[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

জুলাই সনদে স্বাক্ষর নিয়ে শেষ মুহূর্তে এসে অনিশ্চয়তা, সন্ধ্যায় জরুরি বৈঠক

প্রকাশঃ
অ+ অ-
। ছবি: জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আজ বুধবার বিকেলে | ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের সৌজন্যে

জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভিন্নতার কারণে এই অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে আজ বুধবার সন্ধ্যা ছয়টায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ‘অতি জরুরি’ বৈঠক ডেকেছে। এর আগে কমিশনের সদস্যরা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বৈঠক করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি কমিশনের প্রধান।
 
জুলাই জাতীয় সনদ
 
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ, সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এবং প্রধান উপদেষ্টার মুখ‍্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়াও বৈঠকে ছিলেন।

৬টি সংস্কার কমিশনের ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে তৈরি হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদ। আগামী শুক্রবার সনদে সই হওয়ার কথা। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সনদের চূড়ান্ত অনুলিপি দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে এখনও কোনো ঐকমত্য হয়নি। কমিশন এ বিষয়ে আলাদা সুপারিশ দেওয়ার কথা বললেও তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

সনদ বাস্তবায়নে গণভোট করার বিষয়ে দলগুলো একমত হলেও ভোটের দিন ও পদ্ধতি নিয়ে মতভিন্নতা রয়েছে। কিছু দল সনদে সই করার আগে বাস্তবায়নের স্পষ্ট নিশ্চয়তা চাচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বৈঠকে দলটির পক্ষ থেকে কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়। ‘সংবিধান আদেশ’ জারির মাধ্যমে সংস্কারপ্রক্রিয়া এগিয়ে না গেলে এনসিপি সনদে সই করবে না বলে জানানো হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এনসিপি বলছে, তারা মনে করে, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের সময় তারা আগেও ছাড় দিয়েছে। এবার আর ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। তারা সংস্কার, বিশেষ করে সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করার পক্ষে।

চূড়ান্ত করা জুলাই সনদে বাস্তবায়নের পদ্ধতি উল্লেখ না থাকায় এই সনদে জামায়াতে ইসলামী সই করবে কি না, তা নিয়েও সংশয় আছে। তবে দলটি এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেয়নি। আজ রাতে এ বিষয়ে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

জামায়াতে ইসলামী নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এক নেতা আজ সকালে  বলেন, 'আমরা আজ সকালে সনদের চূড়ান্ত কপি পেয়েছি। কোনো গরমিল থাকলে জানাব। যতটুকু রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছেছে, সেগুলো যদি সনদে থাকে, অবশ্যই আমরা সই করব। তবে শুনছি, সনদ নিয়ে নানামুখী অপতৎপরতা হচ্ছে।' 

বামপন্থী একাধিক দলও সনদে সই না করার ইঙ্গিত দিয়েছে। অন্যদিকে বিএনপি সনদের অঙ্গীকার অংশে একটি ধারা যুক্ত করার প্রস্তাব করেছিল, যা কমিশন করেনি।

৬টি সংস্কার কমিশনের ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে তৈরি হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদ। খসড়া চূড়ান্ত হলেও বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে এখনো ঐকমত্য হয়নি। তাই সনদটি আটকে আছে।

গত ৩১ জুলাই সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষ হয়। কিছু দলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পরে ঐকমত্য কমিশন সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে দল ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চালায়। ৯ অক্টোবর এই আলোচনা শেষ হয়। আলোচনায় গণভোটের মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়নে ঐকমত্য হয়। তবে গণভোটের ভিত্তি, সময় ও পদ্ধতি নিয়ে দলগুলো, বিশেষ করে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির মধ্যে মতপার্থক্য আছে।

৯ অক্টোবর আলোচনায় কমিশন জানিয়েছিল, বিশেষজ্ঞ ও দলগুলোর মতামত সমন্বয় করে সনদ বাস্তবায়নের উপায় সরকারকে সুপারিশ করবে। এরপর বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করে মতপার্থক্য কমানোর চেষ্টা হয়। তবে গণভোটের ভিত্তি, সময় ও প্রশ্ন নিয়ে এখনো মতভিন্নতা কাটেনি।

ঐকমত্য কমিশন সূত্র জানায়, আজ সন্ধ্যার বৈঠকে দলগুলো সনদে সই করবে কি না এবং প্রয়োজনে সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে আবার আলোচনা হবে। এ আলোচনা সরাসরি বিটিভি নিউজে সম্প্রচার হবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, আজ সন্ধ্যায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জরুরি বৈঠক হবে। এর আগে কমিশন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করবে।

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন