[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

শিশুদের জীবনে জলবায়ু পরিবর্তনের থাবা

প্রকাশঃ
অ+ অ-

সেলিম কাজ করে খাবারের দোকানে। দিনে মজুরি পায় ১০০ টাকা | ছবি: মোছাব্বের হোসেন
মোছাব্বের হোসেন: সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. সেলিম। এ বছরের মে ও জুন মাসের বন্যার কারণে তাদের ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ার পর প্রথমে সিলেট শহরে আশ্রয় নেয়। পরে সেখানে তেমন কোনো কাজ না পেয়ে চলে আসে ঢাকার মহাখালীর কড়াইল বস্তিতে।

সেলিমের বাবা মো. হাফিজ মিয়া বলেন, বন্যায় তাঁদের বাড়ি ডুবে গেছে। এ ছাড়া ছেলে সেলিমের স্কুলেও পানি উঠেছে। সব মিলে এলাকায় টিকতে না পেরে প্রথমে সিলেটে এবং পরে ঢাকায় এসে বস্তিতে আশ্রয় নেন। এখন দুই ছেলে এক মেয়ে ও স্ত্রী আমিনাকে নিয়ে অথই সাগরে পড়েছেন। ঢাকায় দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। হাফিজ আরও বলেন, ‘এলাকায় গিয়া কি করুম। ঘরও নাই, আর কাজকাম নাই। বাঁচতে তো হইবো। কষ্টে দিন কাটাচ্ছি আমরা। পোলার স্কুল যাওয়াও বন্ধ।’

সেলিমের মতো অনেক শিক্ষার্থী এখন স্কুল থেকে ঝরে পড়ছে। এ বছরের মে ও জুন মাসের বন্যায় অনেক পরিবার বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে শিশুরাও উদ্বাস্তু হয়েছে। বলা যায় শিশুদের জীবনে জলবায়ু পরিবর্তনের থাবা।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লাখ লাখ শিশু
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এবার বাংলাদেশে ভয়াবহ বন্যা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, গত কয়েক বছরে এমন বন্যা দেখা যায়নি। এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে ছোট্ট ছোট্ট শিশু। এ ছাড়া তারা স্কুল থেকেও ঝরে পড়ছে। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক তহবিল ইউনিসেফ বলছে, বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পাঁচটি জেলায় ভয়াবহ বন্যার প্রভাবে ১৬ লাখের বেশি শিশুর নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি এবং শিক্ষা ঝুঁকিতে পড়ে। যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে শিশুরা সবচেয়ে অসহায়। ক্ষতিগ্রস্ত শিশু ও পরিবারগুলোর জরুরি নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও নিরাপদ পানির প্রয়োজনে সাড়া দিতে ইউনিসেফ সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারদের সঙ্গে মাঠপর্যায়ে কাজ করছে। বাংলাদেশের পাঁচ জেলা—সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা ও মৌলভীবাজারের ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সিলেট ও সুনামগঞ্জ এলাকার মানুষ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। কারণ, সেখানে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং কৃষিজমি, বিদ্যুৎকেন্দ্র, স্কুলসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো বন্যায় তলিয়ে যায়।

সিলেট বিভাগে ৯০ শতাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্র জলমগ্ন হয়ে পড়ে, যেখানে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। শিশুরা পানিতে ডুবে যাওয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে, যা ইতিমধ্যেই দেশে শিশুমৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। ৩৬ হাজারের বেশি শিশু তাদের পরিবারের সঙ্গে জনাকীর্ণ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নেয়। স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং পরীক্ষা বাতিল করা হয়, যা শিশুদের পড়াশোনাকে আরও বিঘ্নিত করছে। ১৮ মাস স্কুল বন্ধ থাকায় ইতিমধ্যে ক্ষতির শিকার হয়েছে তারা।

সফিয়ার কাজ করে ঢাকার কেরানীগঞ্জের জাহাজভাঙা ঘাটে | ছবি: মোছাব্বের হোসেন

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, ‘আটকে পড়া লাখ লাখ মানুষের জন্য আমরা সমবেদনা জানাই। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে শিশুরাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। শিশুদের জরুরি প্রয়োজনগুলো মেটাতে ইউনিসেফ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং অংশীদারদের সঙ্গে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’ জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় শিশু ও পরিবারগুলোকে জীবনরক্ষাকারী উপকরণ ও সেবা প্রদানে ২৫ লাখ ডলারের আহ্বান জানায় ইউনিসেফ।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে স্কুলের শিশুরা কঠিন কাজে
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার একটি সরকারি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সফিয়ার মিয়া। পানিতে ঘর ডুবে যাওয়ায় এ বছরের জুন মাসে পরিবারের সঙ্গে ঢাকার কেরানীগঞ্জের একটি বস্তিতে ওঠে। সফিয়ারের সঙ্গে যখন কথা হয়, তখন সে কেরানীগঞ্জের জাহাজভাঙা ঘাটে এটি জাহাজে বড় শ্রমিকদের সহকারী হিসেবে কাজ করছিল। পাশেই ছিল তাঁর বাবা মোক্তার মিয়া। সফিয়ার বলে, ‘এখানে কঠিন কঠিন কাজ করা লাগে। সকালে কলা আর রুটি খাইতে দেয়। দুপুরে বাড়ি থাইক্যা মা খাবার দিয়া যায়। কাম শ্যাষ হয় সন্ধ্যায়। এরপর রাইতে গা ব্যথা করে।’ স্কুলে যেতে চাও কি না, জানতে চাইলে সফিয়ার বলে, ‘কাজ কইরাই কূল পাওয়া যায় না। স্কুলে যামু কোন সময়?’

সফিয়ারের বাবা মোক্তার মিয়া বলেন, ‘কেউ কি চায় বাড়িভিটা রাইখা চইলা আসতে? আমরা বাধ্য হইয়া ঢাকায় আইছি। আমি পাই দিনে ৫০০ টেকা আর ছেলেটা ১০০। পরিবারে ওর মা, আরও দুই শিশু আছে আমার। বস্তির বাসাভাড়া মাসে তিন হাজার টেকা। এইখানে প্যাট চালাইতে কষ্ট হয়। ওগো স্কুলে দিবার মন চায়, কিন্তু পারতেছি না। আমরা খুব কষ্টে আছি।’

কেরানীগঞ্জের জাহাজভাঙাশিল্প এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, এখানে বড়দের পাশাপাশি শিশুরাও কাজ করছে। বড়রা যেসব কঠিন কঠিন কাজ করে ছোটরা সেগুলোতে সাহায্য করে। কখনো বড়দের কঠিন কাজেও হাত লাগায় শিশুরা। এখানে রয়েছে বিভিন্ন ওয়ার্কশপ। সেখানেও লোহা ভাঙা, ঝালাই বা ড্রিল মেশিনে কাজ করছে ছোট শিশুরা। একটি ওয়ার্কশপের মালিক আমিনুর হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিন শিশুরা কাজ খুঁজতে আসে। আমরাও কাজের জন্য লোক খুঁজি। শিশুদের পীড়াপীড়িতে তাদের কাজে নিতে বাধ্য হই।’ তবে কয়েকজন মালিক স্বীকারও করেন, শিশুদের পারিশ্রমিক কম বলে তাঁরা শিশুদের কাজে লাগান।

ইউনিসেফ গত আগস্টে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার তিনটি দেশের শিশুরা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চরম ঝুঁকির মুখে পড়েছে। দেশগুলো হলো বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও ভারত। আর বিশ্বজুড়ে ৩৩টি দেশের প্রায় ১০০ কোটি শিশু এমন চরম ঝুঁকিতে পড়েছে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়সংক্রান্ত বার্ষিক শুমারিতে গত বছর বলা হয়েছে, দেশে ৬৫ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। আর শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক কোটির বেশি। কিন্তু গত বছর বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়ার হার ১৭ শতাংশের বেশি। সংখ্যার হিসাবে ২০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনার পাট চুকিয়েছে।

এ ছাড়া করোনা মহামারিতে দেশে ১৪ হাজারের বেশি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এসব তথ্য জানিয়েছেন বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর সংগঠনের চেয়ারম্যান ইকবাল বাহার চৌধুরী। তিনি বলেন, সাময়িক বন্ধ হয়ে যাওয়া এসব বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন বিঘ্নিত হয়েছে।

এক বছরে এত পরিমাণ শিশু বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়ার পেছনে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেছেন, ঝরে পড়ার এ হার উদ্বেগজনক। অস্বীকার করার উপায় নেই, এর পেছনে বড় একটি কারণ জলবায়ু পরিবর্তন।

আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম আরও বলেন, গত বছরের বন্যায় দেশে পাঁচ শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হলে দীর্ঘ সময় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যেতে পারেনি। এ সময় ঝরে পড়া শিশুদের অনেকে আর বিদ্যালয়ে ফিরবে না। এসব শিশু পরিবারের আয় বাড়াতে বিভিন্ন কাজে যুক্ত হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে ইউনিসেফের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক জর্জ লারইয়া-আজি বলেন, ‘এবারই প্রথমবারের মতো আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় কয়েক লাখ শিশুর চরম ঝুঁকিতে পড়ার সুস্পষ্ট তথ্য-প্রমাণ পেয়েছি।’ সংস্থাটির কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া বিশেষত খরা, বন্যা ও নদীভাঙন দক্ষিণ এশিয়ার লাখো শিশুকে গৃহহীন করেছে। তাদের প্রয়োজনীয় খাবার, স্বাস্থ্যসেবা ও সুপেয় পানির সংকটে ফেলেছে। অনেক ক্ষেত্রেই এসব শিশু বিদ্যালয় ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) জাতীয় প্রকল্প সমন্বয়ক হিসেবে কর্মরত আছেন সৈয়দা মুনিরা সুলতানা। তিনি বলেন, ‘আমি অনেক মেয়েশিশুকে দেখেছি, যারা বৈরী আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিদ্যালয় ছেড়ে কাজে যুক্ত হতে বাধ্য হয়েছে। কেরানীগঞ্জে মেয়েদের পোশাক তৈরির একটা কারখানায় ১০ বছরের কম বয়সী শিশুদের কাজ করতে দেখে আমি বিস্মিত হয়েছিলাম।’

সৈয়দা মুনিরা সুলতানা বলেন, তাদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছেন, বেশির ভাগই দুর্যোগপ্রবণ খুলনা, বরিশাল ও সাতক্ষীরা থেকে এসেছে। আগে সেখানে বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করত। এখন ঝরে পড়েছে। সংসারে অর্থ জোগান দিতে কাজ করছে।

আইএলওর বাংলাদেশ অফিসের পরিচালক টুমো পটিআইনেন বলেন, অল্প বয়সে কাজে যুক্ত হওয়ার কারণে এসব শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাদের ভবিষ্যতের সম্ভাবনার পথ রুদ্ধ হচ্ছে। দারিদ্র্যের দুষ্টচক্রে পড়ছে এসব শিশুর জীবন।

মিন্টু কাজ করে কেরানীগঞ্জেরের একটি ওয়ার্কশপে | ছবি: মোছাব্বের হোসেন

জলবায়ু পরিবর্তন শিশুশ্রম বাড়াচ্ছে
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের শিশু আকবর হোসেন কাজ করে ঢাকার মোহাম্মদপুর বাবর রোডের একটি সবজি বাজারে। পেঁয়াজ বেছে খোসা পরিষ্কার করা, আলুর ময়লা বাছাই করা বা রসুনে লেগে থাকা আবর্জনা পরিষ্কার করার কাজ করে সে। পরে সেগুলো বড় বড় গামলায় করে মাথায় সেই গামলা নিয়ে দোকানে সেগুলো তুলে দেয় আকবর। বিনিময়ে প্রতিদিন ১০০ টাকা পায় সে। দুই বছর আগে বন্যায় বাড়ি ডুবে গেলে আকবরেরা ঢাকায় আসে। আগে নিজেদের এলাকায় একটি প্রাথমিক স্কুলে পড়ত, পরে ঢাকায় এসে পরিবারের সঙ্গে কাজে যোগ দেয় সে। আকবর জানায়, বাবা রিকশা চালায় আর মা মানুষের বাড়িতে কাজ করে। তার এক বোন এখনো ছোট। মা কখনো তাকে সঙ্গে নিয়ে কাজে যায় আর কখনো বাড়িতে রেখেই কাজে যায়। আকবরের কাছে জানতে চাই, স্কুল কেমন ছিল? আকবর কিছুক্ষণ চিন্তা করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, ‘স্কুলে খুব মজা হইতো। ক্লাস শ্যাষ হইলে ফুটবল খেলতাম। ক্লাসও আমার ভালো লাগত।’ আবার স্কুলে যেতে চায় কি না? আকবর বলে, ‘সেইটা আর হইবো না। পরিবারের অনেক খরচ। আব্বা-আম্মা আমারে স্কুলে দিতে চায় না।’

নদীবিধৌত দেশ হওয়ায় বাংলাদেশে দুর্যোগ, বিশেষত ঝড়, বন্যা ও নদীভাঙনের ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ শিশু। তাই জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগে এসব শিশুকে খেসারত দিতে হয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকদের অনেকেই।

ইউনিসেফের তথ্যমতে, শহরের বস্তিতে থাকা বেশির ভাগ শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যায় না। আর দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় শিশুদের বিদ্যালয়ে যাওয়ার সুযোগ আরও কম। সংস্থাটির গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে প্রায় ১৭ লাখ শিশু নিষিদ্ধ ও ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে নিয়োজিত। তাদের প্রতি চারজনের মধ্যে একজনের বয়স ১১ বছর কিংবা তারও কম। অনেক মেয়েশিশু গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে। তাদের সঠিক তথ্য ও গল্প গবেষণায় যুক্ত করা কঠিন। তা করা হলে সংখ্যাটি আরও বাড়বে।

ঢাকা ও আশপাশের বস্তিতে বসবাস করা বেশির ভাগ শিশু ট্যানারি, লঞ্চ ইয়ার্ড, দরজির দোকান, অটোমোবাইল কারখানায় কাজ করে। অনেকে ফল ও সবজির বাজারে মাল টানা এবং বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট কিংবা রেলস্টেশনে কুলির কাজ করে। তাদের বেশির ভাগ দুর্যোগপ্রবণ বিভিন্ন জেলা থেকে উদ্বাস্তু হয়ে ঢাকায় এসেছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শিশুশ্রম বৃদ্ধি ও শিশুদের স্কুল থেকে ঝরে পড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের শিশুদের উচ্চ মূল্য দিতে হচ্ছে। লাখ লাখ শিশু স্কুল থেকে ঝরে পড়ছে। আবার কঠিন কঠিন কাজে যুক্ত হচ্ছে। এতে একটি অদক্ষ শ্রমবাজার গড়ে উঠছে। এই শিশুরা যদি ঠিকমতো পড়াশোনার সুযোগ এবং উন্নত জীবন পেত, তাহলে তাদের বিকাশ আরও ভালো হতো। শিশুশ্রম কমানো এবং শিশুদের স্কুলে যাওয়া নিশ্চিত করতে ইউনিসেফ কাজ করছে জানিয়ে শেলডন ইয়েট বলেন, ‘আমরা সরকারের সঙ্গে শিশুদের নানা বিষয় নিয়ে কাজ করছি। তবে এ জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। কোনো শিশুর জীবনে যাতে জলবায়ু পরিবর্তনের দুর্ভাগ্য নেমে না আসে, সে জন্য আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।’

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন