সালাহউদ্দিন আম্মারসহ ছাত্রপ্রতিনিধিদের এখতিয়ারবহির্ভূত তৎপরতা বন্ধের আহ্বান শিক্ষক নেটওয়ার্কের
![]() |
| বিবৃতি | প্রতীকী ছবি |
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত ছাত্রপ্রতিনিধিদের এখতিয়ারবহির্ভূত কার্যক্রমের নিন্দা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। রোববার সংগঠনটির এক বিবৃতিতে এসব তৎপরতা অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয়জন ডিনকে পদত্যাগে বাধ্য করতে রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মারের তৎপরতার প্রেক্ষাপটে এই বিবৃতি দেয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। বিবৃতিতে রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মারের নেতৃত্বে বিভিন্ন ধরনের মবপ্রবণতা এবং শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ডের কথাও তুলে ধরা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ক্যাম্পাসে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে রাকসুর জিএস ভব্যতার সব সীমা ছাড়িয়ে বারবার ঘোষণা করতে থাকেন, লীগপন্থী শিক্ষকদের ক্যাম্পাসে ঢুকলে 'কলার ধরে টেনে এনে প্রশাসন ভবনের সামনে বেঁধে রাখা হবে।' পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসুর ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ ঘোষণা করেন, 'রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো প্রকার আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শিক্ষক ক্লাসে আসতে পারবে না।' তিনি রাজশাহীতে ভারতীয় হাইকমিশন উচ্ছেদেরও উসকানি দেন। বলাবাহুল্য, এসব নির্বাচিত প্রতিনিধি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।’
রাকসুর নেতাদের এ ধরনের আচরণকে সরাসরি বিদ্যায়তনিক স্বাধীনতার ওপর হামলা বলে মনে করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। তাদের মতে, এর ‘স্পাইরাল ইফেক্ট’ সারা দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও ছড়িয়ে পড়েছে।
ওসমান হাদির হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘তরুণ রাজনীতিবিদ শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবর্ষণ ও তাঁর মর্মান্তিক মৃত্যুর পর তৈরি হওয়া হতাশাজনক ও বিক্ষুব্ধ পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে সুযোগসন্ধানী গোষ্ঠী একের পর এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্ম দিয়েছে। হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করতে অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হয়েছে। অথচ সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে শীর্ষস্থানীয় দুটি দৈনিক—প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে এবং দুটি ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান—ছায়ানট ও উদীচীতে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘১৮ ডিসেম্বর ওসমান হাদির মৃত্যুর পর রাকসুর ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন। অন্যদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান উদীচী ও ছায়ানটকে তছনছ করে দেওয়ার আহ্বান জানান। এর ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে জনপরিসর পর্যন্ত অস্থিরতা ও মব সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়ে। আমরা এ–ও লক্ষ করেছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত একজন শিবির নেতা সরাসরি হামলায় যুক্ত ছিলেন। দেখা যাচ্ছে, ১৮ ডিসেম্বর রাতে অগ্নিসন্ত্রাসের পেছনে অন্য উসকানিদাতাদের পাশাপাশি রাকসু ও জাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং ছাত্রশিবিরের নেতারাও একই ধরনের অপরাধে যুক্ত ছিলেন।’
বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রপ্রতিনিধি এবং একটি বিশেষ দলের সদস্যদের উৎপাত ও এখতিয়ারবহির্ভূত সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বন্ধ করার দাবি জানায় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। একই সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীকে তাদের অঙ্গসংগঠন ছাত্রশিবিরের নেতাদের অপতৎপরতা নিয়ন্ত্রণ করার আহ্বান জানানো হয়। নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের মতো জড়িতদের ‘ব্যক্তিগত’ মতামত বলে দায়মুক্তি দেওয়ার সংস্কৃতি থেকেও বেরিয়ে আসার কথা বলা হয়।

Comments
Comments