[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

‘আমাদের নতুন সংসার, সব স্বপ্ন ভেঙে গেল’

প্রকাশঃ
অ+ অ-
শান্তিরক্ষা মিশনে সুদানে স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মহদিপুর ইউনিয়নের ছোট ভগবানপুর গ্রামের শান্তিরক্ষী মো. সবুজ মিয়ার স্ত্রী নুপুর আক্তার। রোববার বিকেলে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন    

‘আমাদের নতুন সংসার, অনেক স্বপ্ন ছিল। সব স্বপ্ন ভেঙে গেল। এখন স্বামীকেই হারালাম। আমি টাকা চাই না, আপনারা আমার স্বামীকে এনে দেন।’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে এসব কথা বলছিলেন সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের ঘাঁটিতে হামলায় নিহত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনীর লন্ড্রি কর্মচারী মো. সবুজ মিয়ার স্ত্রী নূপুর আক্তার (২২)।

সবুজ মিয়ার বাড়ি গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায়। তিনি উপজেলার মহদিপুর ইউনিয়নের ছোট ভগবানপুর গ্রামের প্রয়াত হাবিদুল ইসলামের ছেলে। দেড় বছর আগে তিনি বিয়ে করেছিলেন। মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে ছোট ভগবানপুর গ্রামে মাতম চলছে।

রোববার বিকেলে গাইবান্ধা শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে ছোট ভগবানপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সবুজ মিয়ার বাড়িতে আহাজারি চলছে। আত্মীয়স্বজন কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। তাঁদের সান্ত্বনা দিতে আশপাশের মানুষ বাড়িতে ভিড় করছেন। সবুজের স্ত্রী নূপুর বারবার লুটিয়ে পড়ছেন।

সবুজের বৃদ্ধা মা ছকিনা বেগম (৬৮) ছেলের শোকে কাঁদতে কাঁদতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। ভাঙা কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘হামার একন্যা ব্যাটা। তাঈ কিসোক বিদেশোত গ্যালো। বিদেশোত না গ্যালে মরলো না হয়। তোমরা হামার ব্যাটাক আনি দেও।’

ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন শান্তিরক্ষী সবুজ মিয়ার বৃদ্ধা মা ছকিনা বেগম। রোববার বিকেলে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মহদিপুর ইউনিয়নের ছোট ভগবানপুর গ্রামে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন    

স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুই ভাইবোনের মধ্যে সবুজ মিয়া ছোট। একমাত্র বোন আরফিন বেগমের আগে বিয়ে হয়ে গেছে। ২০১০ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন সবুজ। দেড় বছর আগে নওগাঁয় বিয়ে করেন। তাঁদের কোনো সন্তান নেই। গত ৭ নভেম্বর সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে যান তিনি।

সবুজের চাচা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় দেড় মাস আগে সবুজ বাড়িতে এসেছিল। সে বিদেশে যাওয়ার আগে বলেছিল, সুদানে শান্তিরক্ষা মিশনে গেলে অনেক টাকা ভাতা পাবে। সেই টাকা দিয়ে বাড়িতে অসমাপ্ত ঘর ঠিকঠাক করবে। বাড়ির জায়গায় বাড়ি থাকল, সে ফিরবে লাশ হয়ে। সবুজের লাশ যেন সরকার দ্রুত আমাদের কাছে পৌঁছে দেয়।’

গতকাল শনিবার সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিক বেসে স্থানীয় সময় আনুমানিক বেলা ৩টা ৪০ মিনিট থেকে ৩টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত ড্রোন হামলা চালায় বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী। ওই হামলায় দায়িত্বরত ছয়জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী শহীদ হন এবং আটজন আহত হন।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন