[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

হরতালের ডাক দিয়ে উধাও কেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী?

প্রকাশঃ
অ+ অ-

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী | ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দল করেন না। তবে রাজনৈতিক মহলে বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী হিসেবেই পরিচিত। ব্যক্তিগতভাবে অনেকে তার রাজনৈতিক ভাবনার বিপরীতে অবস্থান করলেও তার ভালো কর্ম-উদ্যোগের প্রশংসা করেন, শ্রদ্ধা জানান। তবে বিভিন্ন সময় নিজের রাজনৈতিক অবস্থান যৌক্তিক করার জন্য তার দেওয়া বক্তব্যগুলো সমাজে বিতর্কের জন্ম দেয়। সম্প্রতি আধা বেলা হরতালের ডাক দিয়ে তার যুক্তরাজ্যে প্রস্থান দেশে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।

ডা. জাফরুল্লাহ তার খোলামেলা আলাপচারিতার জন্য বিভিন্ন সময় আলোচিত-সমালোচিত হলেও তার লন্ডন সফরকে কেন্দ্র করে এবার তিনি আলোচনায়। দ্রব্যমূল্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ২৮ মার্চ আধা বেলা হরতালের ডাক দিয়েছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। গত ১১ মার্চ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কিন্তু গত ২৫ মার্চ সপরিবারে যুক্তরাজ্য পাড়ি জমিয়েছেন তিনি এবং আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে জাফরুল্লাহর দেশে ফেরার সম্ভাবনা নেই বলেও জানিয়েছে তার পরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্র। জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পরিবারের ঘনিষ্ঠ এক সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অফ এসেক্সে ছেলে বারিশ হাসান চৌধুরীর সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সপরিবার লন্ডন গেছেন তারা। হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর এই ‘ভাগলপুরের’ উদ্দেশ্যে যাত্রাকে অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিরা এটিকে অরাজনৈতিক ব্যক্তির ‘রাজনৈতিক ধোঁকা’ হিসেবেই দেখছেন। ইতোমধ্যে এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে গণমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর এ আচরণে রুষ্ট হয়ে সোহেল রানা রাজ্জাক নামে একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লেখেন, ‘ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সবার সাথে তামাশা করলো’। মোস্তাক আহমেদ নামে একজন ব্যাঙ্গ করে লেখেন, ‘হরতালের উপর পিএইচডি করার জন্য গেছে হয়তো’। আবার মুহাম্মদ মঞ্জু নামে একজন লেখেন, ‘যুক্তরাজ্যে হরতাল কিভাবে সফল করা হয় তা শিখতে গিয়েছেন!’। অনেকে বলছেন ‘স্কাইপের মাধ্যমে হরতাল সফল করা হউক’, তো কেউ লিখছেন, ‘ডিজিটাল দেশ! কাকা ওখান থেকেই ভার্চুয়ালি কর্মসূচিতে অংশ নিবেন’। অর্থাৎ তরুণ প্রজন্মের অনেকেই বিষয়টিকে ভালো চোখে দেখছেন না। তবে এর বিপরীত কথাও শুনা যায়। যেমন, তোফাজ্জল হোসেন তালুকদার নামে একজন এ প্রসঙ্গে লিখেছেন, ‘যারা সহজকে কঠিন করছেন তাদেরকে বলব আয়নার চেহেরাটা দেখুন। আর জাফরুল্লাহ স্যার সম্পর্কে জানুন’। রবিউল আউয়াল নামে একজন লিখেছেন, ‘অনেকেই দেখছি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে নিয়ে হাস্যকর মন্তব্য করছেন। কিন্তু আমাদের এই দেশে উনার কতটা অবদান আছে তা যদি আমরা সবাই জানতাম, তাহলে হয়তু উনাকে কিছুটা হলেও অনুভব করতে পারতাম’। কিন্তু যুক্তরাজ্যে গিয়ে তিনি যে কাজটি ভালো করেননি, এ নিয়ে কারোই মতাভেদ নেই।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীরর সমাজে একটি গ্রহণযোগ্যতা আছে। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। তার কাছে দেশ, সমাজ, জাতি, সকলেই ইতিবাচক কিছু আশা করে। কিন্তু তিনি একেক সময় একেক কথা বলে নিজের গ্রহণযোগ্যতা কমান। কিছুদিন আগে বলেছেন কাদের মোল্লা ছাত্র ইউনিয়ন করতো। আর এবার তিনি হরতালের ডাক দিয়ে নিজেই দেশের বাহিরে চলে গেছেন। এতে করে তিনি তার ভক্ত-অনুসারীদের ছোট করলেন। বিশেষ করে সমাজের বিভিন্ন আলাপ-আলোচনায় তাকে ডিফেন্স করে যারা কথা বলতো, তার এই আচরণের কারণে তাদের অনেককেই ছোট হতে হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন