আটক ৯ নারীসহ বম নাগরিকদের মুক্তিতে তিন দাবি তুললেন ১৩০ নাগরিক
![]() |
| বিবৃতি | প্রতীকী ছবি |
নয়জন নারীসহ বিনা বিচারে আটক সব বম নাগরিকের মুক্তিসহ তিনটি দাবি জানিয়েছেন ১৩০ নাগরিক। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২৪ সালের এপ্রিলে বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলায় কুকি–চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) করা ব্যাংক ডাকাতি ও অস্ত্র লুটের ঘটনার পর রুমার বেথেলপাড়াসহ আশপাশের এলাকায় যৌথ বাহিনী বড় ধরনের অভিযান শুরু করে। ঘটনার সঠিক তদন্ত বা স্পষ্ট প্রমাণ ছাড়াই এই অভিযানে বম জনগোষ্ঠীর ওপর বড় আকারে গ্রেপ্তার অভিযান চালানো হয়।
বিবৃতিতে দাবি করা হয়, প্রথম কয়েক সপ্তাহেই শতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশুকে নির্বিচারে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। গ্রেপ্তার হওয়া ২১ জন নারী–শিশুসহ প্রায় ৮০ জন বম নাগরিক জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। তবে এখনো ৯ জন নারীসহ ৯৪ জন বম নাগরিক আটক আছেন।
বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, তাঁদের বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্তে কোনো অগ্রগতি নেই। বরং তাঁদের জামিনপ্রক্রিয়া নানা উপায়ে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে উচ্চ আদালত জামিন দিলেও রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে আপিল বিভাগ সেই জামিন আদেশ স্থগিত করেছে। কারাবন্দীদের যে আইনি অধিকার থাকার কথা, সেটাও তাঁদের ক্ষেত্রে নিশ্চিত করা হয়নি।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা বলেছেন, কেএনএফের ‘সন্ত্রাসী’ কর্মকাণ্ড দমনের নামে পুরো বম জনগোষ্ঠীকে শাস্তি দেওয়ার যে নীতি, তা স্বৈরাচারী আওয়ামী শাসনামলে শুরু হয়েছিল। কিন্তু জুলাইয়ের গণ–অভ্যুত্থানে স্বৈরশাসকের পতনের পরও অন্তর্বর্তী সরকার এই নীতি থেকে সরে আসেনি।
বিবৃতিতে তিনটি দাবি জানানো হয়েছে— প্রথমত, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য তদন্তের মাধ্যমে ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় কেএনএফ–সহ যারা সরাসরি বা পরোক্ষভাবে জড়িত, তাঁদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।
দ্বিতীয়ত, বম জনগোষ্ঠীকে সামষ্টিকভাবে শাস্তি দেওয়ার নীতি বন্ধ করতে হবে এবং নির্বিচারে আটক বম বাসিন্দাদের মুক্তি দিতে হবে। তৃতীয়ত, যৌথ বাহিনীর অভিযানের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে এবং বম জনগোষ্ঠীর সদস্যদের মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতনে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আছেন রেহনুমা আহমেদ, গীতি আরা নাসরীন, কামরুল হাসান মামুন, কামাল চৌধুরী, মোশরেফা মিশু, আ–আল মামুন, মোশাহিদা সুলতানা, মাইদুল ইসলাম, কাজলী সেহরীন ইসলাম, হানা শামস আহমেদ, রাইয়ান রাজী, সুমাইয়া জাহিদ, ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান, নীতি চাকমা, সায়দিয়া গুলরুখ, মারজিয়া প্রভা, অরুণিমা তাহসিন, কাব্য কৃত্তিকা, বীথি ঘোষ, গীতা দাস, মীর হুযাইফা আল মামদূহ, প্রাপ্তি তাপসী প্রমুখ।

Comments
Comments