ঈশ্বরদীতে কুকুরছানা হত্যায় গ্রেপ্তার মায়ের সঙ্গে কারাগারে দুই বছরের শিশু
![]() |
| শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে আদালতে নিশি রহমান। বুধবার বিকেলে পাবনা আমলী আদালতে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
আটটি কুকুরছানা হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন গৃহবধূ নিশি রহমান (৩৮)। থানা থেকে তাকে আদালতে নেওয়া হয় এবং সেখান থেকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কারাগারে তার সঙ্গে রয়েছে দুই বছরের ছোট্ট শিশু সন্তানও।
বুধবার বিকেলে ঈশ্বরদী থানা থেকে নিশি রহমানকে নেওয়া হয় পাবনা আমলী আদালত-২ এ। আদালতে পৌঁছার সময় তার কোলে দেখা যায় শিশু সন্তান। পরে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে নিশি রহমানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর পরে শিশুটিও মায়ের সঙ্গে কারাগারে যায়। পাবনার জেল সুপার ওমর ফারুক বলেন, ‘যতদূর জানা যায়, বাচ্চাটি দুগ্ধপোষ্য। তাই তার মায়ের সঙ্গেই কারাগারে থাকবে।’
নিশি রহমানের স্বামী, উপজেলা পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের উপজেলা ব্যবস্থাপক হাসানুর রহমান নয়ন বুধবার রাতে মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার তিন সন্তান আছে—দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় সন্তান মেয়ে। আর কারাগারে মায়ের সঙ্গে থাকা ছোট ছেলে, যার বয়স দুই বছর।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্ত্রীর জন্য আইনজীবির মাধ্যমে আদালতে জামিন আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু শুনানি হয়নি। বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। আগামী রোববার শুনানির দিন ধার্য করেছেন।’
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের একটি কোনায় টম নামের একটি কুকুর ছিল। এক সপ্তাহ আগে টম আটটি বাচ্চা প্রসব করে। গত সোমবার সকাল থেকে তার ছানাগুলো মিলছিল না। মা কুকুর পাগলপ্রায় কান্না আর ছুটাছুটি করতে দেখা যায়।
পরবর্তীতে উপজেলা পরিষদের কর্মচারীরা জানতে পারেন, ঈশ্বরদী উপজেলা পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়নের স্ত্রী নিশি রহমান জীবন্ত আটটি কুকুরছানাকে বস্তায় বেঁধে রবিবার রাতের কোনো এক সময়ে উপজেলা পরিষদের পুকুরে ফেলে দেন। পরদিন সোমবার সকালে পুকুর থেকে কুকুরছানাগুলোর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সপ্তাহখানেক আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের আঙিনায় একটি মা কুকুর আটটি ছানার জন্ম দেয়। পরে ছানাগুলো নিখোঁজ হয়। সোমবার সকালে কুকুরটিকে পরিষদ চত্বরে ছোটাছুটি করতে ও কাঁদতে দেখা যায়। স্থানীয় লোকজন খোঁজ নিয়ে জানতে পারে ছানাগুলোকে পুকুরে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। পরে পুকুর থেকে মৃত ছানাগুলো উদ্ধার করে মাটিচাপা দেওয়া হয়।
এই ঘটনায় গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন বাদী হয়ে নিশি রহমানকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। পরের রাতে পৌর সদরে রহিমপুর গার্লস স্কুলের পাশে একটি বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন