবারের একজন রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন নারায়ণগঞ্জের, একজন ঢাকার বনশ্রী এলাকার, একজন ধোলাইপাড় ও একজন নরসিংদীর। তাঁদের চারজন একই ইউনিটের পরীক্ষার্থী হলেও পরীক্ষায় বসবেন চারবারে। আজ মঙ্গলবার এ ইউনিটের পরীক্ষা হচ্ছে। চার পালায় চার রকম প্রশ্নে তাঁদের পরীক্ষা হবে। একজনের বেলা একটায় আর অন্যদের সাড়ে তিনটায়। তিনি বলেন, এক পালায় পরীক্ষা না হলে সঠিক মূল্যায়নই–বা কী করে হয়? যা–ই হোক, সারা দিন তাঁদের পরীক্ষা নিয়েই থাকতে হবে।

পদ্মার ধারে জায়গা কে দেখিয়ে দিল জানতে চাইলে তিনি বললেন, ‘শুনেছিলাম পদ্মার ধারটা অনেকটা নিরিবিলি, ভালো। বাতাস পাওয়া যায়, এ জন্যই এদিকে গাড়ি রেখেছি।’

কথা বলতে বলতেই তাঁদের পুরুষ অভিভাবক এলেন। তাঁর নাম জুলমাত হোসেন। পেশায় ব্যবসায়ী। বললেন, যেদিন ট্রেনের অগ্রিম টিকিট দেয়, সেদিন ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে স্টেশনে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন, শেষে টিকিট না পেয়ে ফিরে গিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বললেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইচ্ছা করলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ব্যবস্থা করতে পারে। তাহলে এই দুর্ভোগ পোহাতে হতো না। কোথায় পরীক্ষার্থী পরীক্ষার আগের রাতে একটু প্রস্তুতি নেবেন, সেখানে সারা রাত এভাবে ভ্রমণ করে এসে ঢুলতে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বসে থাকতে না পেরে ওরা মাদুর বিছিয়ে একটু ঘুমানোর চেষ্টা করছে।’

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন