[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

তোড়জোড় করে বিদেশিদের কবজায় বন্দর!

বন্দরের সাতটির মধ্যে পাঁচ টার্মিনালেরই ইজারা সম্পন্ন। বাকিগুলোরও আলোচনা চলছে
প্রকাশঃ
অ+ অ-

চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া চরে টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য বন্দরের সঙ্গে ডেনমার্কের মালিকানাধীন এপিএম টার্মিনালসের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি অনুষ্ঠান। ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে | গ্রাফিক্স: পদ্মা ট্রিবিউন

দেশের বন্দরগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতির রক্তপ্রবাহ হিসেবে পরিচিত। গত কয়েক দশকে অর্থনীতির যে উত্থান ও প্রসার, তার পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন বন্দর।

রাজস্ব আয়, পণ্যের অবাধ চলাচল আর সহনীয় ফি ও মাশুলের কারণে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের কাছে বন্দরের গুরুত্ব বেড়েছে। কিন্তু এখন এমনভাবে বন্দরের কিছু অংশ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে যে, ভবিষ্যতে বন্দরই হতে পারে দেশের অর্থনীতির গলার কাটা। গোপন চুক্তির মাধ্যমে চট্টগ্রামসহ কয়েকটি বন্দরের সাতটির মধ্যে পাঁচটি টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানির হাতে চলে গেছে।

আপত্তির মুখে তড়িঘড়ি করে ৩০ বছর মেয়াদি কঠিন চুক্তিও সম্পন্ন হয়েছে। ফলে বন্দরের এসব টার্মিনাল ব্যবহারের সব নিয়ন্ত্রণ বিদেশি কম্পানির হাতে চলে যাচ্ছে। তারা ফি ও মাশুল আরোপসহ যেকোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। এতে দেশের অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। তথ্য ও বন্দরের ব্যবহারকারীদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

দেশের প্রধান বাণিজ্যিক প্রবেশদ্বার চট্টগ্রাম বন্দরের কৌশলগত স্থাপনাগুলো দ্রুত বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় জনমনে উদ্বেগ ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। বন্দরের সাতটি গুরুত্বপূর্ণ টার্মিনালের মধ্যে পাঁচটিই বিদেশি অপারেটরদের হাতে চলে যাচ্ছে বা চুক্তির চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। শুধু জেনারেল কার্গো বার্থ (জিসিবি) ও চিটাগাং কনটেইনার টার্মিনাল (সিসিটি) বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেই পরিচালনা করছে।

সরকারের এই সিদ্ধান্তকে জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী ও অস্বচ্ছ বলে আখ্যায়িত করে এর বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে শ্রমিক সংগঠনসহ বিভিন্ন মহল।

গত ১৭ নভেম্বর লালদিয়ার চর কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার চুক্তি হয়েছে ডেনমার্কের মায়র্কসের মালিকানাধীন এপিএম টার্মিনালসের সঙ্গে। একই দিন পানগাঁও নৌ টার্মিনাল পরিচালনার চুক্তি হয়েছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক লজিস্টিকস প্রতিষ্ঠান মেডলগ এসএ-এর সঙ্গে। এছাড়া নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) বর্তমানে পরিচালনা করছে নৌবাহিনী পরিচালিত চিটাগাং ড্রাইডক লিমিটেড। এটি চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের ৪৪ শতাংশ করে থাকে।

চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে বড় বে টার্মিনাল। এই মেগাপ্রকল্পের দুটি অংশ পরিচালনা করবে যথাক্রমে ডিপি ওয়ার্ল্ড (আবুধাবি) এবং পিএসএ ইন্টারন্যাশনাল (সিঙ্গাপুর)। এর মধ্যে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল (পিটিসি) সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল (আরএসজিটি) পরিচালনা করছে।

লালদিয়া ও পানগাঁও ছাড়াও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ টার্মিনালও বিদেশি অপারেটরদের হাতে হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় আছে। নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে এর পরিচালনা নিয়ে দর-কষাকষি চলছে এবং আগামী মাসে এটিও হস্তান্তর হওয়ার কথা। আর বে টার্মিনাল প্রকল্পের দুটি টার্মিনালও বিদেশিদের হাতে দেওয়া হচ্ছে। চিটাগাং কনটেইনার টার্মিনালেও (সিসিটি) বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে বিদেশিরা।

বহুল আলোচিত ও লাভজনক নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনার জন্য আবুধাবিভিত্তিক ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে চুক্তির তোড়জোড় চলছে। এনসিটি বর্তমানে নৌবাহিনী পরিচালিত চিটাগাং ড্রাইডক লিমিটেড দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।

সবচেয়ে বেশি বিতর্ক হয়েছে লালদিয়া চর কনটেইনার টার্মিনালের নির্মাণ ও পরিচালনা চুক্তিতে। ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালসের সঙ্গে চুক্তিটি হয়েছে ৪৮ বছরের (১৫ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ)। চুক্তি অনুযায়ী বন্দর কর্তৃপক্ষ ও কাস্টমস কী পরিমাণ ট্যারিফ, মাশুল, চার্জ, শুল্ক-কর পাবে, তা সম্পূর্ণ গোপন রাখা হয়েছে।

এছাড়া সুইজারল্যান্ডের মেডলগ এসএকে ঢাকার অদূরে পানগাঁও নৌ টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ২২ বছরের জন্য। পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের (পিটিসি) ইজারা চুক্তিতে সৌদি কম্পানি আরএসজিটিকে অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা।

বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দর প্রতি টিইইউস (২০ ফুট দৈর্ঘ্যের কনটেইনার) থেকে ৮০ থেকে ৯০ মার্কিন ডলার আয় করে। কিন্তু পিটিসিতে আরএসজিটি মাত্র ১৮ ডলার দেবে বন্দর কর্তৃপক্ষকে। প্রথম আড়াই লাখ টিইইউস কনটেইনার পরিচালনার জন্য বন্দর শুধু এই ১৮ ডলার পাবে। অতিরিক্ত টিইইউস পরিচালনার ক্ষেত্রে বন্দর পাবে ট্যারিফের মাত্র অর্ধেক। উদ্বৃত্ত রাজস্বের মাত্র ৩০ শতাংশ বন্দর পাবে, বাকি ৭০ শতাংশ আরএসজিটি।

চট্টগ্রাম শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের (স্কপ) নেতারা বিদেশি অপারেটরের কাছে দ্রুত হস্তান্তরকৃত চুক্তির তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক রিজওয়ানুর রহমান খান সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘সরকার যদি অবিলম্বে এই গণবিরোধী সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসে, তবে ২২ নভেম্বর চট্টগ্রামে ডাকা শ্রমিক কনভেনশন থেকে হরতাল ও ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রাংক রোড অবরোধসহ কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘শ্রমিক-কর্মচারী, ব্যবসায়ী সমাজ ও দেশের জনগণের ন্যায্য দাবিদাওয়া উপেক্ষা করে সরকারের এই অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সম্পাদিত চুক্তি দেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করছে। দেশের কৌশলগত বন্দর সুবিধা প্রজন্মের পর প্রজন্মের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু জাতীয় স্বার্থ যাচাই, স্টেকহোল্ডার মতামত বা পর্যাপ্ত সময় ছাড়া এই দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করা হয়েছে। স্কপ লালদিয়া ও পানগাঁও টার্মিনালের চুক্তি বাতিলের দাবি করছে। আগামী সপ্তাহে এনসিটি চুক্তিও করা হবে, যা জাতীয় স্বার্থবিরোধী ও জনমতের পরিপন্থী। একের পর এক কৌশলগত স্থাপনা বিদেশি হাতে দিলে দেশের বাণিজ্য, শ্রমবাজার ও অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির ঝুঁকি তৈরি হবে।’

বাম জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, ‘লাভজনক চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত বন্ধ করতে ২৩ নভেম্বর সারা দেশে বিক্ষোভ, গণসংযোগ ও পদযাত্রার কর্মসূচি হবে। দাবি না মানলে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে যমুনা ঘেরাও, প্রয়োজনে হরতাল কর্মসূচি দেওয়া হবে।’

বার্থ অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফজলে একরাম চৌধুরী বলেন, ‘বিদেশি কম্পানির হাতে ইজারা না দিয়ে স্থানীয় বা বিদেশি অপারেটরের মাধ্যমে বন্দর নিজেই টার্মিনাল পরিচালনা করলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশেই থাকত।’

জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরী আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, উন্মুক্ত দরপত্রের প্রক্রিয়া না মেনে জিটুজি ভিত্তিতে পিপিপি প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তিনি পানগাঁও টার্মিনালের স্থানীয় এজেন্ট হিসেবে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নেতা সাবের হোসেন চৌধুরীকে যুক্ত করার বিষয়ও সামনে এনেছেন।

চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও পোর্ট ইউজার্স ফোরামের আহ্বায়ক আমির হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বন্দরে যদি বিদেশি বিনিয়োগ হয়, হ্যান্ডলিং বাড়বে। যেসব যন্ত্রপাতি বন্দরে যুক্ত হবে, তা আয় ও ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেবে। দ্রুত পণ্য খালাস নিতে পারবেন। তবে কিছু টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে গেলে প্রতিযোগিতা বাড়বে। প্রতিযোগিতার কারণে বন্দরও নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে বাধ্য হবে।’

চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক সদস্য জাফর আলম বলেন, ‘নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের মতো চালু টার্মিনাল বিদেশির হাতে ছাড়ার ক্ষেত্রে আরও ভাবনা-চিন্তা করা উচিত।’

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘লালদিয়া চরে সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালস একটি নতুন টার্মিনাল নকশা ও নির্মাণ করবে। তিন বছরের মধ্যে বিশ্বমানের টার্মিনাল নির্মাণ হবে এবং এপিএম ৩০ বছর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকবে। তবে বাণিজ্যিক, সামাজিক ও পরিবেশগত শর্ত মেনে চললে মেয়াদ বাড়ানো সম্ভব। এ অপারেটর ইউরোপ ও এশিয়ার সেরা বন্দরে অপারেট করছে।’

নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে বিদেশি ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। সব ক্ষেত্রেই দেশের স্বার্থ প্রাধান্য পাবে। সরকার বন্দর নিয়ে জাতীয় স্বার্থবিরোধী কোনো কাজ করবে না।’

তবে সরকারের পক্ষ থেকে সাফাই গাওয়ার পরও কিছু বন্দরের ব্যবহারকারী বলেছেন, বিদেশি কোম্পানিকে বন্দরের ইজারা দিলে ধীরে ধীরে বন্দরের নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে চলে যাবে। দীর্ঘ সময়ের জন্য গোপন চুক্তি হওয়ার কারণে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে। বিদেশি হাতে চলে গেলে তারা যেকোনো সময় ফি ও মাশুল বাড়াতে পারবে। এতে আমদানি পণ্যের দাম বাড়বে। রপ্তানিমুখী পণ্যে মাশুল বাড়লে খরচ বেড়ে রপ্তানি ঝুঁকিতে পড়বে। বর্তমানে মার্কিন শুল্কের কারণে পোশাকের প্রতিযোগিতা ঝুঁকিতে আছে। তিন মাস ধরে রপ্তানি কমছে। অতিরিক্ত মাশুলের খড়্গ রপ্তানি আরও ঝুঁকিতে ফেলবে।

জানা যায়, সরকার দ্রুত বন্দরের ইজারা দিয়েছে। অথচ এই প্রক্রিয়া করতে কমপক্ষে ৬২ দিন লাগার কথা। কিন্তু ৪ নভেম্বর থেকে ১৭ নভেম্বরের মধ্যে মাত্র ১৩ দিনেই দুটি টার্মিনালের চুক্তি সই হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের দুটি টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব বিদেশিদের হাতে দিতে চুক্তি সই করার প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাজধানীর গুলিস্তান থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাব পর্যন্ত মশাল মিছিল করে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

এনসিটি ও সিসিটি রক্ষার দাবিতে চট্টগ্রামে মিছিল, ৪০ ঘণ্টার আলটিমেটাম
নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ও চিটাগং কনটেইনার টার্মিনাল (সিসিটি) চট্টগ্রাম বন্দরের কোনো অংশ বিদেশিদের কাছে ইজারা না দেওয়ার দাবিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বন্দর রক্ষা পরিষদ মশাল মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেছে। চট্টগ্রাম নগরীর বড়পোল এলাকায় এই প্রতিবাদ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মিছিলে শ্রমিকরা ‘আমার বন্দর আমার মা, বিদেশিদের দেব না’, ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’ এবং ‘ডিপি ওয়ার্ল্ড ডিপি ওয়ার্ল্ড, গো ব্যাক গো ব্যাক’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো বিদেশি অপারেটর, বিশেষত আবুধাবিভিত্তিক ডিপি ওয়ার্ল্ডের হাতে তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।

জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল নেতা আনোয়ারুল আজীম রিংকু বলেন, ‘এনসিটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়ার কোনো মানে হয় না। আমাদের নিজের টাকায় তৈরি প্রতিষ্ঠান আমরা বিদেশিদের দিতে দেব না।’ তিনি সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এনসিটি বিদেশি অপারেটরদের হাতে না দেওয়ার অনুরোধ জানান।

চট্টগ্রাম বন্দর জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘এনসিটি যদি বিদেশিদের দেওয়া হয়, কোটি কোটি টাকার মুনাফা দেশের বাইরে চলে যাবে। বে টার্মিনালে বিদেশি অপারেটর এলে আপত্তি নেই, কিন্তু এনসিটিতে বিদেশি দিলে লাভের পুরোটা বিদেশে যাবে। তাই এনসিটি কোনোভাবেই বিদেশি অপারেটরদের দেওয়া যাবে না।’

গণসংহতি আন্দোলন চট্টগ্রাম জেলার সমন্বয়কারী হাসান মারুফ রুমী বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর দেশের মানুষের করের টাকায় নির্মিত হয়েছে। বন্দর উন্নয়নের নামে বিদেশি কম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। বন্দর আগের চেয়ে ২১ শতাংশ বেশি আয় করছে। দক্ষতা বাড়াতে চাইলে বিদেশি প্রশিক্ষক আনা যেতে পারে, কিন্তু দেশের বন্দর বিদেশিদের হাতে দেওয়ার অধিকার সরকারের নেই। সংস্কারের নামে বন্দর বিদেশিদের হাতে দিলে চট্টগ্রামসহ সারা দেশে আগুন জ্বলবে। এনসিটি, সিসিটি আমরা বিদেশিদের হাতে দেব না, যতক্ষণ আমাদের শরীরে এক বিন্দু রক্ত আছে।’

শ্রমিক নেতারা সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ৪০ ঘণ্টার মধ্যে যদি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা হয়, তবে ২০ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এ সময় বক্তব্য দেন মহানগর শ্রমিক দলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. আজিম, মহানগর বিএনপির নির্বাহী সদস্য ও বিভাগীয় শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজি আইয়ুব, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু বকর ছিদ্দিকি, বন্দর শ্রমিক দল নেতা শেখ ছানুয়ার মিয়া, আকতার হোসেন, মোস্তফা চৌধুরী, মো. নাছির উদ্দিন ও মোশারফ হোসেন প্রমুখ। 

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন