গাজায় গণহত্যা বন্ধের আহ্বান, মধ্যপ্রাচ্যের নীরবতা ভাঙার ডাক
![]() |
গাজা অভিমুখী ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’য় ইসরায়েলি বাহিনীর আক্রমণের প্রতিবাদে সমাবেশ করে ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি। শুক্রবার বিকেলে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
ইসরায়েলের গাজা অভিমুখী ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ আটক করার প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে শুক্রবার বিকেলে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজন করে ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও জায়নবাদী ইসরায়েলের পদলেহনকারী হিসেবে কাজ করছে। তারা ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে না। তাই গাজায় গণহত্যা বন্ধে তাদের নীরবতা ভাঙতে হবে এবং প্রতিবাদ করতে হবে। একই সঙ্গে, বাংলাদেশে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও ইসরায়েলের জায়নবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলবে।
লেখক কল্লোল মোস্তফা বলেন, গ্লোবাল ফ্লোটিলা শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে। এ জাহাজের বহর যতদিন পর্যন্ত ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ হবে না, বৃদ্ধি পেতে থাকবে। মুসলিম দেশগুলো এখনও কার্যত নিশ্চুপ, তাদের নীরবতা ভাঙা জরুরি।
গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু বলেন, 'বিশ্বের নানা দেশে মানুষ গাজার গণহত্যার প্রতিবাদ জানাচ্ছে। আমরা সেই প্রতিবাদে অংশ নিতে এখানে একত্র হয়েছি। বাংলাদেশের মানুষকেও এই প্রতিবাদে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। এটি মার্কিন সাম্রাজ্যবাদবিরোধী লড়াই।'
গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু বলেন, 'মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও জায়নবাদী ইসরায়েলের পদলেহনকারী হিসেবে কাজ করছে। তারা গণহত্যার বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ করছে না। আমাদের প্রতিবাদ চলবে এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকেও আমি আহ্বান জানাই—এখনও সময় শেষ হয়নি, প্রতিবাদ করুন।'
সভায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহবুব হোসেন বলেন, 'আজ সারা বিশ্বে ইহুদিরাও রাস্তায় নেমেছে গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে। এটা মুসলমান ও ইহুদিদের যুদ্ধ নয়। মানবতা এখনও বেঁচে আছে এবং ইহুদিরাও গণহত্যার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে।'
লেখক ও গবেষক চৌধুরী মুফাদ আহমেদ বলেন, 'মানবতার সবকিছু শেষ হয়নি। ধর্ম, বর্ণ বা জাতি নির্বিশেষে মানুষ মানবতার পক্ষে দাঁড়াচ্ছে। ইসরায়েল আজ বন্ধুহীন এবং যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের মুখোশও খুলে গেছে।'
বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সদস্য অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার বলেন, সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই আরও তীব্র করতে হবে। তিনি বাংলাদেশকে লক্ষ্য করে সাম্রাজ্যবাদী ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফি রতন বলেন, 'গাজায় গণহত্যা বন্ধ করা জরুরি। কিন্তু যদি এটা শুধুমাত্র ডোনাল্ড ট্রাম্পের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য হয়, তা ফিলিস্তিনে শান্তি আনতে পারবে না। আমরা সবসময় মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের পাশে থাকব।'
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ফিলিস্তিন সংহতি কমিটির সদস্যসচিব হারুনুর রশিদ, সদস্য জয়দীপ ভট্টাচার্য, বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় পাঠচক্র ফোরামের সদস্য বেলাল চৌধুরী, বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জুলফিকার আলী, গণমুক্তি ইউনিয়নের সভাপতি নাসির উদ্দিন।
সমাবেশের শুরু ও শেষ দিকে সংগীত পরিবেশন করেন চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সদস্য সুস্মিতা রায় এবং বিবর্তন সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন