মশা ঠেকাতে উপকারী ৭টি গাছ
![]() |
| কিছু উদ্ভিদ রয়েছে, যেগুলো প্রাকৃতিকভাবে মশা দূর করতে সাহায্য করবে | প্রতীকী ছবি: এআই দিয়ে তৈরি |
ডেঙ্গু ভাইরাসবাহিত রোগ। এটি ছড়ায় সংক্রমিত এডিস মশার মাধ্যমে। প্রতিবছর পৃথিবীতে ১০০–৪০০ মিলিয়ন মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়। এখন বিশ্বের প্রায় অর্ধেক মানুষ ঝুঁকির মধ্যে আছে। বাড়ির আশপাশে জমে থাকা পানি এডিস মশাকে টানে। তাই পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন থাকা খুব জরুরি। পাশাপাশি এমন কিছু গাছ আছে, যেগুলো স্বাভাবিকভাবেই মশা দূরে রাখে।
হঠাৎ জ্বর, তীব্র মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, বমি ভাব, র্যাশ, দুর্বলতা—এগুলো ডেঙ্গুর উপসর্গ। এই উপসর্গ ২ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত থাকতে পারে।
মশা থেকে দূরে থাকার বা মশা দমনের নানা উপায় আছে। তবে এমন কিছু গাছও আছে, যেগুলো স্বাভাবিকভাবেই আপনার বাসার মশা কমাতে সাহায্য করবে।
পুদিনা
পুদিনার মেন্থলযুক্ত গন্ধ মশা অপছন্দ করে। পাতার রস চেপে ত্বকে লাগানো যেতে পারে। তবে অ্যালার্জি আছে কি না, তা আগে পরীক্ষা করে নিতে হবে। পুদিনার গন্ধ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, তাই টবে লাগানো ভালো। এটি ঘর সতেজ রাখে এবং চা–শরবতসহ বিভিন্ন খাবার রান্নায়ও ব্যবহার করা হয়।
তুলসী
তুলসীর ইউজিনল ও এস্ট্রাগোল নামের উপাদান দুটো মশা দূরে রাখে। জানালা বা দরজার পাশে রোদ পড়ে এমন জায়গায় তুলসী রাখলে ঘরে মশা কম আসে। এ ছাড়া তুলসী রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং হজম ভালো রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত পানি দিতে হয় এবং গাছ বড় হলে ছাঁটাই করতে হয়।
গাঁদা ফুল
গাঁদা ফুলে থাকা পাইরেথ্রাম মশা ও মাছিকে দূরে রাখে। এই ফুল বাগানের সীমানায়, জানালার পাশে বা দরজার কাছে লাগাতে পারেন। ফুল কেটে ঘরে রাখলেও এর গন্ধে মশা কমে। গাঁদা রঙিন ও সুন্দর হওয়ায় বাগানের সৌন্দর্যও বাড়ায়। সারা বছরই এটি চাষ করা যায়, তবে শীতকালে ফলন ভালো হয়। শীতকালীন ফুল হিসেবে এ সময় গাঁদার চারা বারান্দার টবে বা বাগানে লাগাতে পারেন।
সিট্রোনেলা ঘাস
সিট্রোনেলার তীব্র গন্ধে মশা কাছে আসে না। এটি ঘরে কিংবা বাগানে লাগানো যায়। সিট্রোনেলা থেকে তৈরি মোমবাতি, স্প্রে ও তেলও ব্যবহার করা হয়। রোদ পড়ে এমন জায়গায় এই ঘাস রোপণ করা উচিত।
ল্যাভেন্ডার
ল্যাভেন্ডারে থাকা লিনালুল মশা অপছন্দ করে। মানুষের কাছে গন্ধটা মনভোলানো হলেও মশা দূরে থাকে। জানালার পাশে টবে বা বাগানে লাগানো যায়। শুকনো পাতা ঘরে রাখলেও অনেকটা সময় সুগন্ধ ছড়ায়। ল্যাভেন্ডার মানসিক চাপ কমাতেও সাহায্য করে এবং ঘুম ভালো হয়।
লেমন বাম
লেমন বাম বা মেলিসা গাছের সাইট্রোনেলাল ও জেরানিওল উপাদানের কারণে মশা দূরে থাকে। এটি বাসায় বা বাগানে লাগানো যায়। পাতায় চাপ দিলে যে গন্ধ বের হয়, তাও মশা দূরে রাখতে কার্যকর।
রোজমেরি
রোজমেরি গাছের তীব্র গন্ধে থাকা ক্যামফর ও রোজমারিনিক অ্যাসিড মশা দূরে রাখে। এটি ঘরে বা বাগানে লাগানো যায়। এর ডাল জ্বালিয়ে ধোঁয়া করেও মশা তাড়ানো যায়। রোজমেরি রান্নায় মসলা হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।
গাছগুলোর যত্নে মানতে হবে যেসব বিষয়
টবে পানি জমতে দেবেন না: টব বা ট্রেতে পানি জমে থাকলে মশা ডিম পাড়ে। তাই পানি জমতে দেওয়া যাবে না।
সঠিক ড্রেনেজ: পানি বের হওয়ার ছিদ্রযুক্ত টব ব্যবহার করুন।
নিয়মিত ছাঁটাই: গাছ বড় হলে বাতাস চলাচল কমে এবং পোকা বাড়ে। তাই নিয়মিত ছাঁটাই জরুরি।
অতিরিক্ত পানি নয়: বেশি পানি দিলে মাটি ভিজে থাকে, যা মশার জন্য উপযোগী পরিবেশ তৈরি করে।
ডেঙ্গুর ঝুঁকি কমাতে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন থাকা জরুরি। পুদিনা থেকে রোজমেরি—প্রতিটি গাছই স্বাভাবিকভাবে মশা প্রতিরোধে কাজ করে। এগুলো সহজে যত্ন নেওয়া যায় এবং ঘরের পরিবেশও সতেজ রাখে। মনে রাখতে হবে, গাছ লাগানোর পাশাপাশি পানি জমে থাকা দূর করা, নিয়মিত ছাঁটাই করা এবং সঠিক ড্রেনেজ রাখা সমান জরুরি।
সূত্র: হেলথশট

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন