রাজশাহীতে ছিনতাইয়ের ঘটনায় স্ত্রীসহ গুরুতর আহত ডিপিডিসি কর্মকর্তা

রাজশাহী মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন ডিপিডিসির কর্মকর্তা ফজলে রাব্বি। গতকাল মঙ্গলবার রাতে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

ছিনতাইকারীর হামলায় গুরুতর আহত হয়ে স্ত্রীসহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) কনিষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক ফজলে রাব্বি (২৭)। মঙ্গলবার ভোরে বগুড়ার সান্তাহার স্টেশনের অদূরে তিনি এ হামলার শিকার হন। ঘটনাস্থলটি নওগাঁ সদর থানার মধ্যে পড়ে।

ফজলে রাব্বির মাথা, ডান গাল ও ডান বাহু রামদা দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। রামদা ধরে রাখার সময় তাঁর স্ত্রী পলি খাতুনের ডান হাতের চারটি আঙুল কেটে গেছে। একটি আঙুলের শিরাও কেটে গেছে। চিকিৎসক জানিয়েছেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকায় নিতে হতে পারে।

ফজলে রাব্বির বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার মাইস্তা গ্রামে। তাঁর শ্বশুরবাড়ি নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বান্দাইখাড়া গ্রামে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন ফজলে রাব্বি জানিয়েছেন, তিনি শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী ও সাত বছরের ছেলে, স্ত্রীর বড় বোন ও বোনের ননদ। তারা পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে ভোরে সান্তাহার স্টেশনে নামেন। স্টেশন থেকে সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা নিয়ে ফজলে রাব্বি শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশে রওনা হন।

স্টেশন থেকে মাত্র দুই মিনিটের দূরত্বে পৌঁছানোর পরই সিএনজির দুই পাশে টর্চলাইট দেখা যায়। তাঁরা ভেবেছিলেন, হয়তো পুলিশ। কিন্তু ওই ব্যক্তিরা এসে ফজলে রাব্বির মুঠোফোন বের করতে পকেটে হাত দেন। পেছনের আসন থেকে একটি ব্যাগ ছিনিয়ে নেয় তারা। ব্যাগে দুটি মুঠোফোন, গয়না ও অন্যান্য জিনিস ছিল।

ফজলে রাব্বি জানান, ছিনতাইকারীরা বুঝতে পারার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা রামদা ধরেন। তিনি তাদের তিনজনকে সেখানে দেখেন। একজনকে তিনি দেখতে পাননি, যিনি পেছন থেকে এসে তাঁর মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। তিনি পড়ে গেলে রামদা দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়। দা ধরার সময় তাঁর স্ত্রীর চারটি আঙুল কেটে যায়। আঙুল কেটে পড়ে যায়নি, তবে গুরুতর ক্ষত হয়। ঘটনার সময় আরও দুটি সিএনজিচালিত গাড়ি সেখানে আসে। ওই গাড়ির আলো দেখতে পেয়ে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়।

ফজলে রাব্বি ও তাঁর স্ত্রীকে অটোরিকশার চালক নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

তিনি জানান, স্ত্রীর একটি আঙুলের শিরা কেটে গেছে। সুচিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকায় নিতে হতে পারে। গতকাল রাত পর্যন্ত এ ঘটনায় তারা কোনো মামলা করতে পারেননি। আদমদীঘি থানার এক পুলিশ সদস্য ফোন করে তাঁদের খোঁজ নিয়েছেন।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মুখপাত্র চিকিৎসক শংকর কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘ফজলে রাব্বির শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তিনি এখন শঙ্কামুক্ত।’

বগুড়ার আদমদীঘি থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, ‘শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমি ও আমার সার্কেলের এএসপি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা হয়েছে। ঘটনাস্থলটি নওগাঁ সদর থানার মধ্যে পড়ে। যাঁরা ঘটনার শিকার হয়েছেন তাঁরা এখনও আসেননি, মামলা করেননি।’