[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

‘ফুটবলের পিকাসো’ রবার্টসন আর নেই

প্রকাশঃ
অ+ অ-
জন রবার্টসন (১৯৫৩–২০২৫) ছবি | স্কটল্যান্ড জাতীয় দলের এক্স হ্যান্ডল

নটিংহাম ফরেস্ট ইংল্যান্ডের সবচেয়ে পুরোনো ক্লাবগুলোর একটি। ১৬০ বছরের পুরনো এই ক্লাবের সেরা সময় কেটেছে ১৯৭৯ ও ১৯৮০ সালে, যখন টানা দুবার ইউরোপিয়ান কাপ জেতা হয়। আশ্চর্যের বিষয় হলো, ইউরোপে এখনও ফরেস্টই একমাত্র ক্লাব, যার ক্যাবিনেটে ঘরোয়া লিগের ট্রফির তুলনায় ইউরোপিয়ান ট্রফি বেশি। হঠাৎ এই পরিসংখ্যান স্মরণ করানোর কারণ জন রবার্টসন।

চ্যাম্পিয়নস লিগের পূর্ববর্তী সংস্করণ ইউরোপিয়ান কাপে ফরেস্ট যে দুবার শিরোপা জিতেছে, তার পেছনে রবার্টসনের নামটি আসে আগে। ১৯৭৯ সালে ফাইনালে মালমোর বিপক্ষে ফরেস্ট ১-০ গোলের জয় পায়, যেখানে জয়সূচক গোল করেন ট্রেভর ফ্রান্সিস। আর সেই গোলের ক্রেডিট যায় রবার্টসনের ক্রসকে। পরের বছর হামবুর্গের বিপক্ষে ফাইনালেও ১-০ গোলে জয় পায় ফরেস্ট এবং গোলটি করেন রবার্টসন। স্কটল্যান্ডের এই লেফট উইঙ্গারকে ‘আমাদের খেলার পিকাসো’ বলেছিলেন ফরেস্টের তখনকার কোচ ব্রায়ান ক্লফ।

বর্তমানে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা ফরেস্ট জানায়, ৭১ বছর বয়সে মারা গেছেন স্কটল্যান্ডের সাবেক এই উইঙ্গার। ‘দ্য টাইমস’-এর বিচারে তিনি এখনও ফরেস্টের সর্বকালের সেরা ফুটবলার।

ক্লাবটির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা খুব মর্মাহত হয়ে আমাদের বন্ধু ও নটিংহাম ফরেস্টের কিংবদন্তি জন রবার্টসনের মৃত্যুর খবর জানাচ্ছি। আমাদের ক্লাবের সত্যিকারের গ্রেট এবং দুবারের ইউরোপিয়ান কাপজয়ী—জনের অতুলনীয় প্রতিভা, বিনয় ও নটিংহাম ফরেস্টের প্রতি তাঁর অটল নিবেদন কখনোই ভুলব না।’

স্কটল্যান্ডের হয়ে পাঁচ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ২৮ ম্যাচে ৮ গোল করা রবার্টসন ১৯৮১ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়সূচক গোল করেছিলেন। ১৯৮২ বিশ্বকাপে গোল করেছিলেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও। জাতীয় দলের চেয়ে ক্লাব ক্যারিয়ারই বেশি আলোচিত। ১৯৭০ সালে ১৭ বছর বয়সে যোগ দিয়েছিলেন ফরেস্টে। ১৯৭৫ সালে ক্লফ ফরেস্টের কোচ হওয়ার আগে পর্যন্ত মাঝমাঠে তেমন সুযোগ পাননি।

ক্লফ বাঁ উইংয়ে খেলাতে শুরু করেন রবার্টসনকে। এরপর নিজেকে প্রমাণ করেন তিনি। ১৯৭৭ সালে ফরেস্ট ইংল্যান্ডের শীর্ষ লিগে উন্নীত হয় এবং পরের বছর লিগ শিরোপা জেতে। এরপর টানা দুই বছর জেতে ইউরোপিয়ান কাপ। ইংলিশ ফুটবলে সর্বকালের অন্যতম সেরা কোচ হিসেবে পরিচিত ক্লফ একবার বলেছিলেন, ‘ফুটবলে আমি যত সুন্দর ক্রসদাতাদের দেখেছি, তাদের মধ্যে রবার্টসন অন্যতম সেরা। ব্রাজিলিয়ান কিংবা ইতালিয়ানদের মতোই সুন্দর। তাকে একটি বল এবং এক টুকরা মাঠ দিলে যেন শিল্পী হয়ে যায়—আমাদের খেলার পিকাসো।’

সংবাদমাধ্যম ‘নটিংহাম পোস্ট’ ২০১৫ সালে একটি জরিপের আয়োজন করেছিল। তাতে ভোটের মাধ্যমে রবার্টসনকে ফরেস্টের সর্বকালের সেরা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়। ক্লফ রবার্টসনের ওপর কতটা ভরসা রাখতেন, তা বোঝা যায় একটি পরিসংখ্যান থেকে। ১৯৭৬ সালের ডিসেম্বর থেকে ১৯৮০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্লফের অধীনে রবার্টসন টানা ২৪৩ ম্যাচ খেলেন।

১৯৮৩ সালে রবার্টসনকে ডার্বি কাউন্টিতে বিক্রি করা হয়। এর কারণে ক্লফ ও সাবেক সহকারী পিটার টেলরের মধ্যে সম্পর্ক ভালো থাকেনি। ডার্বিতে দুই মৌসুম খেলার পর ১৯৮৫-৮৬ মৌসুমে ফরেস্টে ফিরে এক মৌসুম খেলেন রবার্টসন। ফরেস্টের হয়ে ৪৯৯ ম্যাচে গোল করেছেন ৯৫টি। এরপর কিছু নন-লিগ দলেও খেলেন। অবসরের পর স্কাউট ও সহকারী কোচ হিসেবেও কাজ করেন। জীবনের শেষ দিকে পারকিনসনস রোগে ভুগেছেন।

মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফরেস্ট জানায়, ‘শান্তিতে ঘুমাও রোবো... আমাদের সর্বকালের সেরা।’

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন