ময়মনসিংহে গভীর রাতে মাজারে ভাঙচুর

ময়মনসিংহের গৌরীপুরের একটি মাজারে ভাঙচুর চালিয়ে সেখানে গোবর ও মলমূত্র ছিটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার দুপুরে তোলা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে একটি প্রাচীন মাজারে ভাঙচুর চালিয়ে গোবর ও মলমূত্র ছিটিয়েছে দুর্বৃত্তরা।বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে উপজেলার সহনাটী ইউনিয়নের টেঙ্গাপাড়া গ্রামে শাহজাহান উদ্দিন আউলিয়া (রহ.)-এর মাজারে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে আজ শুক্রবার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, আজ সকালে মাজারের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা সীমানাপ্রাচীর ভাঙা এবং ভেতরে গোবর ও মলমূত্র ছিটানো দেখতে পান।

স্থানীয় অন্তত পাঁচজন প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, তাঁদের বাবা-দাদারাও এই মাজার দেখে গেছেন। মাজারটি কত বছরের পুরোনো, তা তাঁরা জানেন না। তাঁদের ভাষ্য, গতকাল রাতে দুর্বৃত্তরা মাজারটি ভেঙে পায়খানা ছিটিয়েছে। এখানে কোনো গানবাজনা বা ওরস হয় না। যাঁরা মানত করতে আসেন, তাঁরা রান্নাবান্না করে মানুষদের খাইয়ে চলে যান। তাঁদের ধারণা, এলাকার কোনো লোক এ কাজ করেনি। বাইরে থেকে কেউ এসে এই ঘটনা ঘটিয়ে গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা জুয়েল মিয়া বলেন, ‘ধারণা করছি, রাত ১১টার পর কোনো এক সময়ে এটি ভাঙা হয়েছে।’

মাজারের পাশেই টেঙ্গাপাড়া শাহজাহান উদ্দিন আউলিয়া (রহ.) জামে মসজিদ অবস্থিত। মসজিদের খতিব আজিজুল হক বলেন, ‘কে বা কারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গতকাল রাতের কোনো এক সময়ে সীমানাপ্রাচীর ভেঙে ভেতরে গোবর ছিটিয়েছে। মাজারের কবর শাবল দিয়ে ভাঙার চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা এই ঘটনার নিন্দা জানাই।’

প্রায় ৪০ বছর ধরে মাজারটির খাদেম হিসেবে দেখাশোনা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন মো. সাইদুর রহমান (৭০)। তিনি বলেন, প্রতিবছর হাজার হাজার ভক্ত এখানে আসেন। কিন্তু কারা এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটাল, তা তিনি বুঝতে পারছেন না।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. জুয়েল মিয়া বলেন, ‘মাজারটি নিয়ে এলাকায় কোনো বিতর্ক নেই। কারা কী কারণে এমন করল, আমরা বুঝতে পারছি না।’

গৌরীপুর থানার ওসি মো. কামরুল হাসান বলেন, ‘মাজারটিতে কেউ থাকে না, অনেকটা পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। দেয়াল ভাঙা হয়েছে এবং ভেতরে গোবর ছিটানো হয়েছে। কারা এবং কী কারণে এই কাজ করেছে, তা জানতে আমরা খোঁজখবর নিয়ে তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি।’