শিক্ষার্থী মারধরের প্রতিবাদে তালাবদ্ধ চবি ফটক
প্রতিনিধি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
![]() |
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে শিক্ষার্থীদের দেওয়া তালা। আজ দুপুরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলস্টেশন এলাকায় একটি দোকান নির্মাণকে কেন্দ্র করে দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার বিরুদ্ধে। মারধরের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে ফটকে তালা দেওয়া হয়। এর আগে বেলা ১১টার দিকে মারধরের ঘটনাটি ঘটে।
মারধরের শিকার ওই দুই শিক্ষার্থী হলেন জুবায়ের আহমেদ ও মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম। তাঁরা দুজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশবিদ্যা ইনস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। আহত ব্যক্তিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জুবায়ের ও আতিকুল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলস্টেশন–সংলগ্ন স্থানে একটি দোকান নির্মাণের কাজ করছিলেন। এ সময় স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা এসে তাঁদের দোকান নির্মাণে বাধা দেন। ওই বাসিন্দারা দাবি করেন, রেলওয়ের জায়গাটি তাঁরা ইজারা নিয়েছেন, দোকান নির্মাণ করলে তাঁদের টাকা দিতে হবে। তবে ওই দুই শিক্ষার্থী অন্য এক ব্যক্তির কাছ থেকে জায়গাটি দোকানের জন্য ভাড়া নিয়েছেন জানান। বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের তর্কাতর্কি-হাতাহাতি হয়। এর একপর্যায়ে মারধরে জুবায়ের ও আতিকুল আহত হন।
জানতে চাইলে শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম বলেন, তাঁরা দোকান তৈরির কাজ করছিলেন। তখন হঠাৎ এক ব্যক্তি এসে জায়গাটি নিজেদের দাবি করে তাঁদের কাছে ৩০ হাজার টাকা চান। টাকা না দেওয়ায় তাঁকে ও তাঁর বন্ধু জুবায়েরকে হামলা চালিয়ে আহত করা হয়েছে। জুবায়েরের অবস্থা গুরুতর।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক সাঈদা আখতার বলেন, ‘আহত একজনের নাক দিয়ে অতিরিক্ত রক্তপাত হচ্ছিল, তাই তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আরেকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিবাদে জড়ানো ব্যক্তিদের মধ্যে স্থানীয় বাসিন্দা সাহাজউদ্দিন বাবু ও নজরুল ইসলাম ছিলেন। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চেয়ে নজরুল ইসলামের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি সাড়া দেননি। পরে সাহাজউদ্দিন বাবু বলেন, রেলওয়ের এই জায়গা নিয়ে আগে থেকেই ঝামেলা হচ্ছে। আজ দোকান বসানো হচ্ছে, এমন খবরে তিনি কথা বলতে গিয়েছিলেন। কারণ, জায়গাটি তাঁদের ইজারা নেওয়া। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নথিপত্র রয়েছে। তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও হাতাহাতি বা হামলার ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফের মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ বেলা পৌনে একটার দিকে বলেন, ‘জায়গাটি রেলওয়ের। এই জায়গা নিয়ে অনেক আগে থেকেই সমস্যা চলছে। বিষয়টি সমাধান করে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে সম্প্রীতি কমিটিও গঠন করা হয়েছিল। আমরা তাঁদের সঙ্গে বসব। আহত শিক্ষার্থীরা যদি মামলা করতে চান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাঁদের সহায়তা করবে।’ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে ফটক খোলার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন