[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

কারা হেফাজতে ভ্যানচালকের মৃত্যু, পাঁচ দিন পর পরিবারের হত্যা মামলা

প্রকাশঃ
অ+ অ-
নিহত ভ্যানচালক ওমর ফারুক | ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় চুরির অভিযোগে নির্যাতন চালিয়ে ভ্যানচালক ওমর ফারুক (৩৯) নিহত হওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ওমরের বাবা মোসলেম সরদার বাগমারা থানায় মামলা করেন।

মামলায় ১২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, সঙ্গে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারে নাম উল্লেখ করা আসামিরা হলেন—দেউলা গ্রামের রেজাউল করিম (৪৭), বিপ্লব ওরফে ভুট্ট ড্রাইভার (৩৫), রহিদুল ইসলাম (৪৫), হাবিবুর রহমান (৫৫), মাঝিগ্রামের আবদুল মতিন (৪০), দানগাছি গ্রামের মুকুল হোসেন (মুরগি মুকুল) (৪৪), জুয়েল রানা (ভাংড়ি জুয়েল) (৩৫), দরগামাড়িয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম (৪০), ভবানীগঞ্জের আসাদুল ইসলাম (৩৬), আবদুস সালাম (৪৮), মোজাম্মেল হক (৪২) ও আবদুল হান্নান (৩৮)।

আসামিদের মধ্যে তিনজনকে ২৩ ডিসেম্বর দুপুরে আটক করা হয়। মুকুল হোসেনকে থানায় এনে ছেড়ে দেওয়া হলেও অন্য দুজনকে কারাগারে পাঠানো হয়। বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

এজাহারে বলা হয়েছে, ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ভবানীগঞ্জ সিএনজিস্ট্যান্ডে ওমর ফারুক অটোভ্যান রেখে প্রস্রাব করতে যান। ফিরে আসার সময় সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি রেজাউল করিম ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন তাঁকে আটক করেন। তাদের নির্দেশে সমিতির অন্যান্য সদস্যরা লোহার রড দিয়ে ওমর ফারুককে মারতে শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর ওমর ফারুককে একটি প্রাচীরের সঙ্গে দাঁড় করিয়ে উভয় হাত ও পায়ে হাতুড়ি দিয়ে কয়েকটি লোহার পেরেক ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় তাঁকে মারপিট চলতে থাকে। পানি পান করতে চাইলে তাঁকে নদীতে নিয়ে বিবস্ত্র করে চোবানো হয়। পরে অন্যরা ওমর ফারুকের পায়ুপথে শুকনা মরিচের গুঁড়া ঢেলে দেন।

নির্যাতনের একপর্যায়ে ওমর ফারুকের অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। তখন আসামিরা গাঁজা উদ্ধারের নাটক সাজিয়ে বাগমারা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ভুঞাকে জানায়। তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ওমর ফারুককে ১০০ টাকা অর্থদণ্ড ও ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। পরে পুলিশ তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী কারাগারে পাঠায়। সেখানে অসুস্থ হলে পরদিন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০ ডিসেম্বর ওমর ফারুকের মৃত্যু হয়।

বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর পুলিশ তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক সাকলাইন হোসেন জানান, ‘ওমর ফারুকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে সামান্য ফোলা ও জখম ছিল, তবে গুরুতর কিছু ছিল না।’

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ভুঞা বলেন, ‘ওমর ফারুকের কাছে গাঁজা পাওয়া যাওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত ৭ দিনের কারাদণ্ড ও ১০০ টাকা জরিমানা দিয়েছে। তবে এর আগে তাঁকে মারধর করা হয়েছিল কি না, তা আমি জানি না। সাজা দেওয়ার সময় তিনি সামান্য অসুস্থ ছিলেন, কিন্তু শরীর রক্তাক্ত ছিল না।’

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু জাহিদ শেখ বলেন, ‘আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আগে আটক মুকুল হোসেলকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, এখন যেহেতু মামলায় আসামি হয়েছে, তাঁকে আবার ধরা হবে।’

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন