লিটনের ফিফটিতে জয়ে শুরু বাংলাদেশের
৫৯ রানের ইনিংস উপহার দেওয়ার পথে বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস। আজ আবুধাবিতে হংকংয়ের বিপক্ষে | ছবি : এএফপি |
আবুধাবির গ্যালারিতে শ কয়েক দর্শক। তাঁদের প্রায় সবাই বাংলাদেশি। দল উইকেট পেলেই উচ্ছ্বাসে ভাসছিলেন তাঁরা। প্রতিপক্ষ হংকংয়ের ব্যাটসম্যানদের বাউন্ডারিতে মলিন হচ্ছিল মুখ। হংকংয়ের ইনিংস শেষ হওয়ার পর একটু কি হারের শঙ্কাও ভর করেছিল মনে?
না করে উপায় কী! আগের ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৯৪ রান করা হংকং যে আজ আবুধাবির শেখ জায়েদ আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে করে ফেলেছিল ১৪৩ রান। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বাংলাদেশের ৭ উইকেটের জয়ে হাসিমুখেই বাড়ি ফিরেছেন বাংলাদেশের সমর্থকেরা। তবে একটা অতৃপ্তি হয়তো আছে—হংকংয়ের বিপক্ষে আফগানিস্তানের মতো বড় জয় যে পাওয়া গেল না!
বড় জয় আসলে দরকারই ছিল বাংলাদেশের। ‘গ্রুপ অব ডেথ’ হিসেবে বিবেচনা করা ‘বি’ গ্রুপ থেকে কাগজে–কলমে সুপার ফোরে যাওয়ার দৌড়ে আছে আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ। তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষ হংকংয়ের বিপক্ষে তাই রানরেটটা বাড়িয়ে নিতে চাইবে তিন দলই। শ্রীলঙ্কা এখনো তাদের বিপক্ষে খেলেনি।
আফগানিস্তান কাজটা করতে পারলেও বাংলাদেশ সেভাবে পারেনি। ৯৪ রানের জয়ে আফগানিস্তানের নেট রানরেট ৪.৭০০, বাংলাদেশের ১.০০১।
বোলিংয়েই হতাশার গল্পটা বেশি। টস জিতে ফিল্ডিং বেছে নেওয়ার পর মেহেদী হাসানের করা প্রথম ওভারে এলবিডব্লুর আবেদনে আম্পায়ার সাড়া না দিলে রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। কিন্তু আম্পায়ার্স কলে বেঁচে যান জিশান আলী।
উইকেটের অপেক্ষা খুব বেশি লম্বা হয়নি তাসকিনের পরের ওভারেই অংশুমান রাঠ ক্যাচ তুলে দেওয়ায়। সেটি যদিও আম্পায়ার আউট দেননি। তবে রিপ্লেতে দেখা যায়, অংশুমানের ব্যাট ছুঁয়েই বল গেছে লিটনের গ্লাভসে।
এরপরই বাড়তে শুরু করে বাংলাদেশের হতাশা। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৩৪ রান করা হংকংয়ের হাল ধরেন জিশান ও নিজাকাত খান। রান খুব একটা না এলেও সহজে উইকেট হারাননি তাঁরা। ১১তম ওভারে তানজিম ৪১ বলে তাঁদের ৪১ রানের জুটি ভেঙে স্বস্তি এনে দেন। জিশান–নিজাকাতের পর অধিনায়ক ইয়াসিম মুর্তজার কার্যকর এক ইনিংসে হংকং ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৪৩ রান তুলতে পারে।
বাংলাদেশের সামনে জয়ের চ্যালেঞ্জ তো ছিলই, চাওয়া ছিল কত দ্রুত ম্যাচটা শেষ করা যায়, তা–ও। সেই তাড়া দেখা যায় ওপেনার পারভেজ হোসেনের ব্যাটে। ২ চার ও ১ ছক্কায় ১৪ বলে ১৯ রানেই যদিও শেষ হয় সেই ইনিংস। আরেক ওপেনার তানজিদের ব্যাটও হাসেনি। ১৮ বলে ১৪ রান করে থামেন তিনি।
ব্যাটসম্যানদের আউট হওয়া মানেই রানরেট আরও কমে যাওয়া। বাংলাদেশ তাদের তৃতীয় উইকেটটি হারায় জয় থেকে মাত্র ২ রান দূরে থাকতে। ৬ চার ও ১ ছক্কায় ৩৯ বলে ৫৯ রানের ইনিংসে দলকে জয়ের খুব কাছে পৌঁছে দিয়ে অধিনায়ক লিটন বোল্ড হয়ে যান। ৬৯ বলে ৯৫ রানের জুটিতে তাঁর সঙ্গী হৃদয় অবশ্য ৩৬ বলে অপরাজিত ৩৫ রান করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।
কিন্তু তাঁর ফর্ম নিয়ে সম্প্রতি ওঠা প্রশ্নচিহ্নটা আজও পুরোপুরি মোছেনি। ৩৬ বলের ইনিংসে যে শুধু একটিই বাউন্ডারি মারতে পেরেছেন হৃদয়। রান না হয় করেছেন, কিন্তু টি–টোয়েন্টিসুলভ ব্যাটিংটা কোথায়! একটা জয় আজ পাওয়া গেছে ঠিকই। কিন্তু অতৃপ্তি তো থেকেই গেছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
হংকং: ২০ ওভারে ১৪৩/৭ (নিজাকাত ৪২, জিশান ৩০, ইয়াসিম ২৮; তানজিম ২/২১, রিশাদ ২/৩১, তাসকিন ২/৩৮)।
বাংলাদেশ: ১৭.৪ ওভারে ১৪৪/৩ (লিটন ৫৯, হৃদয় ৩৫*, পারভেজ ১৯, তানজিদ ১৪; আতিক ২/১৪)।
ফল: বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: লিটন দাস।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন